সদ্য দেশের ৭৬তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন হইলো। অর্থাৎ দেশের প্রজাতন্ত্রের ৭৫ বৎসর সম্পূর্ণ হইয়াছে। আমরা বুঝিয়াছি আমাদের সংবিধান আমাদের প্রাণভোমরা। ইহাকে রক্ষা করিয়া চলিতে হইবে আমাদের সকলকে। সংবিধান আমাদের যেমন অধিকার দেয় তেমনি দায়ও দিয়াছে। কিন্তু আমরা আমাদের দায় ভুলিয়া যাই সময়ে সময়ে। প্রজাতান্ত্রিক দেশের অন্যতম এক কথা হইল বহুদলীয় ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা আমাদের প্রশাসনকে সঠিক পথে চালিত করে। আমাদের সাংবিধানিক দায় স্মরণ করাইয়া দেয়। পরিতাপের বিষয় হইলো আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলি যখনই বিরোধী আসন হইতে মসনদে যায়, ক্ষমতার আবহে যাইয়া দায় ভুলিয়া যায়। অর্থাৎ এতদিন বিরোধী থাকাকালে তাহারা গণতান্ত্রিক যে সকল অধিকারের কথা বলিত সেই অধিকার অন্যকে প্রদানের কথা ভুলিয়া যায়।
এই রাজ্যে দীর্ঘদিন বাম শাসন ছিল বলিয়া প্রতিষ্ঠান বিরোধী এক হাওয়ায় তাহারা ২০১৮ সালে কুপোকাত হইয়া যায়। মানুষ চাহিয়াছিলেন বাম আমলের খারাপ বিষয়গুলির যাহাতে পুনরাবৃত্তি না হয়। বিজেপির যাহারা সেই দিন ভোট চাহিয়াছিলেন বামের বিকল্প হিসাবে তাহারাও মানুষের অধিকার সুরক্ষিত রাখিবার প্রতিশ্রুতি দিয়াই ক্ষমতায় আসে। কিন্তু দেখা গেল শাসক শাসকই থাকে। শাসনে আসিলে সকলের ক্ষেত্রেই বুঝি দম্ভ, ক্ষমতার আস্ফালন চলিয়া আসে। তাহারা সাংবিধানিক দায় অস্বীকার করিতে থাকেন। প্রসঙ্গ রাজ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাইবার সাংবিধানিক অধিকার। এই প্রসঙ্গ আজ সকলের মুখে মুখে ফিরিতেছে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিএম তাহাদের রাজ্য সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশ্য সমাবেশের জন্য আগরতলায় আস্তাবল মাঠ চাহিয়াছিল। সরকার মাঠ দেয় নাই। আস্তাবলের পরিবর্তে কোনও মাঠও দেওয়া হয় নাই।
এর বাইরে একই ঘটনা দেখা যাইতেছে কুমারঘাটে। অপর বিরোধী কংগ্রেস সভা করিতে চাহিয়া প্রশাসনের অনুমতি পাইতেছে না। কেন পাইবে না? সামনে কোনও নির্বাচনও নাই। তাহা সত্ত্বেও কেন বিরোধী দলকে তাহাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাইতে দেওয়া হইবে না? এই ভাবনা সাধারণ মানুষের মধ্যে। গণতান্ত্রিক চেতনার যে কোনও নাগরিক রাজনৈতিক দলগুলির সাংবিধানিক অধিকার জানেন। ইহা জানিতে হইলে রকেট সায়েন্স জানিতে হয় না। প্রজাতন্ত্রের ৭৫ বৎসরে দেশের চিন্তাশীল মানুষ ভারতের বিধিব্যবস্থা যে পাকিস্তান বা বাংলাদেশের মতো নহে তাহা সুতায় সুতায় জানিয়া গিয়াছেন। মানুষ আজ সংবিধান ও তাহার নিরিখে রাজনীতিকদের ক্রিয়াকাণ্ডের সঠিক ও যথার্থ মূল্যায়নও শিখিয়া গিয়াছেন।
ফলে শাসক যতই বলুন, আমাদের এখন সুসময় চলিতেছে আর বিরোধীরা যতই অকাট্য যুক্তির উপস্থাপন করিয়া তাহাদের দাবি নস্যাৎ করিতেছেন- মানুষ তাহাদের সকল দাবির অন্তস্থল মন্থন করিয়া সত্যের সন্ধান করিতে শিখিয়াছেন। তাই আজকাল নির্বাচনে কেহ জয়ী হইলেই তাহাকে দুধে ধোওয়া বলিয়া মানিয়া লয় না সকল মানুষ। সকলেই জানিয়া গেছেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া হইলেও নির্বাচনে জয়লাভ অধিকাংশ সময়েই একটি অস্থায়ী ব্যবস্থাপনার সফলতা মাত্র। আবার দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রশাসনের মুখাপেক্ষী থাকেন না, তাহারা নিজেরাই নিজেদের রুটিরুজির সংকুলান, জোগাড় করিয়া থাকেন। তাহারা একটি সরকারের নিকট প্রত্যাশা করে থাকেন স্বচ্ছ প্রশাসন, সংবিধানের সফল প্রয়োগ। তাহা হইলেই মানসিক, বৌদ্ধিক এবং কায়িক শ্রমে নিজেদের প্রয়োজনীয় সংস্থান নিজেরাই করিয়া লন।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মতাদর্শগত মতভেদ এবং মতান্তর কাম্য। শাসককে বুঝিতে হইবে সরকার তাহার দলের হইলেও প্রশাসন দলীয় নহে। প্রশাসন এক নিষ্প্রাণ অসংবেদনশীল আয়তন। ইহাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করিতে হয় সকলের সহযোগিতা এবং অংশগ্রহণের মাধ্যমে। এই কাজটি করিতে হইলে শাসককে সর্বাগ্রে উপলব্ধি করিতে হইবে শাসকের কর্তব্য এক যথার্থ অভিভাবকের। শাসকের ইহা উপলব্ধিতে না আসিলে বিরোধীদের নিরন্তর বুঝাইতে হইবে, শাসক সকলের অভিভাবক, তাহার কাছে নাম, গোত্র, সম্প্রদায়, ধর্ম, বর্ণ, মতবাদ অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়। গণতন্ত্রে এই সকল ভেদবুদ্ধির স্থান নাই। যাহারা এই কথা বিশ্বাস করে না তাহাদের প্রত্যেককে ইতিহাসের নিয়মে কালের অন্ধকারে চলিয়া যাইতে হইবে। তাহাদের কথা মনে রাখিবে না প্রজাতন্ত্রের মানুষ। সকল ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে থাকিয়া শাসন পরিচালনায় সংবিধানকে সতত সশ্রদ্ধ স্মরণ আমাদের পবিত্র সংবিধানের পবিত্রতা অক্ষুণ্ণ রাখিবে।
অনলাইন প্রতিনিধি :-ফের লাইনচ্যুত ট্রেন। ছিটকে গেছে তিনটি কামড়া। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার তিতলাগড় স্টেশনের কাছে।…
অনলাইন প্রতিনিধি :-প্রথম সংক্রমণের ৫ বছরের রেষ কাটতে না কাটতেই নতুন করে চিনে খোঁজ মিলেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-গত ৫ আগস্ট হাসিনা জামানার পতনের পর বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। তবে…
শুক্রবার মরিশাসের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন আসন্ন ন্যাশনাল ডে বা জাতীয় দিবসের উদযাপনে প্রধান অতিথি…
কোনও চাওয়া যখন পথের থেকে বেশি সংখ্যায় পথবন্ধক তৈরি করে, তাকে পরিত্যাগ করাই বিধেয়। কারণ…
অনলাইন প্রতিনিধি:- নারী নির্যাতন কিংবা মহিলা সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা রাজ্যে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। পাশাপাশি…