মথার ভবিতব্য

 মথার ভবিতব্য
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

তিপ্রা মথা নেতৃত্বের সাথে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি এবং চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে শুরু থেকেই নানা মহলে গুঞ্জন চলছে। এই চুক্তির ভিত্তিতে মথার দুই বিধায়ক বিজেপি- আইপিএফটি মন্ত্রিসভায় নতুন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ফলে বর্তমান সরকার এখন তিন দলের জোট সরকার বললে খুব একটা ভুল হবে বলে মনে হয় না। শুধু তাই নয়, এই ত্রিপাক্ষিক চুক্তির ফলে লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের পূর্ব ত্রিপুরা জনজাতি সংরক্ষিত আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন তিপ্রা মথা সুপ্রিমোর বোন (দিদি)।

May be an image of 3 people and dais


এ নিয়েও বিভিন্ন মহলে জল্পনা রয়েছে। মথা এবং বিজেপি দুই দলের মধ্যেই এ নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, দল যখন সম্মিলিতভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নেয় তখন সেই সিদ্ধান্ত একটা অংশের অপছন্দ হলেও সেই সিদ্ধান্ত মানতে হয়। এটাই যে কোনও শৃঙ্খলাবদ্ধ ও ক্যাডারভিত্তিক রাজনৈতিক দলের বৈশিষ্ট্য। আরও স্পষ্ট করে বললে দলীয় শৃঙ্খলা বা দলীয় অনুশাসন। সকলকেই মেনে চলতে হয়। এক্ষেত্রে তিপ্রা মথা কতটা শৃঙ্খলাবদ্ধ রাজনৈতিক দল তা অবশ্য জানা নেই। তবে ভারতীয় জনতা পার্টি একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ ক্যাডারভিত্তিক রাজনৈতিক দল। এ নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।তবুও পূর্ব আসনের প্রার্থী নিয়ে দুই দলের অন্দরেই কোথাও কোথাও অসন্তোষের কথা শোনা গেছে। দুই দলের পক্ষ থেকেই সেই অসন্তোষ খুশিতে রূপান্তরিত করার প্রয়াস জারি রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন করে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে তিপ্রা মথার দুই নয়া মন্ত্রীকে যে দপ্তর বণ্টন করা হয়েছে তা নিয়ে। উল্লেখ্য, শপথ নেওয়ার সপ্তাহখানেক কেটে যাওয়ার পর দুই মন্ত্রী, এর মধ্যে একজন প্রতিমন্ত্রী, তাদের মধ্যে দপ্তর বণ্টন করা হয় শুক্রবার। এদিন সন্ধ্যার পর দপ্তর বন্টনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। খবরে প্রকাশ, দপ্তর বণ্টনের পরই দুই মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমের কাছে ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এমনকী পদত্যাগের হুমকি পর্যন্ত দেন। এ নিয়ে ভোটের মুখে নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তিপ্রা মথার দুই নতুন মন্ত্রীকে কম গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর বণ্টন করা হয়েছে কেন? এর পিছনে কি কোনও পরিকল্পনা রয়েছে? যদি থাকে সেটা কী? এসব প্রশ্নের জবাব হয়তো এখনই পাওয়া যাবে না। তবে রাজনৈতিক মহল এর পিছনে বিজেপির বিশেষ পরিকল্পনা থাকতে পারে বলে মনে করছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তিপ্রা মথা এখন উভয়সংকটের মধ্যে পড়েছে। প্রচলিত ভাষায় যাকে বলে ফাটা বাঁশে আটকানো। না সামনে যেতে পারছে, না পিছিয়ে আসতে পারছে। বিশেষ করে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হওয়ার পরই, দল উভয় সংকটে পড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন বিজেপির কথায় তাদের উঠতে হবে, বিজেপির কথায় বসতে হবে। মোদ্দা কথা, বোতলবন্দি।

May be an image of 3 people and people smiling


এখন আর বেরিয়ে আসার কোনও সুযোগ নেই। সম্ভবত এটাই চেয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ফলে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে হোক, কিংবা পূর্ব আসনের প্রার্থী নিয়ে, অথবা দপ্তর বন্টন নিয়ে, যতই অসন্তোষ-বিদ্রোহ হোক না কেন, সেই অসন্তোষ ও বিদ্রোহ আপাতত প্রকাশ্যে নিয়ে আসার কোনও সুযোগ নেই। অসন্তোষ, দুঃখ কষ্ট সব নিজেদের মনের মধ্যেই চাপা দিয়ে রাখতে হবে। কেননা চুক্তির শর্তই তাই। ফলে অনিমেষবাবু, বৃষকেতুবাবুরা যতই হুমকি দিন না কেন, তাদের সেই হুমকি যে কলাপাতা রূপে বিবেচিত হলে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। খাঁচাবন্দি বাঘের গর্জনে কেউ ভা পায় কি? এটাই ভবিতব্য।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.