মোদির সৌজন্যে ত্রিপুরায় প্রথম কেন্দ্রীয় ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট!!

 মোদির সৌজন্যে ত্রিপুরায় প্রথম কেন্দ্রীয় ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র
মোদির সৌজন্যে ত্রিপুরার উন্নয়নে শনিবার আরও একটি পালক যুক্ত হলো। ত্রিপুরা রাজ্যে এই প্রথম কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট স্থাপিত হতে যাচ্ছে বিশালগড়ের লক্ষ্মীবিলে। পঞ্চাশ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশালগড়ের পূর্ব লক্ষ্মীবিলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে প্রথম দিব্যাঙ্গদের জন্য কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি এবং ট্রাই সাইকেল সহ বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কারখানার শিলান্যাস ও ভূমিপূজন হলো শনিবার। রাজ্যের বর্তমান ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এবং বিপ্লব কুমার দেবের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী বি এল ভার্মার হাত ধরে এ দিন এই কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ভূমিপূজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।মোট পাঁচ একর জমিতে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা এলিমকো এই কারখানা গড়ে তুলবে।উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক প্রথম এই কারখানা ত্রিপুরায় স্থাপনের জন্য মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন।কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেটি বাতিল হয়ে যায়। পরবর্তীকালে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব এই ইউনিট রাজ্যে স্থাপনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেন এবং প্রকল্প মঞ্জুরও করান।এতে রাজ্য সরকার এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহাও বিশেষ আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে শনিবার রাজ্যের উন্নয়নে আরও একটি পালক যুক্ত হলো। ফলে এ দিন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বি এল ভার্মার মুখে শোনা গেলো রাজ্যের প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, তিনি যখন উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন তখন বিপ্লব দেব ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে তখন আন্তরিক ছিলেন, এখনও সাংসদ হিসাবে রাজ্যের উন্নয়নে আন্তরিক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। এলিমকো সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরও বিপ্লব দেবের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বিপ্লব দেব বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে সময়ে সময়ে খোঁজখবর নেন। শুধু তাই নয়, তিনি আন্তরিক উদ্যোগও নেন। অন্যদিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা দিব্যাঙ্গদের প্রতি রাজ্য সরকার কতটা ইতিবাচক এবং আন্তরিক তার তথ্য তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন অনুযায়ী আশি শতাংশ দিব্যাঙ্গ সার্টিফিকেট থাকলে তবেই সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। সে জায়গায় রাজ্য সরকার আশি শতাংশের গাইডলাইনকে সংশোধন করে ষাট শতাংশ করে দিয়েছে। এতে করে রাজ্যের অধিক সংখ্যক দিব্যাঙ্গজন বিভিন্ন সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকার আগামীদিনে সেই গাইডলাইনকে চল্লিশ শতাংশে নামিয়ে আনার চিন্তাভাবনা করছে। সম্প্রতি বাধারঘাট স্টেডিয়ামে এপিএল, বিপিএল অংশের তিন হাজার দিব্যাঙ্গজনকে সামাজিক ভাতার অনুমতিপত্র তুলে দেওয়ার ঘটনা তারই উদাহরণ বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকার মোট উনচল্লিশজন দিব্যাঙ্গজনকে ট্রাই-সাইকেল সহ বিভিন্ন উপকরণ তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদ সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। ভারতবর্ষে মোট আটটি এবং পুরো নর্থ-ইস্টের মধ্যে বিশালগড়ের পূর্ব লক্ষ্মীবিলে এই প্রথম দিব্যাঙ্গদের জন্য কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির কারখানা তৈরি হচ্ছে। ফলে রাজ্যের দিব্যাঙ্গরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি এলাকার বেকারদের একটা বিরাট কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। এই কারখানাকে কেন্দ্র করে এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে লক্ষ্মীবিলবাসীর ভাগ্যের চাকা ঘুরবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। এ দিন, এই প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ও আন্তরিক প্রয়াসের কারণে বিশালগড়ের লক্ষ্মীবিলের মানুষের লক্ষ্মীলাভ হতে চলেছে।এটি ত্রিপুরার উন্নয়নে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।কেননা, এই প্রথম ত্রিপুরাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট স্থাপন হতে চলেছে।এর মাধ্যমে শুধু এলাকার সার্বিক উন্নয়নই নয়,গোটা দেশেই বিশেষ করে উত্তর-পূর্বে ত্রিপুরার মর্যাদা আরও বাড়বে।দিব্যাঙ্গদের জন্য তৈরি করা কৃত্রিম অঙ্গ থেকে শুরু করে নানা সামগ্রী এখন ত্রিপুরায় এই ইউনিট থেকে গোটা উওর -পূর্বে সরবরাহ হবে। উত্তর-পূর্বের কোনও রাজ্যে যখন দিব্যাঙ্গদের জন্য এই ধরনের সামগ্রী প্রয়োজন পড়বে, তখন একই সাথে উচ্চারিত হবে ত্রিপুরার নামও। আমাদের রাজ্যে এখন এইসব সামগ্রী আনতে হয় কানপুর অথবা অন্য কোনও জায়গা থেকে।উৎপাদন শুরু হয়ে গেলে আর বাইরে থেকে আনতে হবে না। এই ইউনিটের জন্য এখন ভালো রাস্তা তৈরি হবে। লক্ষ্মীবিলে এই ইউনিটের সাথে অন্যান্য অনুযায়ী ইউনিটও গড়ে উঠবে।
এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের রোজগারের প্রচুর সুযোগ তৈরি হবে। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের এটি একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ বলে শ্রীদেব অভিমত ব্যক্ত করেন।এ দিনের এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বি এল ভার্মা, মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা,প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী টিংকু রায়, বিধায়ক সুশান্ত দেব, সিপাহিজলা জেলার সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, এলিমকোর সিএমডি প্রবীণ কুমার, সমাজ কল্যাণ দপ্তরের ডিরেক্টর তপন কুমার, জেলাশাসক সিদ্ধার্থ সিং জেসওয়াল,পুলিশ সুপার নমিত পাঠক সহ অন্যরা।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.