যুদ্ধের জেরে গাজায় বিচ্ছিন্ন নবদম্পতি
অনলাইন প্রতিনিধি :- যুদ্ধ কতকিছুই যে কেড়ে নেয়। মায়ের কোল থেকে সন্তান, স্ত্রীর বাহুডোর থেকে স্বামী, বন্ধুর পাশ থেকে বন্ধু। এছাড়া ঘরবাড়ি, ধনসম্পত্তি তো আছেই। ” ছিল গত ৭ অক্টোবর গাজা সীমান্তে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই একের পর বিচ্ছেদের খবর প্রতিদিন সামনে আসছে। আগে জানা গেছিল, বিয়ে চূড়ান্ত হয়ে গেলেও যুদ্ধের জেরে ইতিমধ্যে ভেস্তে গেছে একাধিক বহু সম্পর্কের সুতো। এবার সামনে এল, যুদ্ধের জেরে সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন। স্ত্রী জর্ডানের নাগরিক, আর স্বামী প্যালেস্টাইনের। কিছুদিন আগেই বিয়ে হয়েছিল তাদের। কিন্তু গাজায় ইজরায়েলের অবিরাম বিমান হামলার জেরে তাদের বাধ্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে হয়েছে। ইরানের রাফা সীমান্ত দিয়ে জোর করে স্ত্রীকে গাজা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। দুঃখের কথা হল, স্ত্রী
রাফা সীমান্ত পাড়ি দিতে পারলেও স্বামী দেশ ছাড়ার অনুমতি পাননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আল-জাজিরার আরবি ভাষার সংস্করণের কর্মীরা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এতে দেখা গেছে, রাফা সীমান্তে আলাদা হয়ে যাওয়ার সময় এই নবদম্পতি কাঁদতে কাঁদতে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে বিদায় জানাচ্ছেন।
এর আগে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জর্ডানি স্ত্রীকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মিশরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর তার ফিলিস্তিনি স্বামীকে গাজাতেই থেকে যেতে হবে। সংক্ষিপ্ত এক সাক্ষাৎকারে ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে রাফা সীমান্তে গেছিলেন। স্ত্রী যেন নিরাপদে সীমান্ত পার হতে পারেন, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন তিনি। ফিলিস্তিনি ওই নাগরিক আক্ষেপকরে বলেন, “আমার একমাত্র অপরাধ হল আমি ফিলিস্তিনি।’ গাজার দক্ষিণে রাফা ক্রসিং তথা সীমান্ত অবস্থিত। গাজা ও মিশরের মধ্যকার একমাত্র সীমান্ত পারাপার পয়েন্ট এটি। গত ৭ অক্টোবর হামাস- ইজরায়েল সংঘাত শুরুর পরে বুধবার প্রথম সাধারণ নাগরিকদের জন্য রাফা সীমান্ত খুলে দেয় মিশর। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে বেশ কিছু দিন রাফা সীমান্ত বন্ধ রেখেছিল মিশর। মিশর প্রশাসনের আশঙ্কা ছিল, সীমান্তের দরজা খুলে দেওয়া হলে প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সদস্যরা ইজরায়েলি হানা থেকে রক্ষা পেতে তাদের দেশে এসে আশ্রয় নিতে পারেন। পরে যদিও গাজায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য নিয়ন্ত্রিত ভাবে সীমান্তের দরজা খুলেছিল মিশর। এ বার মানুষের যাতাযাতের জন্যও সীমিত ভাবে রাফা সীমান্ত খুলেছে নীলনদের দেশ।