রাজ্য ও রাজ্যপাল!!

 রাজ্য ও রাজ্যপাল!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- মাসদুয়েক হতে চললো, রাজ্যের নয়া রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু’র কার্যকাল।কিন্তু এর মধ্যেই খবরের শিরোনামে রাজ্যপাল শ্রী নাল্লু।শুধু শিরোনাম বললে হয়তো কম বলা হবে,নয়া রাজ্যপালকে নিয়ে বিভিন্ন মহলে রীতিমতো জল্পনা শুরু হয়েছে।জল্পনা চলছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অতিতৎপরতা নিয়ে।ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্যপালের প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ নিয়ে।ভারতবর্ষের বর্তমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় রাজ্যপাল পদটি হচ্ছে মূলত সমন্বয়কারী। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সেতুবন্ধন অর্থাৎ সমন্বয় রক্ষাকারীর ভূমিকা পালন করেন রাজ্যপাল।তবে এই সমন্বয়ে মাঝে মধ্যে যে ব্যাঘাত ঘটে না,এমন ভাবার কোনও কারণ নেই।শুধু ব্যাঘাতই নয়,রাজ্যপালের সাথে রাজ্য সরকারের সরাসরি সংঘাতও লক্ষ্য করা যায়।বিগত দিনেও বিভিন্ন রাজে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে নানা কারণে সংঘাত লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমানেও সংঘাতের খবর পাওয়া যায়।এই ক্ষেত্রে সবার আগে নাম বলতে হয় পশ্চিমবঙ্গের।বিশেষ করে কেন্দ্র ও রাজ্যে বিপরীত রাজনৈতিক দলের সরকার হলে,সংঘাতের সম্ভাবনাটি একটু বেশিই থাকে।কিন্তু একই দলের সরকার কেন্দ্র ও রাজ্যে থাকলে সংঘাতের সম্ভাবনাটা কম থাকে।এই ক্ষেত্রে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের দেখানো পথেই চলেন।রাজ্য সরকার যা বলতে বলে,রাজ্যপাল সেটাই বলেন।রাজ্য সরকার যা করতে বলে,রাজ্যপাল সেটাই করেন।অনেকটা সুবোধ বালকের মতো।এইভাবেই রাজভবনে রাজ্যপালের দিন কাটে।বিগত দিনগুলিতে এমন পরিবেশ,পরিস্থিতি দেখেছে রাজ্যবাসী।কিন্তু বর্তমান রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লুকে দেখা যাচ্ছে অনেকটা ব্যতিক্রমী ভূমিকায়। গত দুই মাসে তাঁর একাধিক কর্মসূচি তেমনই বার্তা দিচ্ছে। গত দুই মাসের মধ্যে রাজ্যপাল বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের রাজভবনে ডেকে নিয়ে,তাদের সাথে বিভিন্ন কাজকর্মের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন।সাম্প্রতি কালে তিনি ঊনকোটি এবং উত্তর জেলা সফর করেছেন।সেখানেও তিনি জেলা শাসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরের জেলা আধিকারিকদের সাথে বৈঠকে করেছেন।ধলাই জেলার আমবাসাতেও রাজ্যপাল একই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে,গত রবিবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সাতে সাক্ষাৎ করেছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে কোনও সময়,যে কোনও বিশেষ কারণে রাজ্যপালের সাথে সাক্ষাৎ এবং বৈঠক করতেই পারেন।কিন্তু কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার জন্য এই ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ ঘিরে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে।স্বাভাবিক ভাবেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যপাল কি রাজ্য সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন?রাজ্য প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন? নাকি রাজ্যের বর্তমান সরকারের কাজকর্মে খুশি নয় কেন্দ্রীয় সরকার?এরজন্যই কি রাজ্যপালকে ময়দানে নামানো হয়েছে?রাজ্যপালের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব রাজ্য সরকারকে কোনও ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে না তো?এমন একাধিক প্রশ্ন এখন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।পদ্ম শিবিরের প্রথম সারির এই প্রাক্তন নেতা,বর্তমানে ত্রিপুরার রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু’র যে তৎপরতা গত দুই মাস ধরে রাজ্যবাসী লক্ষ্য করছে, তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।এখন প্রশ্ন হচ্ছে,এই ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের সংঘাত কি অনিবার্য হয়ে উঠেছে?নাকি রাজ্য সরকার নিরবেই সহ্য করে যাবে? সেটাই এখন দেখার ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.