রক্তশূন্য উত্তর জেলা, বেখবর সরকার।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-উত্তর জেলার ব্লাড ব্যাংকে রক্ত নেই। জীবন দায়ী রক্ত সংকটে জেরবার রোগীর আত্মীয় স্বজনরা। মহকুমার উড়িছড়া গ্রামের সাজনবর্তী রিয়াং (২৫) নামে কাঞ্চনপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন হয়ে উঠে। কিন্তু কাঞ্চনপুর মহকুমা হাসপাতালে তো দূরের কথা উত্তর জেলার ধর্মনগর ব্লাড ব্যাংকে রক্ত নেই। ফলে মুমূর্ষু ওই রোগীকে হাসপাতাল থেকে বিনা চিকিৎসায় বাড়ি নিয়ে যেতে বাধ্য হলো রোগীর পরিবার।জীবন দায়ী রক্তের জন্য হাহাকার সর্বত্র।
মুমূর্ষু রোগীর জীবন রক্ষায় এবং রাজ্যে রক্তের সংকট মেটাতে রক্তদানের মতো মহৎ দানের আর কোনও বিকল্প নেই। গরিব অসুস্থ মানুষ যাতে রক্তের জন্য সমস্যায় না পড়ে তার জন্য সবাইকে সেচ্ছায় রক্তদানে এগিয়ে আসার জন্য নেতা মন্ত্রীরা আহ্বান জানিয়ে রক্তদান কর্মসূচি করেন কিন্তু যারা রক্তদান করেন বিপদে তাদের পরিবার রক্ত পান না। বতর্মানে রক্ত সংকটে ধুঁকছে গোটা উত্তর জেলা।
দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত গোটা ত্রিপুরা রাজ্যে ৫৭৯ টি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল।ওই বারো মাসে চৌত্রিশ হাজার সাতশ ছিয়ানব্বই ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়েছিল। এর মধ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেছিল তেতাল্লিশ শতাংশ এবং ডোনার হিসাবে রক্ত সংগ্রহ হয়েছে তিপান্ন শতাংশ। ২০২৩-২০২৪ সালে রক্তদানের পরিমাণ অর্ধেক হয়ে গেছে। এদিকে সোশ্যাল প্রোগ্রেসিভ সোসাইটি দৈনিক তিন চার ইউনিট রক্ত তারা দিচ্ছে। অর্থাৎ মাসে একশ ইউনিট রক্তের জোগান ওই সোসাইটি দিচ্ছে যাদের রক্তের প্রয়োজন। উত্তর জেলার স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, উত্তরে রক্তের বড় সমস্যা হলো রক্তের জোগান খুবই কম।স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে আগের মতো কেউ আসে না। এদিকে যারা আট দশ বার সেচ্ছায় রক্তদান করেছে তাদের আত্মীয় স্বজনের প্রয়োজনে ব্লাড ব্যাংক গিয়ে রক্ত পান না। অন্যদিকে অনেকেই আবার বিশেষ পরিচিতির খাতিরে ব্লাড ব্যাংক থেকে সহজেই রক্ত পেয়ে যাচ্ছে। এতে বৎসরের পর বৎসর ধরে স্বেচ্ছায় রক্ত দাতারা ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ায় তারা আর রক্তদান কর্মসূচি গুলীতে যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। উত্তর ত্রিপুরা জেলায় তীব্র রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। উত্তর ত্রিপুরা জেলায় রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে কোন গ্রুপে রক্তই মিলছে না উত্তর জেলার ব্লাড ব্যাংঙ্ক।রক্তের অভাবে রোগীরা এবং রোগীর আত্মীয়-স্বজন কেঁদে বাড়ি ফিরছেন। ডোনার নিয়ে এলেই তবেই রক্ত মিলছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করে কীভাবে রক্তের সংকট মেটানো যায় এই বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কোনও ধরনের উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে এই সময় গরমের মরশুমে এসে পড়েছে এরই মাঝে ব্লাড ব্যাংক রক্তশূন্য। উত্তর ত্রিপুরা জেলার যে কয়েকটি মহকুমা হাসপাতাল রয়েছে সেই হাসপাতালগুলির প্রধান ব্লাড ব্যাঙ্ক হচ্ছে ধর্মনগর জেলা ব্লাড ব্যাংক। জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্ত না থাকার কারণে রোগীরা সংকটের মুখে পড়েছেন।ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তশূন্য এর দায় কে নেবে? সরকারও এবিষয়ে নীরব ও বেখবর।