সোমবার ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ সার্কিট যাত্রা শুরু করবে ‘ভারত গৌরব’ ট্রেন!!
মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণই সরকারের মূল লক্ষ্য: মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রধানমন্ত্রী আবাস
যোজনা গ্রামীণ ভারতের প্রান্তিক মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের গ্যারান্টি দিচ্ছে। এই উদ্যোগে পিছিয়ে নেই ত্রিপুরাও। রাজ্যের প্রায় চার লক্ষ সৌভাগ্যবান পরিবারের একজন বামুটিয়া, তুফানিয়া লুঙ্গার চা শ্রমিক প্যায়ারী তাঁতির পরিবার নির্মাণ করেছে তাদের পাকা বসতবাড়ি। সরকারী কার্যক্রমে রবিবার তুফানিয়া লুঙ্গা চা বাগান এলাকায় গিয়ে সেখানে শ্রীমতী তাঁতির বাসভবনেও গেলেন মুখ্যমন্ত্রী।
‘মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্প’র অঙ্গ হিসেবে এদিন বামুটিয়ার তুফানিয়া লুঙ্গা চা বাগানে এই প্রকল্পের অন্তর্গত মোট ৮২টি চা শ্রমিক পরিবারের মধ্যে পাট্টা বিতরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। একই সাথে নেশামুক্তি অভিযানের অন্তর্ভুক্ত সচেতনতা র্যালি, রক্তদান শিবির, আইনি শিবির, স্বাস্থ্য শিবিরের উদ্বোধন ও কৃষি সরঞ্জামেরও বিতরণ করেন তিনি।এছাড়াও পরিবেশ রক্ষায় এদিন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিরও শুভসূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।প্রশাসনিক এই কর্মসূচির সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে রাজ্য সরকার। তার কথায়, স্বচ্ছতার সঙ্গে সঠিক দিশায় কাজ হচ্ছে বলেই ত্রিপুরা রাজ্য আজ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে এবং জিএসটি সংগ্রহের ক্ষেত্রেও দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, সময়ের কাজ সময়ে শেষ করার জন্য বিগত ৩৫ বছরের চেয়েও বর্তমান সরকারের ৭বছরের সময়কালে উন্নয়নের কাজ অনেক দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নমূলক কাজ করার পাশাপাশি রাজ্য সরকার চাইছে রাজ্যের মানুষকে অযথা অর্থব্যয় আর সময় নষ্ট করে চিকিৎসার জন্য যাতে অন্তত বাইরে না যেতে হয়। সরকারীভাবে এই উদ্দেশ্যর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ১০০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক চক্ষু হাসপাতাল চালু করা হচ্ছে রাজ্যে। এছাড়াও ২০২২ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে প্রতি ঘরে সুশাসন কর্মসূচিকেও একটি নির্দিষ্ট সময়ে করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। এই কর্মসূচিতে এখনও পর্যন্ত ৪,৬০০ টি শিবিরের মাধ্যমে মানুষের কাছে বিভিন্ন পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণই রাজ্যের বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্রাম এবং শহরের উন্নয়নের মধ্য দিয়েই বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন। রাজ্যেও সেই লক্ষ্যে কাজ চলছে।
প্রশাসনিক এই কর্মসূচিতে রক্তদানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রক্তদানের মতো মহৎ দান আর হতে পারে না। তিনি আরও বেশি করে এই মহতি দানে এগিয়ে আসার জন্য রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ৫ মিনিটে ৫ লক্ষ গাছের চারা রোপণ করে বৃক্ষরোপণেও ত্রিপুরা রেকর্ড করেছে। নেশামুক্ত সমাজ এবং রাজ্য গড়তে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে বলে এদিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও নেশায় আসক্ত হয়ে পড়া যুবকদের সুস্থ করতে রাজ্যের আটটি জেলাতেই সরকারীভাবে নেশামুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানান। তিনি নেশা কারবারিদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে। কৃষিক্ষেত্রে রাজ্যের অগ্রগতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে রাজ্যের কৃষকদের আয় যেখানে ছিলো ৬,৫৮০ টাকা, তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩,৫৯০ টাকায়। তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্য এগিয়ে যাচ্ছে বলেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক থেকে রাজ্যকে নিয়মিতভাবে এখন পুরস্কৃত করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বামুটিয়া এলাকার একটি স্বসহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে ১৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। এছাড়াও বেশ ক’জন চা শ্রমিকদের হাতেও জমির পাট্টা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজ এবং বিভিন্ন সার্টিফিকেট তুলে দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী নিজ হাতে বৃক্ষরোপণ করে এদিন আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির সূচনা করেন। এছাড়াও তিনি রক্তদান শিবিরটিও পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, ত্রিপুরার চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সমীর রঞ্জন ঘোষ, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক মেঘা জৈন, মোহনপুর মহকুমার মহকুমাশাসক সুভাষ দত্ত, বামুটিয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান দীপক কুমার সিনহা সহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।