মশা মানছে না শীত-গ্রীষ্ম অতিষ্ঠ নাগরিক জেরবার!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-শীত এখনও জাঁকিয়ে না পড়লেও রাতে শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে।কিন্তু মশার উপদ্রবে শীতের আমেজ ঘরে বসে অনুভব করার কারোর কোনও সাধ্য নেই।মশার উপদ্রব এখন এতটাই বাড়বাড়ন্ত যে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।আগরতলার শহরাঞ্চলেই নয়, পুর নিগম এলাকার সব জায়গায় মশার সক্রিয়তা চোখে পড়ার মতো। পুর নিগমে ৫২ টি ওয়ার্ড রয়েছে। এই ৫২ ওয়ার্ডেই মশা বাড়ি বাড়ি হানাদারি, উপদ্রব চরমে উঠেছে। রাজ্যের মফস্সল থেকে যারা বিভিন্ন কাজে আগরতলায় আসছে ও আত্মীয়ের বাড়িতে রাতে থাকছেন তারাও বিস্ময় প্রকাশ করছেন আগরতলায় মশার এত বাড়বাড়ন্ত দেখে।তাদের দাবি মফস্সলে মশা থাকলেও এখন যে ভাবে আগরতলায় প্রচণ্ড মশার বিচরণ চলছে, সেই ভাবে মফস্সলে নেই।মশার কামড়ে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, এনকেফেলাইটিস সহ আরও মারাত্মক জটিল রোগ হয়। কিন্তু তারপরও আগরতলার ভয়াবহ মশার উপদ্রব ও তাণ্ডব বন্ধে ও রোধে রাজ্য সরকার, প্রশাসন, পুরনিগম, স্বাস্থ্য দপ্তর কারোর কোনও হেলদোল নেই।সরকারের
এইসব সংস্থা ও দপ্তরের উদাসীনতায় আগরতলার পুর নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ অসন্তোষ কেবল বাড়ছে। আগরতলা পুরনিগম এলাকায় মশার বাড়বাড়ন্ত ও নাগরিক যন্ত্রণা নতুন কিছু নয়। আগেওছিল।তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের পরিচালনায় আগরতলা পুরনিগম যখন চলত তখন মশার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে বাম সরকার ও বাম পরিচালিত পুর নিগমের দিকে আঙুল তুলে মশার উপদ্রব বন্ধে চরম ব্যর্থ বলে দাবি করতো বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
বাম সরকার ও বাম পরিচালিত পুর নিগমের রাজত্বের অবসান ঘটলেও মশার বাড়বাড়ন্ত ও উপদ্রব থেকে কিন্তু আগরতলার পুর নাগরিকরা রেহায় পাননি, নিস্তার পাননি।বরং যতদিন যাচ্ছে মশার যন্ত্রণা, কষ্ট উদ্বেগ তত বাড়ছে।এমনটাই নিত্য দিনের অভিযোগ পুরনিগমবাসীর। ২০২১ সালের নভেম্বরে নির্বাচন আগরতলায় পুরনিগমে ক্ষমতায় আসার সময় বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আগরতলা পুর বাসীকে মশার যন্ত্রণা ও উপদ্রব থেকে পুরো রক্ষা করা হবে।মশার বাড়বাড়ন্ত বন্ধ করা হবে। দীর্ঘ বছর ধরে চলা মশার নির্মূল করা হবে ইত্যাদি প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো মশার যন্ত্রণা থেকে পুর নাগরিকদের রেহায় দেওয়া হবে বলে পুর নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুরনিগমে ক্ষমতায় -আসার পর তিন বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে।কিন্তু মশার যন্ত্রণা কোনভাবেই বন্ধ হয়নি। অসন্তুষ্ট পুর নাগরিকদের অভিযোগ দিন দিন যেন মশার উপদ্রব, তাণ্ডব কেবল বাড়ছেই।পুর নিগমের প্রতিশ্রুতি মতো কবে নাগরিকরা তার বাস্তবায়ন দেখতে পাবেন তা নিয়েও সন্দিহান প্রকাশ করছেন নাগরিকরা।সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা বাড়ির ঘরে জানান দিচ্ছে।ঘরের ভেতর, বারান্দায়,উঠান বাড়ির গেটে কোথাও বসা বা দাঁড়ানো যাচ্ছে না।মশা ঘিরে ধরছে।কানের সামনে, মুখের সামনে এসে বিরক্তদায়ক ভন ভন শব্দ করছে।কানে, মুখ মণ্ডলে কামড় বসিয়ে দিচ্ছে। শরীরের কোনও জায়গায় পরিধান বস্ত্র না থাকলে কামড় বসিয়ে দিচ্ছে। সন্ধ্যার পর মশা তাড়ানোর জন্য ঘরে ঘরে ধোঁয়া দিলেও মশা সরতে চাইছে না। বিকল্প ব্যবস্থায় সাময়িক মশা তাড়ানোর জন্য গৃহকর্তা, গৃহকর্ত্রী দোকান থেকে নানা উপকরণ কিনে আনছেন। তাতে ধনী-দরিদ্র প্রতি পরিবারের প্রতি মাসে প্রচুর টাকা পকেট থেকে খরচ হয়ে যাচ্ছে। তারপরও মশার যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না মানুষ। মশার কামড়ে নানা মারাত্মক ও জটিল রোগ হওয়া নাগরিকরা গভীর চিন্তায় পড়েছেন। শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে পরিবারের চিন্তা সবচেয়ে বেশি। জিবি, • আইজিএম সহ অন্যান্য হাসপাতালেও মশার কামড়ে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোগী আসছেন বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। এদিকে অভিযোগ পুরনিগম নালা, নর্দমা, আবর্জনা, জঞ্জাল ঠিকমতো পরিষ্কার করছে না। কোনও জায়গায় পরিষ্কারের পর ব্লিচিং পাউডারও ছিটিয়ে দিচ্ছে না। পুর নিগম, স্বাস্থ্য দপ্তর মশার বংশ বিস্তার রোধে ও মশা নির্মূল করার জন্য বিজ্ঞান ভিত্তিক সারা বছর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে পুর নিগমের তরফে সব সময়ই বলা হচ্ছে মশার উপদ্রব ও যন্ত্রণা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নালা-নর্দমা-আবর্জনা প্রতিদিন নিয়মিত ভাবেই পরিষ্কার করছে সাফাইকর্মীরা। নালায় অ্যান্টি লার্ভা স্প্রে করা হয়েছে। পুর নিগমের আরও দাবি ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুর সাফাইকর্মীরা ও সংশ্লিষ্ট অফিসাররা দিবারাত্রি এই কাজ করছেন। পুর ওয়ার্ডগুলির কাউন্সিলাররা এই সব কাজে নজরদারি ও তদারকি করছেন বলেও পুরনিগমের তরফে জানানো হয়েছে তারপরও পুর নাগরিকদের প্রশ্ন মশার যন্ত্রণা ও দুর্ভোগ কবে কমবে?

Dainik Digital

Recent Posts

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

19 hours ago

কুম্ভ ইকনমি

২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…

19 hours ago

২০২ কোটি ব্যয়ে আরও একটি নয়া বিল্ডিং আইজিএমে : মুখ্যমন্ত্রী।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-আগরতলাগভর্নমেন্ট কলেজের আসন সংখ্যা ৫০ থেকে বেড়ে ৬৩ করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। আইজিএম হাসপাতালে…

20 hours ago

এক আগরতলা শ্রেষ্ঠ আগরতলা গড়ে তোলার জন্য সংকল্প নিন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-শারদউৎসব সম্পন্ন হওয়ার পর সামান্য দেরি হলেও বৃহস্পতিবার অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে…

20 hours ago

প্রিন্সিপালশূন্য ১৬ ডিগ্রি কলেজ, লাটে পড়াশোনা।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যসরকারের সাধারণ ডিগ্রি কলেজে প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ বিশবাঁও জলে। দু'বছর আগে রাজ্য সরকারের…

21 hours ago

প্রতিবেশীর সম্পর্ক।।

ভারত বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক বদলায়নি। তবে। দুই দেশের মধ্যেকার কূটনৈতিক আদানপ্রদান কমিয়াছে। ফলে দুই…

2 days ago