যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিলেন তেইশের তরুণী।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

কথায় বলে, যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ।কিন্তু বিরামহীন শারীরিক যন্ত্রণা থেকে চিরমুক্তি পেতে জীবনের সব আশা ত্যাগ করে স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করলেন মাত্র তেইশ বছরের এক তরুণী। দৃপ্ত তারুণ্যে ভর করে যে বয়সে মানুষ রঙিন জীবনের স্বপ্নে বিভোর থাকে, সেই বয়সে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নেওয়া সহজ ব্যাপার নয়। এই তরুণীর নাম লিলি তাই।’ থাকতেন দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায়। অনেক দিন ধরেই লিলি হাঁটাচলা, করতে পারতেন না। কিছু খেতে গেলেই অসুস্থবোধ করতেন। শরীর জুড়ে অসহ্য যন্ত্রণা ছিল তার সর্বক্ষণের সঙ্গী গত কয়েক বছর ধরে ছিলেন হাসপাতালে শয্যাশায়ী। অসহনীয় শারীরিক যন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি পেতে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেন লিলি। গত সপ্তাহে হাসপাতাল থেকেই আইনি কাগজপত্রে তিনি স্বাক্ষর করেন। তার ইচ্ছা অনুযায়ী নিষ্কৃতি মৃত্যু দেওয়া হয়েছে লিলিকে। মাত্র ১০, সেকেন্ডেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তেইশের লিলি। জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টায় তাকে ঘিরে সংবাদমাধ্যমের তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। হাসপাতালে তার রোজনামচার খুঁটিনাটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্বের নানা সংবাদমাধ্যম। দক্ষিণ অ্যাডিলেডের ফ্লিন্ডার্স মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসাধীন লিলি অটো- ইমিউন অটোনমিক গ্যাগ্নিয়োনোপ্যাথি (এএজি)-র সমস্যায় ভুগছিলেন। এই সমস্যায় ধীরে ধীরে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন রোগী। হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরে মারাত্মক যন্ত্রণা হতে থাকে। রোগীর স্নায়ুতন্ত্রকে আঘাত করে এই রোগ। ব্যথা উপশমের জন্য লিলিকে অ্যাডিলেডের হাসপাতালে প্যালিয়েটিভ, কেয়ারে রাখা হয়েছিল।তবে তাতে অবস্থার উন্নতি হয়নি। দিন যত গড়িয়েছে তত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য আবেদন করার পর সাংবাদিকরা তার কাছে এর কারণ জানতে চেয়েছিলেন। উত্তরে লিলি বলেন, ‘এই যন্ত্রণা এতটাই অসহ্য যে, বেঁচে থাকার কোনও অর্থ নেই। তা ছাড়া, নিজের হাতেই নিজেকে শেষ করতে চাই আমি।’ জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টায় নিজের কয়েকটি সাধপূরণ করতে চেয়েছিলেন লিলি। তার মধ্যে ছিল সমুদ্রতটে ঘোরা। লিলির সে সাধপূরণে বাধা দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের বিছানায় শুইয়েই লিলিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সমুদ্রের ধারে। বিছানায় শুয়েই সমুদ্রের অগুনতি ঢেউয়ের দিকে তাকিয়ে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খেয়েছিলেন লিলি। নরম পানীয়ের স্বাদও নিয়েছিলেন। সে ছবিও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে ছাপা হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘ডেলি মেল’ লিখেছে, লিলির দেহে সমস্যার সূত্রপাত কিশোরী অবস্থায়। ১৭ বছর বয়সে ইলার্স ড্যানলোস সিনড্রোম (ইডিএস) ধরা পড়েছিল তার। তাতে ত্বক অতিরিক্ত নমনীয় হওয়া থেকে অস্থিসংযোগগুলি অতিরিক্ত মাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়ে। রক্তনালিতেও সমস্যা দেখা দেয়।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে মৃত্যু ঢাকুরিয়ার যাত্রীর!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-হাওড়া থেকে পুরী যাচ্ছিলেন ঢাকুরিয়ার হিমাদ্রি ভৌমিক (বয়স ৫৭)। পথেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে…

3 hours ago

পাকিস্তানে ৪৮ ঘণ্টায় ২০ বার ভূকম্প!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রবিবার রাত থেকে কুড়িবার কেঁপে উঠে পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচি। রিখটার স্কেলে কম্পনের…

3 hours ago

ভয়াবহ বন্যায় ১৪ জনের মৃত্যু অসমে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বন্যায় ভয়াবহ অবস্থা উত্তর-পূর্ব ভারতে। টানা বৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত অসম। সূত্রে খবর, ভয়াবহ…

4 hours ago

কুম্ভে মৃ*ত্যু হয়েছিল ৫০–৬০ জনের’ পদপিষ্টে ১১ জনের মৃ*ত্যুর পর সিদ্দারামাইয়ার বক্তব্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পদপিষ্টে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনাতে কর্নাটকে কংগ্রেস সরকারের দিকে তোপ দেগে দিয়েছেন বিজেপি।…

6 hours ago

পদপিষ্টে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ্যের আর্থিক সাহায্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বুধবার বেঙ্গালুরুতে আরসিবি টিমের বিজয়োৎসব চলছিল স্টেডিয়ামের ভেতরে। সেই অনুষ্ঠান উপভোগ করতে আরসিবি…

6 hours ago

আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নে লন্ডনে মৌ স্বাক্ষর: প্রদ্যোত!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের উপজাতি জনসমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে ভারত সরকার। দেশের সরকারের নির্দেশিত…

6 hours ago