মন্ত্রী রতনের সহজ কথাতেই উজ্জীবিত হচ্ছে রাজ্যের কৃষকরা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে এবং কৃষিকাজে কৃষকরা আগের তুলনায় এখন দারুণভাবে উৎসাহিত হচ্ছেন।শুধু তাই নয়,যেসব কৃষক একসময় জমি থাকা সত্ত্বেও নানা কারণে কৃষিকাজ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে অন্য কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন, তারাও এখন পুনরায় কৃষিকাজে ফিরে গেছেন এবং যাচ্ছেন। অনেকেই বলছেন, কৃষকদের মধ্যে এই উৎসাহ তৈরি হওয়া এবং মত পরিবর্তনের পিছনে প্রধান কারণ হচ্ছে রাজ্যের বর্তমান কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথের আন্তরিক প্রয়াস। তিনি যেভাবে মাঠে ময়দানে গিয়ে একেবারে কৃষকদের সাথে মিশে গিয়ে, কৃষকদের মতো করে সহজ সরলভাবে কথা বলছেন, তাতেই কৃষকরা দারুণভাবে উৎসাহিত হচ্ছেন।মঞ্চে দাঁড়িয়ে গুরুগম্ভীর তাত্ত্বিক ভাষণ নয়,তিনি মঞ্চ থেকে নেমে কৃষকের মাঝে দাঁড়িয়ে তাদের মতো করে কথা বলছেন।আর তার এই সহজ সরল ভাষায় কথা শুনতে প্রতিদিনই নানা অনুষ্ঠানে ভিড় বাড়ছে।সোমবারও পানিসাগরে একাধিক অনুষ্ঠানে দেখা গেল একই ছবি।মন্ত্রীর কথা শুনতে উল্লেখযোগ্য ভিড়।তার মধ্যে নব্বই শতাংশই কৃষক এবং সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। মন্ত্রী মানেই বিশেষ কিছু,এই ধারণাকে ভেঙেচুরে ছাড়খার করে দিয়েছেন রতনবাবু।

কৃষকদের কল্যাণ ও কৃষকদের উৎসাহ প্রদানে একাধিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সোমবার উত্তর জেলার যুবরাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রে এলেন রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ। এ দিন সকালে প্রথমেই এসে উত্তর জেলার মধু উৎপাদনকারী ব্র্যান্ড মধুবনের মধু-র আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।এগ্রি সাব ডিভিশন অফিস প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই ব্র্যান্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজ্যের মন্ত্রী রতনলাল নাথের সাথে উপস্থিত ছিলেন উত্তর জেলার জেলা সভাধিপতি অপর্ণা নাথ। সাথে ছিলেন যুবরাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন অপর্ণা সিন্হা, ডিরেক্টর *অব এগ্রিকালচার ফণিভূষণ জমাতিয়া, ডিরেক্টর অব হর্টিকালচার দীপক দাস সহ কৃষি দপ্তরের বিভিন্ন আধিকারিকরা। মন্ত্রী শ্রীনাথ জানান, যুবরাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বেশকিছু যুবক দীর্ঘ বেশ কিছুদিন ধরে মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করে চলেছে। তারা প্রথম অবস্থায় স্থানীয় গ্রামে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে তা একত্রিত করে বাজারে বিক্রি করত। পরবর্তীতে কৃষি দপ্তর তাদেরকে এগ্রিকালচার টেকনোলজি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মাধ্যমে নানা সহযোগিতা করে আত্মনির্ভর করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করে। পরবর্তীতে তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে রাজ্য সরকার বিভিন্ন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে যুবরাজনগর এলাকার ৩২ জন উদ্যমী যুবক একত্রিতভাবে মধুবনের মধু নামক ব্র্যান্ডের নামকরণ করেন। উক্ত ব্র্যান্ডটি স্থানীয় অন্নপূর্ণা এসএইচজিএর মাধ্যমে বাজারজাত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। এলাকার যুবকদের এই উৎসাহ উদ্দীপনাকে উনি স্বাগত জানান।উনি আরও বলেন,খুব শীঘ্রই মর্গান্তর শহরের কোন জায়গায় নির্দিষ্ট স্টলের মাধ্যমে উক্ত মধু বিক্রি করার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেবে সরকার।পাশাপাশি উত্তর জেলার অন্যান্য স্থান যেমন ধর্মনগর, কদমতলা, চুরাইবাড়ি, পানিসাগর কাঞ্চনপুর এলাকা সহ গোটা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার মধুকে বাজারজাত করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলেও জানান। উনি উপস্থিত সকলের কাছেই অনুরোধ করে বলেন, কোন স্থানে জমি ফেলে না রেখে তা কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করা হোক। বলেন, কৃষির উন্নতিতে এলাকার যুবক যুবতীরাও যেন এগিয়ে আসে এবং নানান কৃষিজাত সামগ্রী উৎপাদনের মধ্য দিয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার পরামর্শ প্রদান করেন। সেখান থেকে মন্ত্রী রতনলাল নাথ চলে যান যুবরাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েত ময়দানে। সেখানে গিয়ে এলাকার হিমালিনী, উদয় এবং লিমা, এআরসি পদ্ধতিতে এই তিনটি গোত্রের আলু চাষ পদ্ধতি পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের রাজ্যেও এআরসি পদ্ধতিতে আলু চাষ জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করেছে। শুধু আগরতলা নয়, উত্তর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় এআরসি পদ্ধতিতে আলু চাষ কৃষকদের উৎসাহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে আলুর ফলন দ্বিগুণ হচ্ছে। যুবরাজনগরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এআরসি চাষের অগ্রগতি খতিয়ে দেখে তিনি আপ্লুত। আজ যখন আলু চাষ পরিদর্শন করছিলেন, তখন উপস্থিত কৃষকরা তাকে ঘিরে ধরে দাবি জানান, আগামীতে যেন তাদেরকে আরও বেশি করে এআরসি আলুবীজ সরবরাহ করা হয়। মন্ত্রী কথা দিয়েছেন, এই ব্যাপারে কৃষকদের চিন্তা করতে হবে না।
