ম্যাচ ড্র, হারলেন নাড্ডা!

 ম্যাচ ড্র, হারলেন নাড্ডা!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

জাতীয় রাজনীতিতে একটা কথা খুব চালু রয়েছে।বিশেষ করে ২০১৪ সালের পর থেকে এই কথার প্রচলন সব থেকে বেশি বেড়েছে।কথাটি হলো,গড়া সরকার ফেলে দেওয়ার ব্যাপারে বিজেপি’র সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অমিত শাহের জুরি নেই।আরও একটু স্পস্ট করে বললে অমিত শাহ কিংবদন্তীর মতো।আর এই ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছে কংগ্রেস।খুব বেশি পিছনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।গত এক থেকে দেড় বছরের পরিসংখ্যান দেখলেই বিষয়টি স্পস্ট হয়ে যাবে।এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে, তখন হাইপ্রোফাইল দুই রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল অনেকটাই স্পস্ট হয়ে গেছে।গুজরাটে বিজেপি যে সপ্তমবার ক্ষমতায় ফিরবে, সেটা কমবেশি সকলেরই জানা ছিল।

নজর ছিলো দু’টি বিষয়ের দিকে। এক, বিজেপি’র ঘোষণা মতো ১৫০ আসনে পৌঁছাতে পারে কিনা ? দুই, আম আদমি পার্টি নাকি কংগ্রেস,দ্বিতীয় স্থানে কে শেষ করে?ফলাফলের পর দেখা যাচ্ছে বিজেপি দেড়শো আসন পেরিয়ে গেছে।আর কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থান কোনওরকমে ধরে রাখতে পারলেও,ভোট শতাংশ এবং আসনসংখ্যা দুটিতেই বড় ধরনের ধস নেমেছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই গুজরাটে দলের এই বিরাট পরাজয়ের জন্য দায়ী করছে আম আদমি পার্টিকে।তাদের বক্তব্য, বিজেপির ‘বি’ টিমই গুজরাটে বিজেপি’র ‘এ টিমকে জিতিয়ে দিয়েছে।আদতে গুজরাটে বিজেপি’র এই বিরাট জয়ের জন্য আপ এবং কংগ্রেসের ভোট কাটাকাটিই কি একমাত্র কারণ?

না, এমনটা ভাবলে বোধহয় ভুল হবে।ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে,কংগ্রেসের এই ভরাডুবির জন্য অনেকাংশে কংগ্রেস নিজেরাই দায়ী।তাছাড়া, টানা সাতাশ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা কাটিয়ে ওঠার কৃতিত্বও বিজেপি’র কম নয়।অপরদিকে,হিমাচলে সরকার গড়ার পরিস্থিতি তৈরি হওয়া সত্ত্বেও, বিজয় উল্লাসের পরিবর্তে দুঃশ্চিন্তা ভর করে বসেছে কংগ্রেসকে।কারণ,এই প্রতিবেদনের শুরুতেই উল্লেখ করেছি।হিমাচলে বিধানসভার মোট আসন ৬৮টি।ম্যাজিক ফিগার হচ্ছে ৩৫।বিকাল পর্যন্ত যে আভাস পাওয়া গেছে,তাতে কংগ্রেস জয়ী হতে পারে ৩৯টি আসনে। বিজেপি ২৬ টি এবং নির্দল ৩টি আসনে জয়ী হতে পারে।

কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে ভোট প্রাপ্তির শতকরা হারে সামান্য মাত্র ফারাক।এক শতাংশ থেকেও কম।উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, হিমাচলে যে তিনজন নির্দল প্রার্থী জয়ী হয়েছে ওই তিনজনই বিজেপি’র বিক্ষুব্ধ প্রার্থী।স্বাভাবিকভাবেই এরা বিজেপি দলেই শামিল হবে এবং দল তাদের প্রয়োজনে ফিরিয়েও নেবে এমন ধারণা অমূলক নয়। তাহলে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ২৯শে। যদি এই পরিসংখ্যানই শেষ পর্যন্ত থাকে।খবরে প্রকাশ, হিমাচল নিয়ে ইতিমধ্যে ‘অপারেশন লোটাস’ শুরু হয়ে গেছে।আর এখানেই দুশ্চিন্তা বেড়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বের। জয়ী বিধায়কদের একসাথে ধরে রাখা যাবে তো? তাই ঝুঁকি নিতে চাইছে না কংগ্রেস।

বারবেলাতেই অন্য পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। হিমাচলের জয়ী বিধায়কদের চন্ডীগড় হয়ে ছত্তিশগড় নিয়ে যাবে বলে খবর।সেখানে ক্যাম্প করে রাখা হবে তাঁদের। তারপর শপথ গ্রহণের দিন ঠিক হলে সেদিন সোজা সিমলায় নিয়ে আসা হবে।তারপরও ধরে রাখা গেলে মঙ্গল।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হিমাচল প্রদেশ বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডার নিজের রাজ্য। সভাপতির রাজ্যেই বিজেপি পরাজিত হয়েছে।বিজেপি’র হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস।

অন্যদিকে মোদি-অমিত শাহের রাজ্য গুজরাটে হই হই করে আরও বেশি ভোটে,বেশি আসনে জয়লাভ করেছে বিজেপি। স্বাভাবিকভাবেই সভাপতির রাজ্যে দলের পরাজয় দলের কাছে যেমন অস্বস্তির হয়ে দাঁড়িয়েছে, তেমনি সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছেও আত্মসম্মানহানীর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী বছর একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গুজরাট ও হিমাচলের ফলাফলের কোনও প্রভাব আগামী ভোটগুলিতে পড়বে কিনা?সেটা অবশ্য সময়ই বলবে।তবে একটা কথা বলতেই হবে,দুই রাজ্যের ভোটের ফলাফল ড্র হলেও, নাড্ডা কিন্তু হারলেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.