মণিপুরের চেয়ে ইজরায়েল নিয়ে চিন্তিত মোদি : রাহুল।।
অনলাইন প্রতিনিধি :-গত মে মাস থেকে মণিপুর জ্বলছে, আর প্রধানমন্ত্রী চিন্তিত মণিপুর নিয়ে নয়, ইজরায়েল নিয়ে। সোমবার মিজোরামের রাজধানী আইজলে দুদিনের সফরে গিয়ে এভাবেই প্রধানমন্ত্রীকে তীব্রভাবে বিধলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
মণিপুরে গত মে মাস থেকে জাতিগত সংঘর্ষ চলছে।রাহুল গান্ধী এদিন বলেন, মণিপুর আর এখন একটা রাজ্য নেই।দুটো রাজ্যে পরিণত হয়েছে। জাতির ভিত্তিতে মণিপুর এখন দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে।এদিন আইজলে দীর্ঘ পদযাত্রা করেন রাহুল গান্ধী।পরে এক র্যালিতে ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল গান্ধী আরও বলেন, কংগ্রেস উত্তরপূর্বের এই রাজ্যে শান্তির জন্য প্রথম থেকেই সচেষ্ট।
একদা মিজোরাম হিংসায় জর্জরিত ছিল।উগ্রপন্থার শিকার ছিলেন সে রাজ্যের নিরীহ মানুষজন।১৯৮৬ সালে কংগ্রেস সরকারের সময়েই সে রাজ্যে শান্তি চুক্তি হয় । রাহুল এদিন অভিযোগ করেন, আমি আশ্চর্য হয়ে যাই এই দেখে যে, প্রধানমন্ত্রী এবং তার সরকারের মণিপুর নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।মণিপুর নিয়ে কেউই উদ্বিগ্ন নন। তারা উদ্বিগ্ন ইজরায়েল নিয়ে।ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে। মণিপুর যে গত ছয় মাস ধরে জ্বলছে সেদিকে কোনও খেয়াল নেই কারোর।মণিপুরে মানুষ মরছে, মহিলাদের শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে, শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে।
অথচ এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কোনও রা শব্দ নেই।এর আগে নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ রাহুল গান্ধী সোমবার দুপুরে মিজোরামে এসে পৌঁছান। তিনি দুদিন মিজোরামে থাকবেন। মিজোরামে রাহুল গান্ধীর সফর ঘিরে কংগ্রেস কর্মী ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে উন্মাদনা দেখা গেল যা গত কুড়ি পঁচিশ বছরের মধ্যে মিজোরামে কোনও রাজনৈতিক নেতার মিজোরাম সফরে দেখা যায়নি।
রাহুল গান্ধীকে সোমবার জননেতার সম্মান দেওয়া হয়েছে বলে মিজোরামের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা। সোমবার মিজোরামের চানমারি থেকে ট্রেজারি স্কোয়ার পর্যন্ত ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুল গান্ধীকে ঘিরে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তা বাহিনীসহ স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের পর্যন্ত ভিড়ের ঠেলায় হিমসিম খেতে হয়েছে। ভারত জোড়ো যাত্রার সময় একটি মিজো মেয়েকে রাহুলকে জড়িয়ে ধরে আবেগে কাঁদতেও দেখা গেছে।এদিকে মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে রাহুল গান্ধী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মিজোরামে কারোর সঙ্গে জোটে যাবে না কংগ্রেস। কংগ্রেস একাই লড়াই করবে। এদিকে সোমবারই কংগ্রেসের সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে লাল শ্বেতাকে আইজল পশ্চিম ২ নং আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এদিকে রাহুল ভারত জোড়ো যাত্রার পর এক সুবিশাল জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল গান্ধী মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতা এবং আক্রোশের অভিযোগ তোলেন। রাহুল গান্ধী এদিন আইজলের জনসভায় তীব্র আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। রাহুল গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর বিজেপি পরিষ্কার করে দিয়েছে ওদের কাছে মণিপুরের থেকে ইজরায়েল বেশি আপনজন।তাই গত চার মাস ধরে জ্বললেও মণিপুর নিয়ে একটা শব্দও বলেছেন না মোদি।জিএসটি এনে ভারতের ছোট ও মাঝারি ব্যবসাকে ধ্বংস করেছে বলে মোদি সরকারের কার্যত কাঠগড়ায় তোলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সোমবারের এই জনসভা থেকেই রাহুল গান্ধী মিজোরাম বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে মিজোরাম বিধানসভায় চল্লিশটি আসনের মধ্যে সোমবার ৩৯ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেন রাহুল গন্ধী।এ দিন চানমারি থেকে ট্রেজারি স্কোয়ার পর্যন্ত বিশাল ভারত জোড়ো যাত্রায় যেভাবে মিজোরামের হাজার হাজার মানুষ রাহুল গান্ধীকে স্বাগত জানান তাতে মিজোরামের কংগ্রেস নেতাদের মনোবল চাঙ্গা হয়েছে। সোমবার আইজলের রাস্তার দুপাশে অপেক্ষমাণ মানুষের দিকে হাত নাড়তে দেখা গেছে রাহুল গান্ধীকে।স্থানীয় বাংলোয় যারাই দেখা করতে যাচ্ছেন তাদের সাথেই রাহুল করমর্দন এবং মতবিনিময় করেছেন। সন্ধ্যায় রাহুল গান্ধী সেখানকার শিক্ষার্থীদের সাথে এক ঘন্টা ধরে মত বিনিময় করেন। রাহুলের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীরাও খুব খুশি। মঙ্গলবার সকালে মিজোরামের রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন রাহুল গান্ধী এবং এক সাংবাদিক বৈঠক করবেন। এরপর দুপুরে লুংলেই যাবেন সেখানে কংগ্রেসের একটি নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দেবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।