গন্ডাছড়ায় সাত জুলাইয়ে একটি ব্যক্তিগত সংঘর্ষে এক ব্যক্তির মৃত্যুর গড়াছড়ায় ঘটনা কেন্দ্র করিয়া ১২ জুলাইয়ে অনভিপ্রেত।এক ঘটনার ২২ দিন পর এলাকা সফর করিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ আশা করিয়াছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পাইবেন, দুঃখের কথা খুলিয়া বলিবেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন নিরাপত্তার কারণে মুখ্যমন্ত্রীকে তাহাদের মাঝে যাইতে দিলেন না।তবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা লিখিত স্মারকলিপি দিয়া তাহাদের দাবি দাওয়া জানাইয়াছেন। এখন প্রশ্ন আসিতেছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলি কি কেবল দাবি পূরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে চাহিয়াছিলেন, নাকি প্রবোধও চাহিয়াছিলেন?সেই প্রশ্নের জবাবআপাতত মিলিল না। রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকাগুলির মধ্যে গন্ডাছড়া হালের গন্ডাতুইসা একটি অন্যতম মহকুমা।এর অর্থ এই নয় যে এই মহকুমাকে প্রশাসনিকভাবে কালেকালে উপেক্ষা করিয়া আসা হইতেছে।প্রশাসনিক বরাদ্দে আনুপাতিক হার ঠিক থাকিতেছে কিন্তু কোনও কালেই গন্ডাছড়ার কাঙিক্ষত উন্নয়ন ঘটিতেছে না। প্রশাসনিক দুর্নীতি অনেক কাল ধরিয়াই এই এলাকা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লইয়াছে। রাস্তা নির্মাণ হইতে শুরু করিয়া লাভ্যার্থীর জন্য বরাদ্দ সকল কিছুতেই জল মিশাইবার কাজ সুচারুভাবে হইয়া থাকে এই এলাকায়। ইহা যেন এই অঞ্চলের মানুষের গা সওয়া বিষয়ও হইয়া গিয়াছে।
গন্ডাছড়া বা গন্ডাতুইসার বাতাসে দুর্নীতির, অর্থ মোক্ষণের জীবাণু স্থায়ী বাসা বাঁধিলেও রাইমা, সরমা দুই ভগিনীর এই ভূমিতে মানুষ তার সহজাত সৌভ্রাতৃত্ব কোনও দিন ভুলেন নাই।এই রাজ্যে পাহাড়ি বাঙালির মধ্যে ১৯৮০ সালে যে ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গা বাধানো হইয়াছিল,সেই সময়েও শান্ত ছিল গন্ডাতুইসা।ইতিহাস সাক্ষী, গন্ডাছড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কোথাও একটি ঘটনাও ঘটে নাই সেই দিন।পরবর্তীতে বার বার রাজ্যে বিক্ষিপ্তভাবে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ধোঁয়া ছড়াইয়াছে।কিন্তু সেই সকল ঘটনা-রটনা কখনোই গন্ডাছড়ার জনমানসকে ছুঁইতে পারে নাই।দীর্ঘ সময় ধরিয়া রাজ্যের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চলাকালে গন্ডাছড়ার জীবন জীবিকাও ব্যাহত হইয়াছে।সন্ত্রাসবাদী হামলায় মৃত্যু, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় সকলই ছিল।এক কথায় গন্ডাছড়ার দুর্গম সব এলাকা হইয়া উঠিয়াছিল সন্ত্রাসবাদী দলগুলির মৃগয়াভূমি।কিন্তু সাম্প্রদায়িক বিষ কখনোই এই প্রত্যন্ত বাতাসকে বিষাইয়া দেয় নাই।
বহুকাল আগেই রাজ্যে যখন সন্ত্রাসবাদী তৎপরতামুক্ত হইয়া উন্নয়নের অভিমুখ লইয়াছে তখন গন্ডাছড়ায় একটি ব্যক্তিগত সংঘাতের ঘটনা ও অনাকাঙ্কিত মৃত্যু কেন্দ্র করিয়া এক সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটাইয়া দেওয়া হইলো।যাহারা সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার শিকার হইলেন তাহারা সময়ের মলমে একদিন হয়তো সেই ক্ষত সারাইয়া লইবেন।কিন্তু ইতিহাসে গন্ডাছড়ার নাম যে প্রকারে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের ইতিহাসে স্থান করিয়া লইলো তাহা কি আর মুছিবার উপায় আছে? কোথাও এই ধরনের সাম্প্রদায়িক অসন্তোষ যখন তৈরি হয় তখন রাজনেতারা কি লইবেন তাহা নির্ভর করে সেই সকল নেতাদের অভিজ্ঞতা আর জ্ঞানবুদ্ধি কতটা রহিয়াছে তাহার ওপর। নির্ভর করে রাজ্যের প্রতি, রাজ্যের মানুষের প্রতি তাহার দায়বদ্ধতা কতটুকু তাহার ওপরে।
পরিতাপের বিষয়, ১২ জুলাইয়ের ঘটনার পরদিন রাজ্যে এক তথাকথিত উপজাতি দরদি নেতা ঘটনাস্থল গন্ডাছড়া সফরে গিয়া এক পক্ষের পক্ষ অবলম্বন করিলেন এবং ‘আমরা’, ‘ওরা’ বলিয়া আসিলেন।অর্থাৎ আগুনে ঘি ঢালিয়া আসিলেন। আগুন দুই পক্ষের মনেই বাড়িল।সেই আগুনের ধিকিধিকি আজও রহিয়াছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মনে এর প্রভাব, ব্যথা কতটা এর পরিমাপ কে করিবে?এই কাজটুকু মুখ্যমন্ত্রীও করিলেন না। মানে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলি মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে রাখিয়া বুকফাটা আর্ত চিৎকারে কান্না জুড়িতে পারিলেন না। প্রশাসনিক নিয়মে অসংবেদী দরখাস্ত দিয়াই নিজেদের প্রবোধ দিতে হইলো। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক প্রধান। তাহার নিরাপত্তার বিষয়টি নিঃসন্দেহে সর্বাগ্রে বিবেচিত হবে। সেই কারণেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অবস্থান হইতে তাহাকে নিরাপদ দূরত্বে রাখা হইলো। কিন্তু তার এই দূরত্ব তাহাকেও কি অসহায় করে নাই?যে নেতাটি ঘটনার পরদিন এলাকা সফর করিয়া ক্ষত খুঁচাইয়া দিয়া আসিয়াছেন তাহাকে কি কিছু বলিতে পারিয়াছেন তিনি? এমন প্রত্যাশা রাজ্যবাসী করিতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে সফরসঙ্গী হইয়াছেন এলাকার বিধায়ক, কিন্তু এই দলে সর্বাগ্রে সাংসদেরই থাকার কথা।পূর্ব ত্রিপুরার সাংসদ কি রাজ্যের মানুষের হাতের নাগালে আছেন?কেহই তার নাগাল পাইবেন আশা করে না। কারণ গন্ডাছড়াকাণ্ডের পর এলাকা মেরামতির কাজে তাহার কোনও ভূমিকা কাহারো নজরে আসিল না। শান্তি মুখের কথায় আসে না। তাহার জন্য সদিচ্ছা প্রয়োজন। প্রয়োজন সকল অংশের মানুষের ভরসা আর আস্থা জয় করিয়া লওয়া। কোনও উত্তরাধিকার দরকার হয় না মানুষের বিশ্বাসী হইবার জন্য।দরকার কেবল
‘আমরা’, ‘ওরা’ বলা বন্ধ করিয়া সকলকে বুকে টানিয়া লওয়া।
অনলাইন প্রতিনিধি:- বাংলাদেশ থেকে কাঞ্চনপুর মহকুমার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথে মামিত জেলার…
অনলাইন প্রতিনিধি :- নিরাপত্তার কাজে নয়, টিএসআর জওয়ানদের খাটানো হচ্ছে আর্দালি হিসাবে। পুলিশ আধিকারিকদের ও…
অনলাইন প্রতিনিধি :- ইন্ডিগো আগরতলা- দিল্লী রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে আরও একটি বিমান চালু করছে।…
দিল্লীর বিধানসভা ভোট নিয়ে সরগরম দিল্লী। দিল্লীতে এবার এক আঙ্গিকে বিধানসভা ভোট হচ্ছে। গত পরিস্থিতির…
অনলাইন প্রতিনিধি :-ত্রিপুরায় উৎপাদিত" অর্গানিক বার্ড আই চিলি " স্হানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ধানি…
২২জানুয়ারী,২০২৪।এক বছরের ব্যবুধানে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি।গত বছরের মেগা ইভেন্টের আসর বসেছিল অযোধ্যায়। এবার মেগা…