মন্ত্রীর ব্যর্থতায় প্রাণী সম্পদে অপচয় ৭৭ লক্ষ, বাতিল প্রকল্প!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি:- প্রথম বিজেপি জোট সরকারের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রীর অদূরদর্শিতা ও সঠিক নজরদারির অভাবে রাজ্য সরকারের গচ্ছা গেছে ৭৭ লক্ষ টাকা। ক্যাগ রিপোর্ট থেকে এই তথ্য সামনে এসেছে। ওই রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের রাধাকিশোরনগর ফার্ম কমপে লক্সের নথি পরীক্ষা করে দেখা গেছে পেলেট মিল এবং মিনারেল মিক্সচার প্ল্যান্ট গড়ার জন্য ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্রকল্পের মঞ্জুরি দিয়েছিল নাবার্ড। এর জন্য মোট ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদিত হয়েছিল ২২ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা। এই ঋণের জন্য নাবার্ড বাৎসরিক ৪.৭৫ শতাংশ সুদের ২১ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকার ঋণ মঞ্জুর করে। বাকি ১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা রাজ্য সরকারের শেয়ার। সেই সাথে প্রকল্প শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ২০২০ সালের ৩১ মার্চ। ২০১৮ সালের মার্চ মাসেই প্রথম কিস্তি হিসেবে ৬ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা রাজ্যকে দিয়ে দেয় নাবার্ড। ২০১৯ সালের জুন মাসে রাজ্য সরকার ৫ কোটি টাকা পাঠিয়ে দেয় প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের ইঞ্জিনীয়ারিং সেলের হাতে। অবাক করার বিষয় হলো, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সে টাকা অব্যয়িতই থেকে যায়। ওই অর্থ ব্যয় না হওয়ার বিবরণে ক্যাগের রিপোর্ট বলছে, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর প্রকল্প বাস্তয়ানের কাজ হাতে নিতে আবেদন জানায় ত্রিপুরা শিল্পোন্নয়ন নিগম লিমিটেডকে। ওই আবেদনে সাড়া দিয়ে নিগম প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের কাছে অগ্রিম অর্থ দাবি করে। তখন সংশ্লিষ্ট দপ্তরঅগ্রিম ফান্ড দিতে অসম্মতি জানায়। কারণ অর্থ দপ্তরের গাইডলাইন অনুসারে কাজে অগ্রগতির সাথে সাথে বিল করা হবে ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারকে। পরবর্তীতে অর্থ দপ্তরের নির্দেশিকায় শিথিলতা আনার আবেদন জানিয়ে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের আধিকারিকরা তদ্দির করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ততদিনে প্রকল্পটিই ‘নন-স্টার্টার’ হয়ে যায়। নিয়ম অনুসারে রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাণ্ডের সহায়তায় মঞ্জুরিকৃত কোনও প্রকল্প অনুমোদনের দিন থেকে ১৮ মাসের মধ্যে শুরু না হলে, তা তামাদি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যায়। ক্যাগের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট বলছে, সঠিক পরিকল্পনা, সমন্বয় প্রভৃতির অভাবে আরআইডিপির সহায়তামূলক প্রকল্পটি ‘নন-স্টার্টার’ হয়ে গেছে এবং অর্থ মঞ্জুরি তামাদি হয়েছে। এরপর ২০২২ সালের মে মাসে প্রকল্পটিই বাতিল ঘোষণা করে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর। মাঝখানে কোনও কাজ না করেই রাজ্য সরকারকে ৭৭ লক্ষ টাকা সুদ মেটাতে হয়েছে নাবার্ডকে। অবাক করার বিষয় হলো ওই দপ্তরের আধিকারিকের অবহেলার কারণে রাজ্যের কোষাগার থেকে এত বিশাল পরিমাণ অর্থ বেরিয়ে গেলেও রাজ্য সরকার ওই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এক্ষেত্রে দপ্তরের তৎকালীন মন্ত্রী সান্তনা চাকমার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকারের জনগণের করের টাকা জনকল্যাণে ব্যয় না করে, অযথা খরচের অধিকার নেই। এক্ষেত্রে মন্ত্রীর অবহেলার কারণে রাজ্যের কোষাগার থেকে ৭৭ লক্ষ টাকা অযথা বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট। অথচ এই বিষয়ে পরবর্তী সময়েও সরকারের কোনও হেলদোল লক্ষ্য করা যায়নি। প্রশ্ন হচ্ছে, এইভাবে জনগণের অর্থ অপচয়, কোন্ সুশাসনের লক্ষণ?

Dainik Digital

Recent Posts

নিগো – অন্ধ প্রশাসন!!

নিগো বাণিজ্যের রমরমা চালানোর জন্যই কি ১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলো?রাজ্যের আকাশ…

21 hours ago

বিমানযাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু নিয়ে পুলিশের তদন্ত শুরু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এয়ারইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের কর্মীর চরম গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে রীতা বণিক (৫৯) বিমান যাত্রীর…

22 hours ago

হরিয়ানাঃ পাল্লা কার পক্ষে?

হরিয়ানা কি বিজেপির হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে?শাসক বিজেপির হাবভাব দেখে তেমনটাই অনুমান করছে রাজনৈতিক মহল।প্রধানমন্ত্রী…

2 days ago

রাজধানীতে চাঁদার জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-মুখ্যমন্ত্রীডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার আপনজন ক্লাবের চাঁদার নামে বড় অঙ্কের তোলাবাজির অভিযোগের রেশ…

3 days ago

ইন্ডিয়ান বুকে রাজ্যের মেয়ে ঝুমা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ইচ্ছে ছিলো অনেক আগে থেকেই। অবশেষে নিজের ইচ্ছেকেই বাস্তবে পরিনত করলো ঝুমা দেবনাথ।…

3 days ago

সুশাসনে আইনশৃঙ্খলা!

রাজ্যে কি সত্যিই আইনের শাসন রয়েছে?সাধারণ মানুষ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।সরকার বলছে রাজ্যে সুশাসন…

3 days ago