মেসভাড়ার খরচ বাঁচাতে প্লেনে করে ক্লাসে যেতেন বিল ঝৌ।
সানফ্রান্সিস্কোর বে এরিয়ার এক কামরার ফ্ল্যাটভাড়াও আগুন। অথচ, দূরের শহরে স্নাতকোত্তরে পড়ার সুযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি কোনও বাড়ি ভাড়া না করলেই নয়। কিন্তু ‘চড়া’ বাড়িভাড়ায় না থেকে বিল ঝৌ (ছবি) সপ্তাহে তিন দিন করে লস অ্যাঞ্জেলস থেকে বিমানে যাতায়াত করে ক্লাসে পৌঁছতেন। আবার বিমানেই ফিরে আসতেন লস অ্যাঞ্জেলসে, নিজের বাড়িতে। সম্প্রতি একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। তার কথায়, “হিসাব কষে দেখেছিলাম বে এরিয়ার বাড়িভাড়া করে থেকে পড়াশোনা করতে গেলে সাধ্যে কুলোবে না। বাড়িভাড়ার খরচ বাঁচাতে বিমানে চড়ে ক্লাসে যাওয়াটাই আমার শ্রেয় বলে মনে হয়েছিল।’ আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসের বাসিন্দা বিল ঝৌ। বর্তমানে তিনি লিগাল সাসটেনেবিলিটি অ্যালায়েন্স (এসএসএ) নামে আমেরিকার একটি পরিবেশরক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতা সংস্থায় ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত।গত বছর বার্কলির ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনার সুযোগ পান তিনি। এক বছর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারে বিল জানিয়েছেন, বার্কলির ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে যেতে সপ্তাহে তিন দিন বিমানে চড়তেন তিনি। ক্লাসের, শেষে আবার সে শহর ছেড়ে নিজের বাড়িতে ফেরার জন্য বিমানে উঠতেন। বিমানে করে ক্লাস করেই বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন বিল। বিমানে চড়তেও ভীষণ ভালবাসেন বিল। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন বিমান সংস্থার বিমানে চড়তেও খুব ভালবাসি। এখনও পর্যন্ত ১০০টি বিমান সংস্থার উড়ানে উঠেছি।’ প্রশ্ন হল, বিমানে চড়ে ক্লাসে যেতেন কেন? এতে কি দিনের শেষ তার খরচা আরও বাড়েনি? বিলের বক্তব্য, বাড়েনি, উল্টে সময়ের সাশ্রয় হয়েছে। বিমানে যাতায়াতের নেপথ্যে আরও একটি কারণের কথা বলতে গিয়ে বিল বলেন, ‘বার্কলির বে এরিয়ায় থাকার চড়া খরচ ছাড়া আরও একটা কারণে বিমানে যাতায়াত করতাম। দীর্ঘ দিন ধরে মনের মধ্যে একটা সুপ্ত বাসনা পোষণ করতাম যে, লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাস করব আর পড়াশোনা করতে বিমানে চড়ে অন্য শহরে যাব।’ প্রতি দিনের বদলে সপ্তাহের সোম, বুধ এবং শুক্রবার— এই তিন দিনের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসে যেতেন বিল। লস অ্যাঞ্জেলস বিমানবন্দর থেকে সান ফ্রান্সিসকোর বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিতেন তিনি। নিয়মিত বিমানে চড়ায় ‘ফ্রিকুয়েন্ট ফ্লায়ার্স মাইলস’-সহ ক্রেডিট কার্ডে যে পয়েন্টগুলি সংগ্রহ করতেন, তা দিয়েও পরে টিকিট কেটেছেন।বিমানবন্দরের কাছে মেট্রো স্টেশনের পার্কিংয়ে নিজের গাড়ি রেখে দিতেন বিল। এতে বিমানবন্দরের পার্কিংয়ের তুলনায় খরচ পড়ত কম। প্রায় এক বছর ধরে দূরের শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য মোট ২৩৮টি উড়ান ধরেছেন বিল। বিমানভাড়া মেটাতে মোট ব্যয় করেছেন ২,৪১৩ ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা ২ লক্ষ টাকারও বেশি।