মানব মনে সঙ্গীতের প্রভাব।।
কোন কোন ক্ষেত্রে মিউজিক থেরাপি প্রয়োগ করবেন ?১.মানসিক চাপ কমাতে,যারা মারাত্মক মানসিক চাপ বা টেনশন-এ কষ্ট পান, তারা যদি সঠিক মিউজিক-এ নিজেদের মগ্ন করতে পারেন, তাহলে কেল্লাফতে।২. হতাশা বা ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে এই মিউজিক থেরাপি একান্ত জরুরি।ব্যস্ত জীবনযাত্রায় ক্রমাগত একে অপরের থেকে দূরে যাওয়ার কারণে সম্পর্কের মধ্যে গড়ে উঠছে একটা দূরত্ব।দূরত্ব ভেঙে ফেলছে নিজেদের মধ্যেকার সম্পর্ক।এতে মানুষ ডুবে যাচ্ছে হতাশায়।মিউজিক থেরাপি হতাশা রুখতে দারুণ কাজ করে।বিশেষজ্ঞদের মতে অ্যান্টি ডিপ্রেশন জাতীয় ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি মিউজিক থেরাপি করানো যায় তাহলে আশাতীত ফল পাওয়া যায়।৩.স্মৃতিভ্রম বা ভুলে যাওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারেন মিউজিক থেরাপি। আলজাইমার রোগের চিকিৎসার মিউজিক থেরাপি কার্যকর।সুরের মাধ্যমে ভুলে যাওয়া বিষয়গুলি চমৎকারভাবে মনে রাখতে পারেন।বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায় যে, মিউজিক থেরাপি এই হৃদয়ে রোগ,সেরিব্রাল অ্যাটাকের সম্ভাবনা রুখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এমনকী মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে কোমায় চলে যাওয়া অনেক রোগীকে ফিরে আসতে দেখা গেছে।কাজে মন নিবদ্ধ করতে মিউজিক থেরাপি-বিজ্ঞানীদের মতে যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজের পূর্বে সঠিক মিউজিক শুনলে ওই কাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পায় এবং এর পাশাপাশি গবেষকদের দাবি,গান শোনার পর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পড়া আগ্রহের সঙ্গে মনোযোগ ও দক্ষতা বাড়ে।মানসিক ব্যাধির জন্য -মানসিক ব্যাধি যুক্ত ব্যক্তি গানের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন।মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় মিউজিক থেরাপি টনিক-এর মতো কাজ করে। আপনার চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতিগুলোকে ভিন্নভাবে খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
ধর্মীয় বেড়াজাল ঘুচিয়ে দেয় মিউজিক-একমাত্র গানের মধ্যেই থাকে না কোনও বিভেদ।এই শক্তি,অস্ত্র বা যুদ্ধ, সংঘাত বা জাতি বিভেদ সব কিছু ঊর্ধ্বে।সবাইকে এক সুতোয় বেঁধে রাখে।লালন ফকিরের কথাই ভাবুন, মুসলিম না হিন্দু সেখানেই নয়, তার পরিচিতি তার গানে। রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল গীতি, জাকির হোসেন,পণ্ডিত শিবশঙ্কর, কারোর থেকে কারও আলাদা করা সম্ভব নয়।দেশজুড়ে এদের গান সুখ তালের ক্ষেত্রে মত্ত মানুষ। শুনতে শুনতে ভুলে যায় রোগ, জ্বালা এবং যন্ত্রণা। সর্বশেষে বলি, সঙ্গীতকে যদি পেশা হিসেবে নিতে চান, অত্যন্ত সুন্দর কর্মজীবন হবে আপনার।তাই সবশেষে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, আমরা গানের স্রষ্টাকে ছাপিয়ে, পুরো কৃতিত্ব কণ্ঠশিল্পীকে দিই।কিন্তু সাধারণত যারা গান শুনে থাকেন, তারা, ইন্সট্রুমেন্ট কে বাজাল বা বাদ্যযন্ত্র কে বাজাল, কে সুর করল, কে গান লিখল, এসব জানার প্রয়োজন মনে করেন না। কিন্তু একটি গানে যে এসব শিল্পীদের ভূমিকা রয়েছে,তা মান্য করতে জানেন না। কিন্তু বাস্তব জীবনে আমার মুখ থেকে যেসব বাক্য নির্গত করি আমরা, আমাদের শ্রোতারা সেসবগুলোকে একান্তই আমার বাক্য বলে মনে করে। কিন্তু তা নয়। শিল্পী অনেক ধরনের হয়ে থাকে।যেমন বাদ্যযন্ত্র যিনি বাজান, তবলা সুরের বহু মানুষ ভাল হয়ে থাকেন, তবলা সুরে মাতোয়ারা করে দিয়েছেন, বিশ্ব জগতে বন্দিত হয়েছেন, এরকম মানুষ আছেন,যে গানে সুর দিল সেটাও একটা বিরাট জায়গা,এই হিসেবে বহু মানুষ এই পেশায় নিযুক্ত। গান লেখেন যারা, তারাও এই পেশায় নিযুক্ত।কিন্তু তারা পিছন দিকে থাকেন বলে, এইসব শিল্পীরা মর্যাদা পান না। কিন্তু এরাও বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত রয়েছেন, এবং অত্যন্ত ভালভাবে কাজ করে চলেছে, এবং অর্থ উপার্জনও করে চলেছে।সর্বশেষে বলি, জ্যোতিষ মতে, সরস্বতী যোগ, বীণা যোগ, এবং গন্ধর্ব যোগ এসব কোনও যোগ যদি তার জন্ম কুণ্ডলীতে থেকে থাকে, তাহলে সে সঙ্গীত জগতের সঙ্গে অবশ্যই যুক্ত থাকবে, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।