মাওদের খুনের হুমকিতে পদ্মশ্রী ফেরানোর প্রস্তাব বৈদ্যরাজের!!

 মাওদের খুনের হুমকিতে পদ্মশ্রী ফেরানোর প্রস্তাব বৈদ্যরাজের!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-জঙ্গল ঘেরা ছত্তিশগড়ের প্রত্যন্ত গ্রামে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছেন গত তিন-চার দশক ধরে। আর তার স্বীকৃতির পুরস্কার স্বরূপ ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান দেওয়া হয়েছিল ‘বৈদ্যরাজ’ হেমচন্দ মাঝিকে। এক মাস যেতে না যেতেই সোমবার সেই পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করলেন ‘বৈদ্যরাজ’।তিনি স্পষ্ট বলেছেন, মাওবাদীদের হুমকির জেরেই তিনি এই পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে চান।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৬ মে চামেলি ও গৌরদন্দ গ্রামে হেমচন্দ্র মাঝির বিরুদ্ধে পোস্টার দেয় মাওবাদীরা।পোস্টারে ছিল রাষ্ট্রপতির হাত থেকে তার পদ্মশ্রী নেওয়ার ছবি।রাষ্ট্রীয় পুরস্কার নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি রাষ্ট্রের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের অভিযোগ করা হয়েছে মাওবাদীদের তরফে। মাওবাদীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ; ছোটডংরায় লৌহ আকরিক প্রকল্পে কমিশনকে সাহায্য করেছিলেন হেমচন্দ্র। এমনকি এই কাজের জন্য বিপুল পরিমাণ টাকাও ‘কমিশন’ হিসাবে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল মাওবাদীরা।গত রবিবার মাওবাদীদের তরফে যে পোস্টারগুলি সাঁটানো হয়েছে সেখানেও এই বিষয়টি ফের উত্থাপন করা হল।
গত কয়েক বছর ধরেই মাওবাদীদের এরকম অভিযোগ এলেও পুরো বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন ‘বৈদ্যরাজ’।তখন পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে সরকারি বাড়িতে থাকার জন্য আবেদন করেছিলেন। পাশাপাশি পুলিশি নিরাপত্তাও চেয়েছিলেন তিনি।তার আবেদনের ভিত্তিতে একটি সরকারি আবাসন দিয়েছিল ছত্তিশগড় রাজ্য প্রশাসন। সেই সঙ্গে তারনিরাপত্তায় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীও মোতায়েন হয়েছিল।
যদিও পরবর্তীতে সেই বাড়িতে পাঁচিল ও জলের পরিষেবা না থাকার অভিযোগে সরকারের দেওয়া বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে চলে যান হেমচন্দ্র। পুরস্কার ফেরানো প্রসঙ্গে হেমচন্দ মাঝি জানান, ‘মাওবাদী হামলায় পরিবারের এক সদস্যকে আগেই হারিয়েছি আমি। মিথ্যা অভিযোগে কোনও কারণ ছাড়াই আমার ভাইপোকে হত্যা করেছিল মাওবাদীরা। পরিবারের কাউকে আর হারাতে চাই না।

নতুন করে ফের মৃত্যুর ছায়া ঘনিয়েছে পরিবারের উপর। যার জেরেই

‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে চাই আমি।’

একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মাওবাদীরা প্রশ্ন করছে কীভাবে এই পুরস্কার পেলাম আমি? আমি অবশ্য তাদের কাছে বলার প্রয়োজন বোধ করিনি যে আমার কাজের জন্যই এই পুরস্কার। মাত্র ২০ বছর বয়স থেকে একাধিক রোগের জড়িবুটি চিকিৎসা করে চলেছি, বিশেষ করে ক্যানসারের।’ পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পরই পদ্মশ্রী পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য, ৭২ বছর বয়সি হেমচন্দ মাঝি দীর্ঘ বছর ধরে জড়িবুটি চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত। জঙ্গলের মধ্যে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে যেখানে চিকিৎসা পরিষেবা দুর্লভ সেই সব জায়গায় পৌঁছে গিয়ে মানুষকে চিকিৎসা দিতেন তিনি। তার কাজের জন্য এলাকায় ‘বৈদ্যরাজ’ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন হেমচন্দ মাঝি। এই কাজকে স্বীকৃতি দিতেই পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য এবছর তাঁর নাম ঘোষণা করে কেন্দ্র সরকার।
গত মাসেই রাষ্ট্রপতির হাত থেকে তিনি নিয়েছিলেন দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার। মাস ঘুরতে না ঘুরতেই ফের মাওবাদী হুমকি আসায় পদ্মশ্রী পুরস্কার ফেরানোর কথা ঘোষণা করলেন হেমচন্দ্র মাঝি।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.