মথাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মোর্চার ডাকে শহরে জনজাতি ঢল
ভোটের মুখে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ ও তিপ্রা মথাকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সাড়া জাগানো মিছিল ও সমাবেশ করলো বিজেপি জনজাতি মোর্চা। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো জল্পনা শুরু হয়েছে। জনজাতি মোর্চার এই কর্মসূচি ঘিরে আজ রাজধানী আগরতলায় যেভাবে জনজাতি মানুষের ঢল নেমেছে তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গোটা শহর আজ দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে থাকে। তিপ্রা মথা পরিচালিত ত্রিপুরা স্বশাসিত জিলা পরিষদে চরম আর্থিক দুর্নীতি, স্বজন-পোষণ সহ একাধিক অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিজেপি জনজাতি মোর্চা রাজভবন অভিযান সংঘঠিত করে।
পরে একটি প্রতিনিধি দল রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে ডেপুটেশন প্রদান করে। প্রথমে রাজধানীর তুলসীবতী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে জমায়েত হয়। সেখান থেকে দুপুরে রাজভবনের উদ্দেশে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কামান চৌমুহনী, পোস্ট অফিস চৌমুহনী, আরএমএস, বিদুরকর্তা চৌমুহনী হয়ে সার্কিট হাউস পর্যন্ত যায়। ওইখানে পুলিশ মিছিল আটকে দেয়। মিছিলে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া, সাংসদ রেবতী ত্রিপুরা, মন্ত্রী শান্তনা চাকমা, বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, সহ-সভাপতি পাতাল কন্যা জমাতিয়া, বিজেপির জনজাতি বিধায়করা, সকল এমডিসি এবং জনজাতি মোর্চার সকল রাজ্য নেতা- নেত্রী সহ অন্যরা।
সার্কিট হাউসে অস্থায়ী মঞ্চে এডিসির বর্তমান শাসক দল তিপ্রা মথার বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক অনিয়ম ও স্বজন পোষণের অভিযোগ তুলে তীব্র সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা থেকে শুরু করে জনজাতি নেতৃত্বরা।তারা বলেন, জনজাতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা বলে, অলিক স্বপ্ন দেখিয়ে তিপ্ৰা মথা এডিসি দখল করেছে। কিন্তু গত দেড় বছরে পাহাড়ে বসবাসকারী জনজাতিরা বুঝে গেছে, এরা শুধু দুর্নীতি এবং স্বজন পোষণ করতেই এসেছে। গত দেড় বছরে এডিসি প্রশাসন কোনও কাজই করেনি। রাজ্য সরকার থেকে যে অর্থ প্রদান করা হয়েছে, আজ পর্যন্ত সেই অর্থের কোনও হিসাবই প্রদান করা হয়নি।
তারা বলেন, রাজ্যের জনজাতিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে ভারতীয় জনতা পার্টি। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি-আইপিএফটি সরকার। এটা আজ প্রমাণিত। তাইতো আজকের কর্মসূচিতে জনজাতিদের ঢল নেমেছে। কেননা, তারা অভিজ্ঞতার নিরিখে বুঝতে পারছে। কাদের কথার সাথে কাজের মিল রয়েছে। সব কাজ হয়ে গেছে বলে এই সরকার দাবি করে না। কিন্তু জনজাতিদের প্রকৃত উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে মোদির হাত ধরে। এটা আজ অস্বীকার করার উপাই নেই। জনজাতিদের সম্মান-মর্যাদা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
গত পাঁচ বছরে বর্তমান সরকার জনজাতিদের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছে। আরও বহু কাজ বাকি আছে। যে কাজগুলি এগিয়ে নিতে হবে। যারা রাজ্যকে ভাগ করার অলিক স্বপ্ন দেখছে, তারা কোনও দিনই সফল হবে না। বিভাজন নয়, সবকা সাথ সবকা বিকাশই প্রদান করা হচ্ছে মূল লক্ষ্য। তবে আজ সবকিছু ছাপিয়ে গেছে, জনজাতি মোর্চার আহ্বানে রাজধানীতে জনজাতিদের জনঢল। গুঞ্জন উঠেছে, তবে কি পাহাড়ে মথার ভিত হাল্কা হয়ে যাচ্ছে?