মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বাঁচাতে পুলিশ প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-চাঁদার
জুলুম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তথাকথিত সুশাসনের রাজ্যে প্রশাসনের নির্লজ্জ দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে এলো। প্রশাসনের এমন নির্লজ্জ ভূমিকা দেখে ও শুনে শহরবাসী ছিঃ ছিঃ করছে। শুধু তাই নয়,প্রশাসনের এমন দ্বিচারিতায় শহরবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।প্রশ্ন উঠেছে, একই অভিযোগ এবং অপরাধের বিচার কি করে দু’রকম হয়? মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার প্রশাসন সেই কাজটাই করলো বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বাঁচাতে তারই এলাকার ক্লাবকে অনৈতিকভাবে ছাড় দিয়ে দিল পুলিশ প্রশাসন।আর একই অভিযোগের দায়ে রাজধানীর অন্য এলাকার একটি ক্লাবের পুজো বন্ধ করে দিল পুলিশ।মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই রয়েছে রাজ্যের আরক্ষা প্রশাসন। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের এই দ্বিচারিতায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন এই শহরের সচেতন নাগরিকরা।
উল্লেখ্য,চাঁদার জুলুম নিয়ে শহরের দুইটি ক্লাবের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ উঠে।এই দুটি ক্লাবের মধ্যে একটি হলো মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার নির্বাচনি এলাকার ভট্টপুকুর আপনজন ক্লাব।অন্যটি বনমালীপুর এলাকার উদীচী ক্লাব।আপনজন ক্লাবের পক্ষ থেকে পার্শ্ববর্তী একটি বহুতল আবাসনে বসবাসকারী আবাসিকদের পঁচিশ হাজার টাকা করে মোট দশ লক্ষ
টাকা চাঁদা ধার্য করে রসিদ ধরিয়ে দেওয়া হয়। আবাসিকরা তাতে আপত্তি জানালে, ধার্য করা টাকাই দিতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।এতে আতঙ্কিত আবাসিকরা বিস্তারিত উল্লেখ করে এডিনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। অপরদিকে, বনমালীপুর এলাকার উদীচী ক্লাবের জনাকয়েক সদস্য এলাকারই এক বাড়িতে চাঁদা আদায় করতে গেলে, চাঁদা নিয়ে বিতর্ক হয়।সেই বিতর্ক হাতাহাতিতে পরিণত হয়। ঘটনার জেরে পূর্ব থানায় অভিযোগ,পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়।এই ঘটনাতেও শহরবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু বিস্ময়ের ঘটনা হলো, দুই ঘটনাতে পুলিশের ভূমিকা দেখা গেলো একেবারে দুইরকম।উদীচি ক্লাবের ঘটনায় পূর্ব থানার পুলিশ চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে ক্লাবের দুই পদাধিকারীকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদের নামে রাতভর থানায় বসিয়ে রাখে।ক্লাব কর্তৃপক্ষকে নোটিস ইস্যু করে জবাব চাওয়া হয়, কেন তাদের পুজো বন্ধ করে দেওয়া হবে না।রবিবার পশ্চিমজেলার পুলিশ সুপার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানালেন উদীচী ক্লাবের পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়নি।অর্থাৎ উদীচী ক্লাবের পুজো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।পুলিশ সুপারের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর গোটা বনমালীপুর এলাকার জনগণ এবং শহরবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।অথচ এলাকার কাউন্সিলার সুখময় সাহার বাড়িতে গতকাল শনিবার বিকাল তিনটায় দুই পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।সেই বৈঠকে উদীচী ক্লাব কর্তৃপক্ষ এবং চাঁদা দাতা অর্থাৎ অভিযোগকারী পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে মীমাংসা আলোচনা হয়।কাউন্সিলার শ্রী সাহার উপস্থিতিতে দুই পক্ষই মীমাংসাপত্রে স্বাক্ষর করে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তার অঙ্গীকার করে।কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার পুলিশ প্রশাসন উদীচী ক্লাবের পুজো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। অপরদিকে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকার আপজন ক্লাবের পক্ষ থেকেও গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় ক্লাব গৃহে একটি মীমাংসা বৈঠক করে। বৈঠকে ক্লাবের সম্পাদক সহ আরও কয়েকজন পদাধিকারী উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলো ইম্পেরিয়াল হাইটস আবাসনের প্রতিনিধিরাও।দুই পক্ষের আলোচনাক্রমে পূর্বে-ঘটে যাওয়া সমস্ত মত বিরোধ মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দুই পক্ষই একটি মীমাংসাপত্রে স্বাক্ষর করেছে। অথচ আপনজন ক্লাবকে পুলিশ প্রশাসন ছাড় দিয়ে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা তো দূরের কথা, বরং পুলিশ মুখ্যমন্ত্রীর মুখ বাঁচাতে গোটা বিষয়টি দফারফা করতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়ে ওভারটাইম খেটেছে। পুলিশের এমন ভূমিকা দেখে শহরবাসী হতবাক।