মোদি চ্যালেঞ্জে বিরোধী জোট।

 মোদি চ্যালেঞ্জে বিরোধী জোট।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

২০১৪ সাল থেকেই অপ্রতিরোধ্য নরেন্দ্র মোদি। লোকসভা ভোটই হোক আর রাজ্যে রাজ্যে বিধানসভা ভোটই হোক- মোদির অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটেই চলছে। কিন্তু অতি সাম্প্রতিক কালে বিজেপির এই অশ্বমেধের ঘোড়া যেন হোঁচট খাচ্ছে বারবার।হিমাচলের পর কর্ণাটক।এর আগে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লী,পাঞ্জাবে থেমেছে বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া। বিহারে বিজেপি সরকারে না এলেও জোট শরিক নীতীশের সাথে জোট বেঁধে সরকারে ছিলো বিজেপি। কিন্তু সে রাজ্যও শেষ পর্যন্ত হাতছাড়া হলো নীতীশের এক চালে।এই অবস্থায় কংগ্রেসের কর্ণাটক জয়ের পর বিরোধীরা কিছুটা হলেও টনিক পেয়েছে।তাই ২০২৪ -এ লোকসভা ভোটে মোদিকে একটা শিক্ষা দিতে আসরে নামতে চাইছে বিরোধী দলগুলি। কিন্তু বিরোধী দলগুলোর মধ্যে যে বড়ই অমিল।যেমন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, নবীন পট্টনায়েক, কে চন্দ্রশেখর রাও,ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডিরা বিরোধী শিবিরে থাকলেও কংগ্রেস বা অন্য দলগুলির সাথে তাদের মতের বড়ই অমিল।বিশেষ করে চন্দ্রশেখর রাও, ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডি, নবীন পট্টনায়েককে এখন পর্যন্ত বিরোধীদের কোন বৈঠকে অংশ নিতে দেখা যায়নি। অপরদিকে কেজরিওয়ালের সাথে আবারর কংগ্রেসের বড় অমিল। তাই বিরোধী জোট আদৌ ২০২৪ সালে কতখানি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে তা এখনই বলা খুব মুশকিল। আবার তা যদি শেষপর্যন্ত একটা রূপও নেয় তাহলেও এই জোটের মাথা কে হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ের অবকাশ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের নেতৃত্বে জোট মানতে অনেকাংশেই নারাজ। তেমন অবস্থা আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালেরও। অন্যদিকে নীতীশ কুমারও চাইছেন মনে মনে তাকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হোক। কংগ্রেস অবশ্য বলাবলি করছে যে বিরোধী যতই জোট হোক না কেন, কংগ্রেস বাদ দিয়ে কোন বিরোধী জোটই সম্ভব নয়। তাই কদিন বাদে বাদেই জোটের নেতারা এক প্রস্থ আলোচনা করেন আবার কদিন পর তা স্তিমিত হয়ে যায়। সম্প্রতি কংগ্রেসের কর্ণাটক জয়ের পর বিরোধী দলগুলি অনেকটাই উৎসাহিত। কেননা বিরোধী দলগুলি মনে করছে মোদি অপ্রতিরোধ্য— এই মিথ ঠিক নয়।তাই কর্ণাটকে বিজেপি ধাক্কা খাবার পর জোটের প্রথম ঝলক দেখা যায় কর্ণাটকে কংগ্রেস সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। যেখানে স্টালিন থেকে শুরু করে শারদ পাওয়ার, হেমন্ত সোরেন থেকে সিপিএম নেতৃত্ব, আরজেডি থেকে শুরু করে নীতীশ কুমার উপস্থিত ছিলেন।সেই মহড়ায় ছিলেন না কেজরিওয়াল, কেসিআর, জগনমোহন রেড্ডি, নবীন পট্টনায়েকের মতো বিরোধী নেতৃত্ব।এরপর দিল্লীতে গিয়ে জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার দেখা করলেন শারদ পাওয়ার। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সাথে। কেজরিওয়াল পরে ভ্রমণে বের হলো। প্রথমে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এরপর গেলেন শারদ পাওয়ারের কাছে। পরে দেখা করলেন উদ্ধব ঠাকরের সাথে। বিরোধী দলগুলির একেকজন হাঁটছেন তাদের নিজস্ব লাইনে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে, কেজরিওয়ালরা হাঁটছেন তাদের নিজস্ব লাইনে। নীতীশ কুমার হাঁটছেন তার লাইনে। অন্যদিকে চুপ নবীন পটনায়ক, কেসিআর, জগনমোহন রেড্ডিরা। ফলে বিরোধী জোট সলতে পাকানোর আগেই যেন চুপসে যাচ্ছে। এরকম অবস্থা চলতে গেলে মোদি ২০২৪ সালে ফের হেসেখেলে নির্বাচনি বৈতরনী পার করে ফেলবেন। নরেন্দ্র মোদিকে ২০২৪ সালে একটা ধাক্কা দিতে গেলে বিরোধী দলগুলির মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। মোদির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে প্রার্থী দিতে হবে। তাহলেই লড়াই হবে জবরদস্ত ৷এরই মধ্যে এবার জোট গড়তে উদ্যোগী নীতীশ কুমার। এবার নীতীশের গড়ে বিরোধী জোটের বৈঠক বসছে আগামী ২৩ জুন। কিন্তু এই বৈঠকে কোন কোন দল উপস্থিত থাকবে তার দিকে নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। কেজরিওয়াল সহ কংগ্রেস, সিপিএম, ডিএমকে এনসি, জেএমএম, তৃণমূল সব দলকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। স্বভাবতই নবীন পট্টনায়েক, কেসিআর, জগনমোহন রেড্ডিরা এই বিরোধী জোটের বৈঠক থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতে চাইবেন। ফলে বিরোধী জোট ২০২৪ সালে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদির বিপক্ষে কতখানি মজবুত হবে তা সময়ই বলবে। বিরোধী জোট মজবুত হলেই তবেই নরেন্দ্র মোদির কষ্ট হবে ২০২৪ সালে জিতে আসতে।না হলে বিরোধী অনৈক্যকে হাতিয়ার করে ফের ২0২৪ সালে মোদিই ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে। যদিও তা সময়ই বলবে। বিরোধী অনৈক্য, ঐক্যের উপরই ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদির জিতে আসা নির্ভর করছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.