ময়নাতদন্তের মৃতদেহ নিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পরিবার!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের স্টেট সিভিল রেফারেল হাসপাতাল আইজিএমের চিকিৎসা পরিষেবার অপ্রতুলতায় যে রোগীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তাই নয়, হাসপাতালে মৃত্যুর পরও মৃতদেহ নিয়ে চরম ভোগান্তি হচ্ছে। কোনও ঘটনা-দুর্ঘটনায় যেসব রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন সেইসব রোগীর মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ পরিবারের প্রিয়জনের হাতে দেওয়া হয় না। অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করতে হয়। পুলিশে মামলা হয়। সেই সব রোগীর মৃতদেহ পুলিশের তত্ত্বাবধানে মর্গে রাখা হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতিক্রমে ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেন। অথচ বিস্ময়কর ব্যাপার হলো আইজিএম হাসপাতালে খুব গুরুত্বপূর্ণবিভাগ মৃতদেহ রাখার জন্য কোনও মর্গ নেই। ফরেন্সিক বিভাগ নেই। ফলে
হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনার আগে রাস্তায় যদি কোনও রোগীর মৃত্যু হয় সেই মৃতদেহ জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নিয়ে রাখার জন্য হাসপাতালের রিক্যুজিশনে লিখে দেন। জরুরি বিভাগ থেকে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশকেও জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আইজিএমে মৃতদেহ রাখার জন্য কোনও মর্গ না থাকায় পুলিশের তত্ত্বাবধানে মৃতার প্রিয়জনরা মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জিবি হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যান বহু বছর আগে আইজিএমে মৃতদেহ রাখার জন্য মর্গ ছিল। তারপর মর্গ উঠিয়ে দেয়। অনেক বছর ধরেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মৃতদেহ বা কোনও ঘটনা-দুর্ঘটনায় চিকিৎসাধীন
হাসপাতালে মৃত্যু হলে মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য আইজিএম থেকে মৃতদেহ জিবি হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আইজিএমে মৃতদেহ রাখার মর্গ না থাকায় রোগীর মৃত্যুর পর মৃতদেহ নিয়ে শোকাহত প্রিয়জনেরা এক অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ছেন। এমনিতেই পরিবারের প্রিয়জনের অকাল মৃত্যুতে পরিবার ও আত্মীয়রা শোক-দুঃখে কাতুর। তারমধ্যে রাজ্যের সরকারী স্টেট সিভিল রেফারেল হাসপাতালের মর্গ না থাকায় চরম অব্যবস্থায় মৃতদেহ নিয়ে আবার পরছেন মারাত্মক বিপাকে। রোগীর মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে পশ্চিম থানা ও মহিলা থানায় ফোন করে মৃতদেহ জিবি মর্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হলেও পুলিশের দেখা নেই। ফলে পুলিশের জন্য পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রা মৃতদেহ নিয়ে হাসপাতালে দীর্ঘ সময় কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। গত মঙ্গলবার রাতেও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক মৃতদেহ নিয়ে রোগীর আত্মীয়রা রাতভর অপেক্ষায় থাকার পর পরদিন অনেক বেলাতে হাসপাতালে পুলিশ ছুটে আসে। কল্পনা দত্ত (৬৫) নামের এক অসুস্থ মহিলা রোগীকে অরুন্ধতীনগর গুঞ্জরিয়া টিলা এলাকা থেকে গাড়ি করে আইজিএমের জরুরি চিকিৎসা বিভাগে আনার পথে রাস্তায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃতদেহ পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা দেন। জরুরি বিভাগে আনার আগে রাস্তায় মৃত্যু হওয়ায় হাসপাতাল থেকে শোকাহত পরিবারকে জানানো হয় মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করার জন্য জিবিতে নিয়ে যেতে হবে। পুলিশ এলে পুলিশের তত্ত্বাবধানে পরিবারের লোকেরা নিজ খরচায় গাড়ি ভাড়া করে মৃতদেহ জিবির মর্গে নিয়ে যেতে হবে বলে জরুরি চিকিৎসা বিভাগ থেকে বলে দেওয়া হয়। কিন্তু অত্যন্ত অমানবিক ব্যাপার হলো * কল্পনা দত্তকে জরুরি চিকিৎসা বিভাগে মঙ্গলবার রাত বারোটা নাগাদ আনার পর চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করার পর জিবিতে মৃতদেহ মর্গে নেওয়ার জন্য মৃতদেহ নিয়ে শোকাহত পরিবার নয় ঘণ্টার উপর অপেক্ষা করতে হচ্ছে। রাতভর টলিতে মৃতদেহ জরুরি বিভাগের প্রধান গেটের সামনে বারান্দার করিডোরে রেখে শোকাহত পরিবার ও আত্মীয়রা পুলিশের অপেক্ষায় থেকে উপস্থিত সকলেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। কিন্তু পশ্চিম মহিলা থানার পুলিশকে হাসপাতাল থেকে রাত বারোটায় জানানো হলেও সেই পুলিশ পরদিন বুধবার সকাল সাড়ে নয়টা নাগাদ আসে। তখন পুলিশের উপস্থিতিতে মৃতদেহ গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যান জিবি মর্গে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে প্রায় প্রতিদিনই ময়নাতদন্তের প্রয়োজন পড়লে জিবিতে মৃতদেহ নিতে গিয়ে শোকাহত মৃতার পরিবার ও আত্মীয়দের পুলিশের অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় মৃতদেহ নিয়ে হাসপাতালে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো হাসপাতালের তরফে জিবি মর্গে মৃতদেহ ৪) নিতে কোনও সহযোগিতা যেমন করা হচ্ছে না তেমনি হাসপাতাল থেকে কোনও গাড়িও দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যের বহু প্রাচীন আইজিএম তথা স্টেট হাসপাতালের চরম অব্যবস্থায় সকলেই হতবাক অমানবিকতার আর কোনও সংজ্ঞা আছে কিনা তা নিয়েও হাসপাতালে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু সব কিছু জেনে শুনেও রাজ্য সরকার হাসপাতাল অথরিটি, স্বাস্থ্য দপ্তর যেন ঠুটো জগন্নাথ হয়ে বসে রয়েছে। স্টো হাসপাতালের স্টেটাস অনুযায়ী মৃতদেহ রাখার জন্য মর্গ রাখা বাধ্যতামূলক ময়নাতদন্তের জন্য ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ চালু রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু তারপরও রাজ্য সরকার, স্বাস্থ্য দপ্তর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ব্যবস্থা আইজিএে চালু না করায় মৃতদেহ নিয়ে প্রতিদিন অবর্ননীয় দুর্ভোগ যন্ত্রণায় পড়ছে শোকাহতরা।

Dainik Digital

Recent Posts

খুশির ঈদ উদযাপন

অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…

15 hours ago

সাব ইনস্পেক্টর অব এক্সাইজ নিয়োগে, সরকারের নিয়োগনীতি কার্যকর করছে না টিপিএসসি, ক্ষুব্ধ বেকাররা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০১৮ সালে নতুন নিয়োগনীতি চালু করেছে রাজ্য সরকার। ২০১৯ সাল থেকে রাজ্য সরকারের…

16 hours ago

কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপক প্রচার সত্ত্বেও,হাসপাতালে জনঔষধির সস্তা ওষুধ সংকটে রোগীরা বঞ্চিত!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-কেন্দ্রীয় সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সস্তায় ভালো গুণমানসম্পন্ন জনঔষধি তথা জেনারিক মেডিসিন…

16 hours ago

শান্তিরবাজারে ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন জগন্নাথ পাড়া!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-শান্তিরবাজারে সিনিয়র টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হলো জগন্নাথপাড়া প্লে সেন্টার টিম। রবিবার বাইখোড়া ইংলিশ…

16 hours ago

বামফ্রন্টের রেখে যাওয়া ১২,৯০৩ কোটি সহ,রাজ্যে বর্তমানে ঋণের পরিমাণ ২১,৮৭৮ কোটি টাকা: অর্থমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৩-২৪ অর্থ বছর পর্যন্ত রাজ্য সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২১.৮৭৮ কোটি…

17 hours ago

ক্রাইম ব্রাঞ্চের শক্তিবৃদ্ধিতে গুচ্ছ পদক্ষেপ : মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বিগত ছয় মাসে ত্রিপুরা পুলিশ ক্রাইম ব্রাঞ্চকে ২২টি মামলা হস্তান্তর করা হয়েছে।২০২৪ সালের…

18 hours ago