মন্ত্রীপুত্রের মোবাইল টাওয়ার বর্তমান লোকেশন দেখা হোক : কংগ্রেস

 মন্ত্রীপুত্রের মোবাইল টাওয়ার বর্তমান লোকেশন দেখা হোক : কংগ্রেস
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

কুমারঘাটে ঘটে যাওয়া নাবালিকা ধর্ষণকাণ্ডে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না মন্ত্রীপুত্রকে? কেনই বা যারা গ্রেপ্তার হলেন, তাদের ক্ষেত্রে কোনও পুলিশ রিমাণ্ড চাওয়া হয়নি? আরও প্রশ্ন, কেনই বা মন্ত্রীপুত্রের মোবাইল টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে না? শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একের পর এক এই প্রশ্নগুলিই তুলে ধরলেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। আরও বললেন, ঘটনার খবর জানতে স্থানীয় বিধায়কের সাথেও কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ব্যবস্থার নামে চুপ মেরে বসে আছেন।কংগ্রেসের একমাত্র বিধায়ক শ্রী বর্মণ এদিন আরও বলেন, চেয়ারে বসে যারা চেয়ারের মর্যাদা রাখতে জানে না তাদেরকে মানুষ এখন ধিক্কার ও নিন্দা জানাচ্ছেন। গোটা কুমারঘাট যে ঘটনাটি জানে, পুলিশ যে ঘটনাটি জানে, আশ্চর্যজনকভাবেই সেই ঘটনারই তদন্তে কোনও পুলিশি রিমাণ্ড চাওয়া হলো না। অর্থাৎ জেরার সময় না যেন মন্ত্রীপুত্রের নাম চলে আসে। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ এনে পুলিশকে তীব্র নিন্দা ও জানিয়েছেন কংগ্রেসের এই বিধায়ক। তিনি বলেন, কোথাও মন্ত্রীপুত্র, কোথাও বা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, কোথাও পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী, কোথাও আবার চেয়ারম্যানদের নাম জড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ পুলিশ নতজানু হয়ে সবক্ষেত্রেই ধামাচাপা দেবার চেষ্টায় ব্যস্ত। এদিন যে ঘরটিতে ধর্ষণকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিলো সেটিও মন্ত্রীপুত্রেরই ভাড়া নেওয়া ঘর বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে শাসক বিজেপি কুমারঘাটের এই নাবালিকা গণধর্ষণকাণ্ডে মন্ত্রীপুত্র জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করছে। কিন্তু কংগ্রেস বলছে পরিকল্পনা করে গোটা ঘটনাটিকে নিয়েই একপ্রকার নাটক মঞ্চস্থ করতে তাইছে তারা। মানুষকে বিভ্রান্ত করে দিয়ে বারবার মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা চালানো হচ্ছে গোটা ঘটনাটিকে। বাধা দেওয়া হচ্ছে পুলিশি তদন্তেও। বিধায়ক শ্ৰী বৰ্মণ এদিন বলেন, নতুন করে সময় এবং তারিখ বসিয়ে এই নাটকের চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। অথচ সেদিন সে সময় মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দেখা হচ্ছে না তার। এদিন তিনি বলেন, শীঘ্রই তা তদন্ত করে দেখা হোক।কংগ্রেস ভবনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বিধায়ক শ্রী বর্মণ বলেন, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ক্রমশই তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। গণধর্ষণের মতো এই ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ধর্ষণ বলেই চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিলো। কিন্তু চাপে পড়ায় পরবর্তী সময়ে পুলিশই আবার গণধর্ষণ বলে স্বীকার করে নেয়। এদিন জনগণের স্বার্থে পুলিশকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনেরও দাবি জানান তিনি।প্রসঙ্গক্রমে কদিন আগেই পুলিশের উপর মন্ত্রীপুত্রের বাহাদুরি দেখিয়ে ধাক্কা মারার বেশ কিছু ছবিও এদিন তুলে ধরা হয় সাংবাদিক সম্মেলনে। এক্ষেত্রেও কোনও ধরনের মামলা নথিভুক্ত হয়নি। যার জেরে মূল অভিযুক্ত বলে যার নাম উঠে আসছে প্রকাশ্যেই সে আবার ‘পুলিশ আমার ঘণ্টা করবে’ বলে চেঁচিয়ে বেড়াচ্ছে। এদিন রাজ্যের মানুষকে এ ব্যাপারে রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছে কংগ্রেস। আরও জানায়, কল্যাণপুর, কুমারঘাট, বামুটিয়াতেও এ ধরনের ঘটনা ঘটে যায়। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই সুশাসনের রেওয়াজ মিলেনি। বরং এসব ঘটনা চলাকালীন সময়ে শাসকদলীয় নেতা-মন্ত্রীরা টিসিএ নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন বলে জানান শ্রী বর্মণ।
আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন প্রাক্তন বিধায়ক আশিস কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার ভট্টাচার্যও ছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে তাদের হাত ধরেই এদিন ধলাই জেলা সভাধিপতি রুবি ঘোষ কংগ্রেসে যোগ দেন। এছাড়াও খোয়াই জেলার প্রাক্তন কর্মচারী নেতা প্রদ্যোত কুমার ভট্টাচার্যও বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। সকালে রাজনগরে বিজেপি এবং সিপিআই(এম) ছেড়ে ২৫ জন, করবুকেও বিজেপি ছেড়ে দুই প্রভাবশালী নেতা এবং সিপিআই(এম) ছেড়ে অন্য আরও এক নেতা কংগ্রেসে যোগ দেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.