Categories: Uncategorized

যাদুকর মোদি!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

দলের একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে যাত্রা শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ পদে আসীন হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।তাঁর সাফল্যের এই জার্নি নানা বৈচিএে ভরা। অথচ শুরুটা হয়েছিল একেবারে সাদামাটা।সংঘ পরিবারের (আর এস এস) তাঁর প্রথম কাজই ছিল আমেদাবাদে সংঘের সদর দপ্তরে মেঝ পরিষ্কার করা। শুধু তাই নয়, যেখানে সকালে দুধ আনা থেকে শুরু করে, অফিস চত্বর সাফসুতরো রাখা।এমনকি পরম ভক্তি ভরে তিনি দলের বরিষ্ঠ প্রচারকদের জামা কাপড়ও কেচে দিতেন।যখন যেখানেই সংঘ নেতৃত্বে তাঁকে কাজে লাগিয়েছে,যে অঞ্চলের পাঠিয়েছে, সেখানেই তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করে গেছেন।তাঁর কাজ ও নিষ্ঠা সবসময়ই সংঘ নেতৃত্বের প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে যেত।
এইভাবেই চলতে চলতে ১৯৮৭ সালে সংঘ নেতৃত্বের নির্দেশে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে বিজেপিতে যোগ দেন নরেন্দ্র মোদি।সেই শুরু, তারপর আর পিছনে ফিরে তাকানোর কোনও অবকাশ নেই।একের পর এক নির্বাচনে জয়ী হলেন তিনি এবং দলের অন্যদেরও নির্বাচনে জিততে সাহায্য করলেন।১৯৮৭ সালে বিজেপিতে যোগদানের পর ওই বছরই আমেদবাদে পৌর নির্বাচনে উত্তীর্ণ হওয়া ছিল নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক জীবনে প্রথম পরীক্ষা।এরপর থেকে গুজরাটের সাবরমতী দিয়ে বহু জল গড়িয়ে গেছে। নানা রাজনৈতিক ঘটনাবলির মধ্যে গুজরাটে কংগ্রেসকে পরাজিত করে ক্ষমতায় আসে বিজেপি।কিন্তু দলের অন্দরে নানা অশান্তি,একাংশের বিশ্বাসঘাতকতা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা এবং কচ্ছের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ত্রাণে দুর্নীতি ইত্যাদি নানা কারণে জর্জরিত বিজেপি সরকার। ঠিক ওই কঠিন পরিস্থিতিতে ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর নরেন্দ্র মোদিকে নির্দেশ দেওয়া হলো গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করার জন্য।যে মানুষটি কোনদিন ক্ষমতা বা গুরুদায়িত্বের কল্পনাও করেননি, তাঁর উপরেই ওই গুরুদায়িত্ব সঁপে দেওয়া হলো।উদ্দেশ্যে ছিলো, গুজরাটে বিপর্যস্ত বিজেপি সরকারের সম্মান রক্ষা ও মর্যাদা বৃদ্ধি।নামটা যখন মোদি,তখন তিনি উপলব্ধি করলেন এইভাবে চলবে না। দলের এবং সরকারের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে হলে তাঁকে কিছু না কিছু করতেই হবে।যেমন ভাবা,তেমনই কাজ করলেন।মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেই ভেঙে দিলেন বিধানসভা।নতুন করে নির্বাচনের জন্য আর্জি জানালেন।২০০২ সালের ডিসেম্বর নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষিত হলো।নির্বাচনি প্রচারে দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে উঠলেন নরেন্দ্র মোদি। রাজনৈতিক বিশেজ্ঞরা সেই সময় কংগ্রেসের পক্ষে অনুকূল পরিবেশ বলে মত প্রকাশ করেছিলেন।কিন্তু মোদির কঠোর পরিশ্রম, উন্নয়নের এক নতুন দিশা নিয়ে সেই সময় সারা রাজ্যে চষে বেড়ালেন মোদি। মানুষের মধ্যে জাগিয়ে তুললেন আশার আলো। সমস্ত হিসেব নিকেষ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভবিষ্যৎবাণী, সব কিছুকে ভুল প্রমাণিত করলেন মোদি। ৪৯.৮৫ শতাংশ ভোট পেয়ে মোদির নেতৃত্বে বিজেপি গুজরাট দখল করলো ১২৭ টি আসন।কংগ্রেসকে সন্তুষ্ট থাকতে হলো ৫১ টি আসন নিয়ে।তারপরের ইতিহাস সকলের জানা। ২০০১ থেকে ২০১৩, এই কটি’ বছরে গুজরাটকে নিয়ে গেছেন উন্নয়নের শিখরে।স্বচ্ছ ও উন্নয়নমুখী সরকার হিসাবে গুজরাটকে তুলে ধরেছেন গোটা দেশের সামনে। ‘গুজরাট মডেল’-যার প্রচার প্রসার দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌছে গিয়েছিলো।
২০১৪সালে লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে বিজেপির পক্ষ থেকে মনোনীত করা হয় নরেন্দ্র মোদিকে। গত দশ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর এখন ২০২৪। তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়ে গোটা দেশ চষে বেড়াচ্ছেন।২০০১ সালে সংসদীয় রাজনীতিতে তিনি যে পথ চলা শুরু করেছিলেন, সেই পথে আজও তিনি অবিচল।আজ সারা বিশ্বের কাছেই একথা অজানা নয় যে, নরেন্দ্র মোদি হলেন এক সচল ও সফল ব্যক্তিত্ব।সুদক্ষ সংগঠক হিসাবে খ্যাতি অর্জনের আগে যেখানেই তিনি কাজ করে এসেছেন, কোনও এক যাদুস্পর্শে যেখানে রচিত হয়েছে বিজেপির সাফল্যের এক কাহিনি।যাদুকরের মতোই যাঁর রয়েছে এক বিশেষ ক্ষমতা।দলের কার্যালয় সাফাই থেকে শুরু করে, পঞ্চায়েত, রাজ্য এবং সদসীয় নির্বাচনে, দলীয় সংগঠনে, যে দায়িত্ব তিনি সামলেছেন, তাতেই সাফল্য এসেছে।ফলে তিনিই হয়ে উঠেছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, দলের নক্ষত্র।কিন্তু মোদির কথায়, ‘ভারতবাসীর মধ্যে আশার আলো জাগিয়ে তুলতেই বিজেপির যাত্রা শুরু হয়েছে। দল আজ যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছে তা শুধু মাত্র ব্যক্তি বিশেষের কারণেই নয়, বরং বহু প্রজন্ম ধরে কার্যকর্তাদের কঠোর শ্রম এবং আত্মোৎসর্গের মধ্যে দিয়ে। কারণ আমরা মনে করি যে দলের উর্ধ্বে হলো দেশ তথা জাতি।এই মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়েই বিজেপি যার যাত্রাকে অব্যাহত রাখবে।’ ফলে আজ বলতে কোনও দ্বিধা নেই, বিজেপির সাংগঠনিক ইতিহাসে ‘যাদুকর’ হিসাবে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে শুধু একটিই নাম, সেটি হলো নরেন্দ্র মোদি।তবে গণতন্ত্রে জনতাই শেষ কথা বলে। আজ যে রাজাধিরাজ,কাল সে ফকির হবে না?কে বলতে পারে।কিন্তু মোদি নিজেকে প্রমাণ করেছেন যে তিনি একজন সফল নেতা।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

এ কে-৪৭ ও প্রচুর কার্তুজ সহ ৬ বৈরী ধৃত মিজোরামে, চাঞ্চল্য!!

অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…

4 hours ago

ফাইফরমাশ খাটছেন টিএসআর জওয়ানরা !!

অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…

4 hours ago

ইন্ডিগো আরও একটি দিল্লীর বিমান চালু করছে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…

4 hours ago

ইন্দ্রপ্রস্থে ভোট!!

দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…

4 hours ago

বহিঃরাজ্যে গেল “ধানি লঙ্কা”ওরফে ধান্না মরিচ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…

1 day ago

কুম্ভ ইকনমি

২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…

1 day ago