মাছ নয়, যেন দৈত্য!!
সমুদ্র সৈকতে উঠে এল মাছরূপী এক দৈত্য। আদত মাছ – ই।বনি ফিশ। এমন দৈত্যাকার মাছ দেখে ঘাবড়ে যান সৈকতে থাকা পর্যটকরা। ওজন করে দেখা যায়, এ মাছের ওজন ৩ টন! অর্থাৎ এই মাছ এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে হলে আস্ত জেনে একটা ট্রাকে চড়িয়ে নিয়ে যেতে হবে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পর্তুগালে আজোরেস দ্বীপপুঞ্জের ফায়েল দ্বীপে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল ওই মাছটি। গত বছর মাছটি উদ্ধার হলেও সম্প্রতি সে ব্যাপারে তথ্য সামনে এসেছে।‘দ্য জার্নাল অফ ফিশ বায়োলজি’ জার্নালে এই মাছটি সম্পর্কে গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে। তার পরই এই দৈত্যাকার জলজ প্রাণীটি সম্পর্কে নানা খবর প্রকাশ্যে আসে। আজোরেস দ্বীপপুঞ্জ আবিষ্কৃত এই মাছটিকে বিশ্বের সবচেয়ে ভারী হাড়ের মাছ বলে গণ্য করছেন গবেষকরা। মাছটির ওজন ৩ টন।২ হাজার ৭৪৪ কেজি। গত ডিসেম্বরে মধ্য উত্তর আটলান্টিকের ফায়েল দ্বীপের কাছে প্রাণীটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। আটলান্টিক ন্যাচারালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং অ্যাজোরেস ইউনিভার্সিটির গবেষকরা -বায়োমেট্রিকাল এবং অঙ্গসংস্থান সংক্রান্ত তথ্যের জন্য গবেষণা করেছেন পর্তুগালে। তারা বলেছেন, প্রথমে মাছটিকে তীরে টেনে আনা হয়েছিল। সেখানে প্রাণীটির ওজন করা হয়েছিল। পরিমাপ করা হয়েছিল এবং ডিএনএ পরীক্ষার জন্য টিস্যুর নমুনা নেওয়া হয়েছিল। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বনি ফিশের প্রায় ২৯,০০০ প্রজাতি রয়েছে। তাদের কঙ্কালের হাড়ের গঠন রয়েছে, যা বাকি মাছের দুনিয়া থেকে তাদের পৃথক করে রেখে রেখেছে। ৩ টন ওজনের এই বনি ফিশের আগে পর্যন্ত বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ভারী মাছটি উদ্ধার করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। জাপানের কামোগাওয়া দ্বীপ থেকে। সেটি ছিল নারী প্রজাতির সানফিশ। সেই মাছের ওজন ছিল ৫০৭০ পাউন্ড,অর্থাৎ ২,৩০০ কেজি। সেই মাছের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে পর্তুগালের এই মাছ। পর্তুগালের ফেয়াল সৈকতে উদ্ধার হওয়া এই মাছটির ওজন তার চেয়ে ৮৮২ পাউন্ড বেশি। এই মাছ মৃত মাছটিকে নিয়ে এখনও গবেষণা শেষ হয়নি। কোনও ভারী কোনও বস্তুর (ভাসমান বরফ!) ধাক্কায় মাথায় আঘাত লেগে মাছটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, আলোচ্য বনি ফিশটি সানফিশ প্রজাতির।
গবেষকরা জানিয়েছেন, সান ফিশটিকে একটি ক্রেন স্কেল ডায়নামোমিটার দিয়ে ওজন করা হয়েছিল। একটি যন্ত্র যা সাধারণত একটি ক্রেন দ্বারা উত্তোলিত বস্তু ওজন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। একটি ফর্কলিফ্ট ট্রাক ব্যবহার করে মাছটিকে গবেষণাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই বনি ফিশ ১০.৬৭ ফুট লম্বা এবং উচ্চতা ১১.৭৮ ফুট। মাছটিকে কেন্দ্রে রেখে চারপাশে পরিমাপ করে দেখা যায়, সর্বাধিক প্রস্থ ২,৮২ ফুট। তবে এই মাছের লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয়নি।
আটলান্টিক ন্যাচারালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক এবং পোস্টডক্টরাল গবেষক হোসে নুনো গোমেস পেরেইরা সিএনএনকে বলেছেন, ‘এমন প্রাণীকে মৃত অবস্থায় দেখাটা দুঃখজনক ছিল। কারণ এই মাছ অগভীর সমুদ্রের রাজা!’ তিনি বলেন, ‘বিশাল আকৃতির সানফিশটিকে , ফায়েল দ্বীপের প্রাকৃতিক উদ্যানে স্কেল সমাহিত করা হয়েছে।”