মানুষকে হেলাফেলা করা সমীচীন হবে না : মুখ্যমন্ত্রী।

 মানুষকে হেলাফেলা করা সমীচীন হবে না : মুখ্যমন্ত্রী।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || ভাষণবাজি নিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে প্রকারান্তরে সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা.মানিক সাহা। তিনি বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাষণবাজিতে কাজ দেবে না। যা বলা হচ্ছে তা করে দেখাতে পারলেই প্রচেষ্টা সার্থক হবে। তাই লম্বা চওড়া বক্তব্য না রেখে মানুষের জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী।প্রদেশ বিজেপি অফিসে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির বলিদান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষকে কোনও অবস্থাতেই হেলাফেলা করা সমীচীন হবে না। মানুষ সবকিছুই বুঝে। মানুষের জন্যই বিজেপি জোট সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাবর্তন করতে পেরেছে। তাই প্রতিটি দলীয় কর্মীকে বিষয়টি মাথায় রেখেই চলতে আহ্বান রাখেন তিনি।বঙ্গ রাজনীতি পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূলকে এদিন তীব্র আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান দুর্দশার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সেখানকার একটা অংশের মানুষ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির অবদান ভুলে গিয়েছেন। তাদের হয়তো মনে নেই যে কার অবদানের জন্য বাংলা তৈরি হয়েছিল।তিনি বলেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ছিলেন একজন অসাধারণ ব্যক্তি, একজন সম্মানিত শিক্ষাবিদ যিনি মাত্র তেত্রিশ বছর বয়সে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছিলেন।তিনি এই পদ অর্জনকারী সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার প্রসারে তার নিরলস প্রচেষ্টার কথা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৯৩৭ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলা ভাষায় সমাবর্তন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। যা তখনকার সময়ে ভারতের যেকোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। তিনি পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতির সাক্ষী হওয়া অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ক্ষমতায় থাকা লোকজন মনে হয় পশ্চিমবঙ্গের অস্তিত্বের সারমর্ম ভুলে গিয়েছেন এবং যার ফল হিসাবে তারা৷পশ্চিমবাংলাকে একটি মিনি পাকিস্তানে পরিণত করেছেন। এটি খুবই বেদনাদায়ক।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন,২০১৪ সালের পরে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের ক্ষমতায় এসেছেন তখন থেকে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদির কারণে মানুষ স্বচ্ছ সরকার কী তা অনুধাবন করতে পারছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির পদাঙ্ক অনুসরণ করেন। তাই প্রধানমন্ত্রী মোদির দিক নির্দেশনা মেনে স্বচ্ছভাবে কাজ করা সরকার এবং দল হিসাবে প্রতিটি কর্মীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী মোদির পথ অনুসরণ করার মাধ্যমে জনগণের সমর্থন অর্জন করা যাবে দৃঢ়তার সাথে।আসন্ন নির্বাচনগুলিতে জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দল ও জনগণের মধ্যে সংযোগ আরও জোরদার করার জন্য দলীয় কর্মী ও নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। আগামী নির্বাচনে আরও বড় ব্যবধানে জয় চাইছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করতে পারলেই তা সম্ভব হবে। এ জন্য সবাইকে বাড়ি বাড়ি যেতে হবে, মানুষের সাথে দেখা করতে হবে এবং সংযোগ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু লিফলেট এবং পোস্টার বিতরণ যথেষ্ট হবে না। জনগণের সমর্থন পেতে হলে দল এবং সরকারকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বকে অবহেলা করার জন্য পূর্ববর্তী কেন্দ্রীয় সরকারেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাক্ট ইস্ট নীতির কারণে ত্রিপুরা অভূতপূর্ব উন্নয়নের দিশায় এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনও বিরোধী দলগুলি বিভিন্ন কায়দায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাজ্যের অগ্রগতি ব্যাহত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু এই রাজ্যের জাতি জনজাতি উভয় অংশের মানুষ চায় শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য সহ প্রদেশের শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। গোটা রাজ্য জুড়েই এদিন শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির বলিদান দিবস পালন করা হয় শাসক দলের উদ্যোগে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.