মোবাইলে কড়াকড়ি মহিলা কলেজে!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- কানে ফোন ঠেকিয়ে অনর্গল বকবক করতে করতেই ঢুকে পড়লাম কলেজ চত্বরে। কখনও আবার হাতের তালুতে রেখে দুরন্ত গতিতে চলছে টাইপিং।প্রায় সবকটি কলেজের মতো বনেদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেও যেখানে এই অভ্যেসটিকেই বগলদাবা করে চলছিল ছাত্রীরা, সেখানে শুক্রবার আর তা দেখা গেলো না। বৃহস্পতিবারের এক কড়া নোটিশে এতটুকু হলেও ছবি পাল্টেছে মহিলা মহাবিদ্যালয়ের।
বছর কয়েক ধরে একদিকে যেমন ছাত্রীদের মধ্যে বেড়েই চলছিল মোবাইল আসক্তি,তেমনি বেড়ে চলছিল নিজেকে নিয়ে মগ্ন থাকার মানসিকতাও।কলেজ জীবনে বিশেষ করে শিক্ষা নিতে গিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে যা কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না বলে মনে করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অবশেষে আত্মকেন্দ্রিকতা থেকে ছাত্রীদের বাস্তব জীবনে ফিরিয়ে আনতে কড়া নির্দেশ জারি করতে বাধ্য হলেন কলেজের অধ্যক্ষ ইনচার্জ শর্বরী নাথ।এক নোটিশে তিনি স্পষ্টভাবে বেশ ক’টি জায়গার উল্লেখ করে এগুলিকে ‘মোবাইল ফ্রি জোন’ বলে জানিয়ে দেন।পরে শুক্রবারই এর দারুণ প্রভাব লক্ষ্য করা গিয়েছে কলেজ চত্বরে।
অধ্যক্ষ ইনচার্জ শর্বরী নাথ বললেন, দিনের পর দিন অবস্থাটা এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকছিল যেন কেউ ডাকলেও শুনতে পাচ্ছিল না তারা। সামনে দিয়ে স্যার- ম্যাডাম যাচ্ছে, না অন্য কেউ তাতেও যেন বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের। ভবিষ্যতের জন্য এটি সত্যিই মন্দ ছাড়া ভালো কোনও লক্ষণই নয়। আমরা চাই কলেজে একটা জীবন্ত পরিবেশ বজায় থাকুক। আত্মকেন্দ্রিকতা ছেড়ে তারা একে অপরের ভালো-মন্দ সবেতেই এগিয়ে আসুক।এই অভ্যাসটা যদি এখন থেকে তৈরি না হয় তাদের মধ্যে তবে সামনে কেউ বিপদে পড়লে ভুল করেও ফিরে তাকাতে দেখা যাবে না।এমন পরিবেশে বেড়ে ওঠাটা সত্যিই দুঃখের।
বুঝে হোক কিংবা না বুঝেই হোক, শুক্রবার কলেজ চত্বরে যখন একের পর এক ছাত্রীরা ঢুকতে থাকে তখন অবশ্য চলে আসা প্রতিদিনকার ছবিটা একেবারেই উধাও।উল্টো একজন আরেকজনকে বলছেন, মোবাইলটা ব্যাগে ঢোকা আগে। জিজ্ঞেস করতেই বলছে, নিষেধাজ্ঞা আছে কলেজের। অভ্যেসের ফোনটা এভাবে হাত থেকে রাখতে মন না চাইলেও উদ্যোগটা যে সত্যিই দারুণ তা কিন্তু মানছেন তারাও। অধ্যক্ষা ইনচার্জ শবরী নাথ বললেন, নোটিশে এখন থেকে কলেজ প্লে গ্রাউন্ডের রেলিং, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিল্ডিংয়ের সামনে এমনকী এখান থেকে সায়েন্স বিল্ডিংয়ে যাবার রাস্তাটিকেও আমরা মোবাইল ফ্রি জোনে রাখছি।