রবিঠাকুরের বিতর্কিত ব্যানার,দায় ঝেড়ে ফললো পুর পরিষদ!!!
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি, উদয়পুর।। রবিঠাকুরের পোস্টার বিতর্কে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করলেন উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান শীতল চন্দ্র মজুমদার। তার দাবি, উদয়পুর শহরের সংস্কৃতি গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। পুর পরিষদের পক্ষ থেকে এমন কোনও পোস্টার বা ব্যানার শহরে লাগানো হয়নি। পুর পরিষদের নামে কে বা কারা এই ধরনের ব্যানার লাগিয়েছে, তাও তিনি জানেন না। এই ব্যপারে তিনি তদন্তের নির্দেশ নাকি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ভারতবর্ষের শহীদ বীর সন্তান বলে উল্লেখ করে তাঁর ছবি সহ সম্প্রতি উদয়পুর শহরে একাধিক জায়গায় বড় ব্যনার লাগানো হয়। এই ব্যনারের নীচে সৌজন্যে লিখা আছে ” উদয়পুর পৌর পরিষদ”।
স্বাভাবিক ভাবেই এই ব্যনার ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, সামাজিক মাধ্যমে এই ব্যানার রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদ মাধ্যমেও এই নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়। সব মহলে ছি ছি রব উঠে। চাপে পরে এবং নিজেদের কলঙ্ক ঢাকতে শেষে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করলেন! রবিবার এই বিষয়ে পুর প্রধান তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানান, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শহীদের তালিকায় রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের নাম নেই। কিন্তু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে রবীন্দ্রনাথের নানা গল্প, কবিতা , উপন্যাস ও গান উজ্জীবিত করেছে l কিন্তু রবীন্দ্রনাথ শহীদ হননি। শহীদ হিসাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পোস্টার লাগানোর বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। সাফাই গাইতে গিয়ে পুর পিতা শীতল বাবু আরও বলেন , আজাদীকা অমৃত মহোৎসব ও ভারতের ৭৫ তম স্বাধীনতা বর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে ১৩ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট তিন দিন জাতীয় সড়কের দুই ধারে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি লাগিয়ে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল পুর পরিষদ।
কিন্তু কে বা কারা চক্রান্ত করে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথকে শহীদের তালিকায় নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয় , সৌজন্যে উদয়পুর পুর পরিষদ লিখে দিয়েছে l তার দাবি এটা পুর পরিষদের নয়। পুর প্রধান যুক্তি উত্থাপন করে বলেন, ১৩ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত কেউ দেখলোনা উদয়পুর রবীন্দ্র সংঘের সামনে এমন জনবহুল এলাকায় যেখানে উদয়পুর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সকল ছাত্র ছাত্রী ও অভিবাবক প্রতিদিন আসা যাওয়া করে। হঠাৎ করে ২০ আগস্ট কিভাবে মানুষের নজরে এসেছে এই বিতর্কিত পোস্টার? তিনি এই ঘটনাকে উদয়পুর পুর পরিষদের সুনামকে নষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন। তিনি যখন এই বিতর্কিত বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতে দেখেন , তখনই পুর পরিষদের কর্মীদের নির্দেশ দেন সমস্ত পোস্টার যেন দ্রুত সম্ভব জাতীয় সড়ক থেকে তোলে পুর পরিষদের অফিসে নিয়ে আসে। এই ছবি দেখে তিনি নিজেই অবাক হয়ে যান।
যদিও রাজ্যের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিক্তদের অভিযোগ, বিশ্ব কবি রবীন্দ্র ঠাকুরকে অবমানোনা করা হয়েছে। এমনিতেই উদয়পুর সংস্কৃতির শহর। উদয়পুর রাজবাড়ী ও ভুবনেশ্বরী মন্দির কে কেন্দ্র করে বিশ্ব কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর বিসর্জন নাটক রচনা করে বিশ্বের দরবারে ত্রিপুরা রাজ্য বিশেষ করে উদয়পুর শহরকে গৌরবান্বিত করেছেন। কিন্তু এই ঘটনা বিশ্ব কবির অমরসৃষ্টিতে উল্লেখিত শহরকে কালিমালিপ্ত করেছে বলে অনেকের অভিমত।