মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মানছে না চেয়ারম্যান, পিছনে কোন্ শক্তি!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরা
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত আধিকারিককে ঘিরে মহাফাঁপরে পড়েছে রাজ্য সরকার।আর এই আধিকারিকের দৌলতে, রাজ্য প্রশাসনের টিসিএস অফিসার মহলে, ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।অভিযোগ টিপিএসসির চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত আধিকারিক এবং মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের জনৈক ওএসডির দৌলতে টিসিএস গ্রেড-টু অফিসারদের পদোন্নতি পর্যন্ত হচ্ছে না। ফলে রাজ্য অফিসার মহলের সাথে রাজ্য সরকারের তীব্র বাকবিতর্ক হচ্ছে বলে খবর। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে রাজ্যের গ্রেড-টু অফিসাররা লাগাতর কর্মবিরতি নিতে পারেন।এমনকী উচ্চ আদালতেও মামলা হচ্ছে। ফলে সহজেই অনুমেয় রাজ্য সাধারণ প্রশাসনের কী বেহাল দশা চলছে।
মহাকরণ সূত্রে খবর রাজ্যের ৩৫ জন গ্রেড-টু টিসিএস অফিসার ১০ বছর চাকরির পর বর্তমানে টিসিএস গ্রেড- ১ পদে পদোন্নতি হবার কথা। এরা সবাই ২০১৪ সালের নিযুক্ত টিসিএস অফিসার। সেই অনুযায়ী গত ৬ মাস আগে তাদের পদোন্নতির জন্যে ত্রিপুরা লোকসেবা আয়োগের চেয়ারম্যানের কাছে ফাইল যায়।এখন পর্যন্ত ৩৫ জন টিসিএসগ্রেড-টু অফিসারের পদোন্নতির ফাইলে স্বাক্ষর করেননি চেয়ারম্যান।ফলে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ পদে অফিসার সংকটে ধুঁকছে।এর পরিণতিতে প্রশাসনে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। একদিনের কাজ ছয় মাসেও শেষ হচ্ছে না।কেন টিপিএসসির চেয়ারম্যান ফাইলে স্বাক্ষর করছে না এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
মহাকরণ সূত্রে আরও জানা গেছে, এই ফাইলটিতে অনুমোদনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান।এমনকী মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত ফাইলে অনুমোদনের জন্যে নির্দেশ প্রদান করেছেন। টিসিএস গ্রেড-টু অফিসাররা পদোন্নতি পাবেন। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। তবে মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবের অনুরোধ পর্যন্ত মানছেন না টিপিএসসির এই আধিকারিক।ফলে রাজ্য সরকার বিপাকে পড়েছে।
অভিযোগ, আবার এই সময়ের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের জনৈক এক ওএসডি তার পরিবারের এক সদস্যের পদোন্নতির ফাইলে এই চেয়ারম্যানকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন। আর টিপিএসসির অনুমোদনের ফলে পঞ্চায়েত রাজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে জনৈক শিক্ষকের পদোন্নতি হয়ে গিয়েছে।আর এই খবর মহাকরণে আসার পরই গত সাতদিন ধরে রাজ্যব্যাপী টিসিএস অফিসারদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের ওই ওএসডির জন ৩৫ জন টিসিএস-গ্রেড-টু অফিসারের প্রমোশন হচ্ছে না। বর্তমানে মহাকরণে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর ‘পাওয়ার সেন্টারে’ পরিণত হয়েছেন ওই ওএসডি।
অভিযোগ, তিনি মন্ত্রীদের, সচিবদের পর্যন্ত ডাকছেন। এনিয়ে পর্যন্ত মন্ত্রিসভার সদস্য ও সচিবদের মধ্যে ক্ষোভের বহি-প্রকাশ হচ্ছে। ওএসডি আবার একজন পিএসও নিযুক্ত করেছেন।যা তিনি কোনভাবে করতে পারেন না।অভিযোগ জনৈক ওএসডি সব কাজ মুখ্যমন্ত্রীর নামকে ব্যবহার করে করছেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে টিসিএস অফিসার, ঠিকাদার, বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা পর্যন্ত অভিযোগ তোলেছেন।তবে কোনভাবেই ওএসডির ক্ষমতার অনৈতিক প্রয়োগ বন্ধ করা যাচ্ছে না।এখন আবার নতুন করে টিসিএসএ গ্রেড- টু অফিসারের পদোন্নতির ফাইল আটকে রাখার ক্ষেত্রে ওএসডির নাম প্রকাশ্যে আসতেই নানা প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযোগ, এই প্রথম টিপিএসসির চেয়ারম্যান পদে প্রাক্তন এক আর্মি আধিকারিককে বসানো হয়েছে।এই আধিকারিক রাজ্য সরকারের এসপি পদের সমতুল্য ছিলেন।টিপিএসসির চেয়ারম্যান পদে আগে যারাই ছিলেন, তারা অবসরপ্রাপ্ত মুখ্যসচিব, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, পিসিসিএফ পদের আধিকারিক ছিলেন। কার হাত ধরে তিনি এই পদে বসলেন?এ নিয়ে রাজ্য
প্রশাসনে পর্যন্ত ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
অভিযোগ, সম্পূর্ণ নিয়ম লঙ্ঘন করে তার বেতন পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। এখন তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই চক্রান্তে মেতে উঠেছেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, টিপিএসসির চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত আধিকারিক ও মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের জনৈক ওএসডি মিলে টিসিএস অফিসারদের বিরুদ্ধে এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছেন।