মুখ থুবড়ে এডিসির শিক্ষা ব্যবস্থা!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে এডিসি এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আর এর মূলে রয়েছে মথা – বিজেপি জোট সরকারের ব্যর্থতা।যার খেসারত দিচ্ছেন হাজারো ছাত্রছাত্রী। প্রত্যেকদিন বিদ্যালয়ছুট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে রাজ্যে গ্রাম পাহাড়ে।এডিসির প্রত্যন্ত এলাকায় বন্ধ হচ্ছে স্কুল।ফলে পড়াশোনার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রাম পাহাড়ের ছাত্রছাত্রীরা। তবে এক অদৃশ্য কারণে মথা – বিজেপি জোট সরকারের কোনও হেলদোল নেই, এমনই অভিযোগ রাজ্যের শিক্ষানুরাগী মহলের। অভিযোগ, মথা – বিজেপি জোট সরকার ছাত্রছাত্রীদের পঠন পাঠনের অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হলেও রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে
আত্মপ্রচার করছে।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, মথা বিজেপি সরকারের ব্যর্থতার জন্য এখন পর্যন্ত এডিসি এলাকায় একটিও হাইস্কুল নেই। তাই এডিসি এলাকার ছাত্রছাত্রীদের অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ হওয়ার পর আর পঠনপাঠনের সুযোগ নেই। কারণ এডিসি এলাকায় এর
বিকল্প রাস্তা নেই।তবে একটিমাত্র হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল থাকলেও আসন সংখ্যা সীমিত থাকায় অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার কোনও সুযোগ নেই।অথচ এরপরও সরকার এবং এডিসি প্রশাসন কুম্ভনিদ্রায় আচ্ছন্ন।ফলে এডিসি এলাকায় নতুন করে হাইস্কুল এবং হায়ার সেকেণ্ডারি
স্কুল সূচনা অধরা।এডিসি এলাকায় একমাত্র হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে আবার ছাত্র অনুপাতে শিক্ষক শিক্ষিকা
নেই।মাত্র বাইশজন শিক্ষক শিক্ষিকা দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এই স্কুলে পঠনপাঠন চলছে। এমনকী স্কুলে বিজ্ঞান বিষয়ে পঠনপাঠনের সুযোগও ক্ষীণ। কারণ একটি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল দিয়ে হাজারো ছাত্রছাত্রীর উচ্চশিক্ষার সমাধান হচ্ছে না। নতুন স্কুল স্থাপন তো দিবাস্বপ্ন, উল্টো এডিসি এলাকার প্রায় ৪৭৮টি স্কুলে একজনও শিক্ষকশিক্ষিকা নেই। তবে সহজেই অনুমেয় রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের কী বেহাল অবস্থা।
এডিসিতে বর্তমানে ২১২টি এসবি স্কুল রয়েছে।এই ২১২টি স্কুলে ছাত্র – অনুপাতে শিক্ষক শিক্ষিকা থাকবে ১৭৮৪ জন।তবে এক্ষেত্রে মাত্র ৪২৫ জন শিক্ষক শিক্ষিকা দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ২১২টি এস বি স্কুল। প্রত্যেকটি স্কুলে মাত্র দুজন শিক্ষক শিক্ষিকার মাধ্যমে পঠনপাঠন চলছে।এডিসি প্রশাসন সূত্রের খবর, এই ২১২টি স্কুলের মধ্যে প্রায় ১১৮টি স্কুলে নিয়মিত পঠনপাঠন হচ্ছে না।ফলে ছাত্রছাত্রীদের বেহাল দশা। অভিযোগ, স্কুলগুলিতে কাগজে কলমে দুজন করে শিক্ষক রয়েছেন যার বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। এডিসি এলাকায় বর্তমানে জেবি স্কুল হলো ১৪০৪টি। ছাত্র অনুপাতে শিক্ষক শিক্ষিকা থাকার কথা ৭৭৭৮ জন। তবে কর্মরত শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন মাত্র ৪৩৭৬জন। বর্তমানে কর্মরত শিক্ষক শিক্ষিকার পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রত্যেক স্কুলে তিনজন করে শিক্ষক শিক্ষিকা থাকার কথা। তবে অবাক করার বিষয় হলো, এই ১৪০৪টি স্কুলের মধ্যেও প্রায় ৩৮ শতাংশ স্কুলে একজন শিক্ষক নেই। ফলে এই স্কুলগুলিতেও পঠনপাঠন একপ্রকার বন্ধ। এডিসি এলাকায় প্রি-প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক রয়েছেন একজন। তবে প্রি-প্রাইমারি স্কুল কোথায় রয়েছে? তা এডিসি প্রশাসনেরও জানা নেই। শুধু তাই নয়, এডিসি এলাকার ১৬১৭টি স্কুলের মধ্যে অধিকাংশ স্কুলে প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষিকা নেই। ফলে এডিসি প্রশাসন এলাকায় পাঠরত রাজ্যের প্রায় ৫৩ হাজার ৮৮৮ জন ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অন্তর্জলি যাত্রার পথে। শিক্ষা দপ্তর সূত্রে বর্তমানে এডিসি এলাকার প্রি-প্রাইমারি স্কুলে ৩৪৫ জন, জেবি স্কুলে ৪৬৫০৯ জন, এসবি স্কুলে ৬০৫৫ জন, হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে ৪৫৯ জন ছাত্রছাত্রী পঠনপাঠন করছে। তবে ৪৬৫০৯ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য এসবি স্কুল মাত্র ২১২টি। এর মধ্যে আবার ১১৮টি স্কুলে একজনও শিক্ষক নেই। আবার ৬০৫৫ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য নেই একটিও হাইস্কুল। শুধুমাত্র রয়েছে একটি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল। যার পরিণতিতে মাঝপথে বন্ধ হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন।
ফলে সহজেই অনুমেয়, রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের কী করুণ দশা ত্রিপুরা উপজাতি এলাকার স্বশাসিত জেলা পরিষদ এলাকায় চলছে। অভিযোগ, ছাত্রছাত্রীদের তরফে শিক্ষক নিয়োগ, নতুন স্কুলের সূচনা, বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনার সুযোগ প্রদান, পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি করা হলেও তাতে কর্ণপাত করা হচ্ছে না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। অবাক করার বিষয় হলো, সারা দেশের সাথে রাজ্যেও এখন নতুন জাতীয় শিক্ষা কার্যকর হয়েছে। অথচ জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী সকল ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করতে হবে। যা এডিসি এলাকায় উল্টো পথে যাচ্ছে। ফলে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।

Dainik Digital

Recent Posts

ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে ইন্ডিয়ান আইডল জয়ী পবনদীপ,অবস্থা আশঙ্কাজনক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে ইন্ডিয়ান আইডল জয়ী সিজন ১২ এর পবনদীপ রাজন ৷ উত্তর…

6 hours ago

শবরীমালা মন্দির পরিদর্শনে দ্রৌপদী মুর্মু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-আগামী ১৮ মে দু'দিনের জন্য কেরল সফরে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷ সেই…

8 hours ago

মহাকালেশ্বর মন্দিরে বীভৎস আগুন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-উজ্জ্বয়ন মহাকালেশ্বর মন্দিরে বিভীষিকাময় আগুন। মন্দিরের উপর থেকে গলগল করে নির্গত হচ্ছে কালো…

9 hours ago

হত্যা মামলায় ‘গ্রেপ্তার’ বাংলাদেশে জেলবন্দি চিন্ময় প্রভু!

অনলাইন প্রতিনিধি :-জেলবন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ওরফে চিন্ময় প্রভুকে নতুন করে আবার হত্যা…

9 hours ago

নিখোঁজ হয়ে ছিলেন কুড়ি বছরে বাড়ি ফিরে এলেন ৬৩ বছর পর!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্য থেকে প্রায় ৬৩ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন অড্রে ব্যাকেবার্গ নামে…

9 hours ago

সোলার জাগরণ চাইলেন রতন, ৭০জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বিদ্যুৎ বিক্রির অর্থ!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-ত্রিপুরার গৃহস্থালি বিদ্যুৎ গ্রাহকদের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।একদিকে যেমন বিদ্যুৎ বিল হচ্ছে…

10 hours ago