মাটি, কাঠ, কাগজ নয়; আলু দিয়েই তৈরি হল জগন্নাথদেবের মূর্তি!!

 মাটি, কাঠ, কাগজ নয়; আলু দিয়েই তৈরি হল জগন্নাথদেবের মূর্তি!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-মাটি নয়, কাঠ নয়, একেবারে আস্ত একটি আলুর উপর জগন্নাথ দেবের মূর্তি তৈরি করে তাক লাগালেন পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাট নামাবঙ্গীর বাসিন্দা দেবজ্যোতি মোহরা।বর্তমানে দেবজ্যোতি কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পাঠরত হলেও ছোটবেলা থেকে এই ধরনের কাজের প্রতি ঝোঁক ছিল যথেষ্ট।আলু দিয়ে শিল্পকর্ম তৈরির ভাবনা মাথায় আসে দেবজ্যোতির।তার যেমন ভাবনা,তেমনই কাজ।ভাবা মাত্রই এই কাজে লেগে পড়েন তিনি।
জগন্নাথদেবের মুখাবয়ব তৈরির পরিকল্পনা মাথায় আসতেই মোট তিনটি আলু দিয়ে তিনি জগন্নাথ দেবের প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন। কীভাবে জগন্নাথদেবের মুখাবয়ব আলুতে ফুটিয়ে তুলবেন তার নিয়ে আগাম কোন স্কেচ বা পরিকল্পনা ছিল না।এমনিতেই এই তরুণ জরি শিল্পী।হিসাবে গোটা বালুরঘাটে বিশেষ পরিচিত। সম্প্রতি লোকসভার ভোট প্রচারে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সম্পাদক সুকান্ত মজুমদারও তার বাড়িতে গিয়ে সাক্ষাৎ করে এসেছেন। ভোট ভিক্ষা করতে এসে, তরুণের এই প্রতিভা নিজের চোখে দেখে কার্যত তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন সুকান্তবাবু। যদিও দেবজ্যোতির বাড়িতে আসার আগেই জেনে নিয়েছিলেন তার শিল্পকর্মের কথা। যাওয়ার আগে অযোধ্যার রামলালার একটা মূর্তিও বায়না করে গিয়েছিলেন তিনি।
পেশায় ছাত্র হলেও সংসার – চালাতে ছোট থেকেই জরির কাজ শিখতে হয়েছিল।এখন মাঝেমধ্যেই কাঁথিতে গিয়ে ঝিনুক নিয়ে আসেন।আর তাই দিয়েই দেবী প্রতিমার সাজ তৈরি করেন। করোনার পর থেকে আর অন্যের কাছে কাজ করতে যাওয়া হয়নি; তার জায়গায় নিজেই নিজের বাড়িতে একটা ছোটখাটো কারখানাও তৈরি করে ফেলেছেন।তখন অবশ্য স্কুলের গণ্ডিও পেরোন নি দেবজ্যোতি।
পেটে খিদের টানে পড়াশোনায় কোনদিনই যে সেভাবে মন বসত না সেটাও নিজে মুখে স্বীকার করে নিয়েছেন।
স্কুলে পড়ার সময় যখন ছেলেদের মাথায় থাকে ডাক্তার হবো, ইঞ্জিনিয়ার হবো;ঠিক সেই সময় দেবজ্যোতির ইচ্ছে ছিল আর্ট কলেজে গিয়ে ভাস্কর্য শেখা। আর সেজন্য দ্বাদশ মানের পরীক্ষায় সব বিষয়ে পাশ করাটা দরকার ছিল।
সেই সাফল্য অর্জনের পর নিজে রঙ-তুলি নিয়ে আঁকা-আঁকিও শুরু করেন। হাতে তুলির টান যাতে ঠিক
লেখার কাজেও হাত পাকিয়েছেন।দেবজ্যোতি বলছিলেন, ‘শুধু জরির কাজে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছিলাম, তাই বুঝেছিলাম থিম আর্টিস্ট হতে গেলে রঙ-তুলির ব্যবহার ও জানতে হবে।সেজন্যই দেওয়ালে রঙ মাখিয়ে হাত তৈরি করেছিলাম।কিছু টাকাও এসেছিল আর নিজের লক্ষ্যের দিকে কিছুটা এগিয়ে যেতে পারলাম।’
জগন্নাথদেবের আলুর মূর্তি তৈরি করতে গিয়ে প্রথমেই আলুর খোসা ছাড়িয়ে তার মধ্যে একটির সামনের অংশ ষড়ভুজাকৃতিতে কেটে নেন দেবজ্যোতি। রঙ করার আগে অবশ্য প্রভুর মূর্তিকে এক ঝলক দেখলে বোঝা যাবে না সেটি জগন্নাথদেবের মূর্তি। পরে রঙ করার পরেই ফুটে উঠল জগন্নাথদেবের মুখ। রঙের বিষয়ে অবশ্য দেবজ্যোতি জানালেন সাধারণ ফেব্রিক রঙ আলুর ওপর না ফোটায় কালাম ছুটে গিয়েছিল তার। পরে ফেব্রিক ব্যবহারে সাফল্য আসে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.