মোদি ম্যাজিক !

 মোদি ম্যাজিক !
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বুধবার শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হলো কর্ণাটক বিধানসভার ভোটগ্রহণ পর্ব। ২২৪ আসন বিশিষ্ট বিধানসভার ভোটগ্রহণ এক দফাতেই শেষ হয়েছে।ভোটকে কেন্দ্র করে কোথাও কোনও অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রাজ্যে সার্বিক ভোটের হার ৬৫.৬৯ শতাংশ।বুধবার সকাল সাতটা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। এদিন সকাল ৬টা বেজে ৫৬ মিনিটে কর্ণাটকের মানুষকে গণতন্ত্রের এই মহান উৎসবে শামিল হওয়ার আবেদন জিনিয়ে ট্যুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।ট্যুইটে বিশেষভাবে আবেদন জানিয়েছেন,তরুণ প্রজন্ম ও প্রথমবারের ভোটারদের।

একইভাবে ট্যুইট করেছেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও। তিনিও গণদেবতাদের আহ্বান জানিয়েছেন গণতন্ত্রের মহান উৎসবে সকলকে শামিল হওয়ার জন্য।দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যে এবার মোট ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৩০ লক্ষ।এদের মধ্যে প্রথমবারের ভোটারের সংখ্যা ১১ লক্ষ ৭১ হাজার।মোট ভোটারদের মধ্যে ২ কোটি ৬৬ লক্ষ পুরুষ এবং ২কোটি ৬২ লক্ষ হচ্ছে মহিলা ভোটার।দক্ষিণ ভারতের এই একটি মাত্র রাজ্য কর্ণাটক,যেখানে শাসকদল হচ্ছে বিজেপি। স্বাভাবিকভাবেই টেনশন বেশি পদ্মশিবিরের। ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রচার পর্বে দফায় দফায় প্রচার সেরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি থেকে শুরু করে পদ্মশিবিরের হেভিওয়েট নেতৃত্বরা।

প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও প্রচারে ঝড় তুলেছে। প্রচারে নেমেছিলেন সোনিয়া গান্ধীও। মূলত ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে কর্ণাটকে। শাসক বিজেপির সাথে মূল লড়াই। কংগ্রেসের এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার নেতৃত্বাধীন জে ডি (এস) এর মধ্যে।২০১৮ সালে কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে ১০৪ আসনে জয়ী হয়ে বিজেপি বৃহত্তম দল হলেও ম্যাজিক ফিগার (১১৩ আসন)অর্জন করতে পারেনি। ফলে বিজেপিকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে ওই সময় ৮০ (কংগ্রেস) এবং ৩৭ জেডি (এস) আসনে জয়ী হয়ে কংগ্রেস ও জেডি(এস) একজোট হয়ে সরকার গঠন করেছিল।কিন্তু ওই জোট সরকার এক বছরও স্থায়ী হয়নি।

২০১৯ সালেই কংগ্রেস এবং জেডি(এস) থেকে প্রায় কুড়িজন বিধায়ক নিজেদের দল ত্যাগ করে যোগ দিয়েছিলো পদ্মশিবিরে।যদিও অভিযোগ ছিলো, বিধায়ক ভাঙিয়েই (ক্রয় করে) কর্ণাটকের ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি। তবে ২০১৮ সালে জনাদেশ যে বিজেপির পক্ষে ছিলো,তা কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই। বেশির ভাগ মানুষই চেয়েছিলো বিজেপি ক্ষমতায় আসুক।এরপর থেকে কর্ণাটকে পদ্মশিবিরে অনেক উত্থান-পতন হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ২০১৮-এর তুলনায় পরিস্থিতি এবার পদ্মশিবিরের জন্য অনেক বেশি প্রতিকূল।ওই রাজ্যে দলের প্রধান মুখ প্রবীণ বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে এক বছর আগে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি।

যা লাভের চাইতে বিজেপির অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।এমনকি দলের মধ্যেও এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইকে নিয়ে ভোটের আগে দলের অন্দরে অসন্তোষ এতটাই চরমে উঠে যে, একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং একজন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী দল ছেড়ে কংগ্রেসে শামিল হয়েছেন। টিকিট না পেয়ে অভিমানে বসে যান আরও এক প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী।২২৪ আসনের বিধানসভায় অন্তত ৪০টিতে বিজেপির বাগি প্রার্থী রয়েছে। এদের অনেকেই বিধায়ক এবং দলের রাজ্যস্তরের নেতৃত্ব। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের মানুষ হলেও, তাকে তারা ইয়েদুরাপ্পার মতো কদর করে না।

শুধু তাই নয়,বাসবরাজ সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তে বিজেপির উপর বেজায় ক্ষুব্ধ প্রভাবশালী আরও এক সম্প্রদায়।এরা হলো ভোক্কালিগা সম্প্রদায়।কর্ণাটকে যাদের প্রভাব লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের পরেই বলে মনে করা হয়। ফলে মোদি-শাহকে অন্য রাজ্যের মতো শুধু প্রচারে নামতে হয়েছে তাই-ই নয়।রীতিমতো ক্যাম্প করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।ফলে চ্যালেঞ্জ যে অনেক বেশি কঠিন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তথ্য বলছে,গত ৩৮ বছরে কর্ণাটকে কোনও দলই দ্বিতীয়বার ক্ষমতা দখল করতে পারেনি।এবার কি ব্যতিক্রম ঘটবে ?মোদি ম্যাজিক’ কতটা কাজ করলো জানা যাবে ১৩ মে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.