একটা কথার সাথে আমরা মোটামুটি প্রায় সকলেই পরিচিত যে , রণে এবং প্রণয়ে কোনও পন্থাই নাকি অনৈতিক নয় । যদি এই প্রবাদকে সত্য বলে ধরেও নেয়া হয় তাহলে , রাজনীতির লড়াইকে যুদ্ধ বা রণাঙ্গনের সঙ্গে তুলনা করলে বিষয়টিকে একগোত্রে এনে দাঁড় করানো যেতেই পারে । কিন্তু রাজনীতির প্রতিটি রণকৌশল , ছক এবং রণনীতি যদি অনৈতিকতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে তবে সেক্ষেত্রে রাজনীতি , রাজার নীতি না হয়ে শটতার অপপ্রয়াস হিসাবেই পরিগণিত হয় । সম্প্রতি এদেশের রাজনীতিতে শাসকদল বিজেপি ক্ষমতা দখলের অস্ত্র হিসাবে বিভিন্ন কলাকৌশলের মতো যেভাবে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তির সরকার ফেলে দেওয়ার মাধ্যমে ঘুরপথে নিজেদের ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে মত্ত হয়েছে তাকে ঘিরেই এই মুহূর্তে দেশের বিরোধী শিবিরে বাড়ছে শঙ্কা ।
মাত্র কিছুদিন আগে মহারাষ্ট্রের রাজনীতির টালামাটাল পরিস্থিতি এবং একাধিক নাটকের পর ক্ষমতা হারাতে হয়েছে উদ্ধব ঠাকরে সরকারকে । মারাঠা ভূমির এই পিচ্ছিল রাজনীতি শুধুমাত্র শিবাজীর রাজ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে তা জাতীয় রাজনীতির আঙ্গিনাতেও বড়সড় ছায়া ফেলেছে । মহারাষ্ট্রে উদ্ধব সরকারের পতন বিরোধীদের জন্য নি : সন্দেহে বড় ধাক্কা । আর তা নিয়েই এখন উত্তাল দেশের রাজ্য রাজনীতি । মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সঙ্কট এবং সেখানকার দীর্ঘ নাটকের পর মহাবিকাশ অঘাড়ি সরকারের পতন ঘটতেই অবিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের বিজেপি নেতৃবৃন্দ আচমকাই যেন বাড়তি রাজনৈতিক অক্সিজেন নিতে শুরু করেছেন ।
বিশেষ করে সেই সমস্ত রাজ্যের বিজেপি নেতৃবৃন্দের বক্তব্য এবং হায়দ্রাবাদে সদ্যসমাপ্ত বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী সমিতির বৈঠকের রাজনৈতিক প্রস্তাবনা ও নেতৃত্বের বক্তব্য থেকে সেই বার্তাই কিছু পরিষ্কার হয়ে উঠছে । হায়দ্রাবাদে হয়ে যাওয়া বিজেপির দু’দিনের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে নেওয়া রাজনৈতিক প্রস্তাবনায় সেরকমই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে । বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রস্তাব পেশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন ঘোষণা করলেন বিজেপি খুব তাড়াতাড়িই তেলেঙ্গানা ও পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখল করবে এবং শুধু তাই নয় । কেরল , অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশায় ক্ষমতা দখলও বিজেপির অন্যতম লক্ষ্য ।
তখন এটা বেশ জলের মতোই পরিষ্কার যে , মহারাষ্ট্র ফর্মুলা এবার একে একে অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে প্রয়োগ হতে পারে । মহারাষ্ট্রের মতো ঘটনার পর বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলো অন্তত এমনটাই আশঙ্কা করছেন । বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল যখন টুইট করে জানান , আগামী ২০২৪ সালে লোকসভার ভোটের সঙ্গে একত্রে পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তখন বিজেপি বিরোধী দলগুলোর মধ্যে বিশেষ করে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে শঙ্কা দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। এর যথেষ্ট সঙ্গত কারণও রয়েছে ।
এর আগে গোয়া , মণিপুর , মেঘালয় নাগাল্যাণ্ডের অভিজ্ঞতা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ভুলতে পারেনি ।২০১৮ সালে কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সরকার গঠন নিয়েও কম নাটক মঞ্চস্থ হয়নি । যদিও শেষ পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে কর্ণাটকে আস্থাভোট গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল । পরবর্তী সময়ে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে । মাঝখানে মহারাষ্ট্রে মধ্যরাত্রিতে শপথ নেওয়ার ঐতিহাসিক ঘটনাও সংঘটিত হতে দেখেছেন দেশের গণদেবতারা । যদিও শেষরক্ষা করা যায়নি । বস্তুত মণিপুর , গোয়া , মেঘালয় , কর্ণাটক , মধ্যপ্রদেশ কিংবা হালের মহারাষ্ট্র – যে রাজ্যেই ঘুরপথে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা হয়েছে সেখানেই অনৈতিকতা , আদর্শহীনতা , কিংবা ঘোড়া কেনাবেচার মতো অভিযোগ বিজেপিকে বিদ্ধ করেছে ।
গণতন্ত্রে ঘোড়ার হাট বসিয়ে ক্ষমতা দখলই হোক কিংবা কোনও তদন্তকারী সংস্থার চাপ অথবা প্রলোভনের থাবা দিয়ে ঘুরপথে জোর করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টাই হোক , কিংবা বিরোধী শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে ক্ষমতা দখলই হোক তা কখনোই রাজনৈতিক শুদ্ধতা ও নৈতিকতার পক্ষে মঙ্গলজনক হতে পারে না । এটা গণতন্ত্রের জন্যও অশনি সঙ্কেত । ২৪ – এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসমুক্ত ভারত গড়ার স্বপ্নে বিভোর বিজেপি ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে যে কায়দায় প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তিকে দুর্বল করার প্রয়াস নিয়েছে তা আসলে গণতন্ত্রেরই কবর খোঁড়ার নামান্তর । কারণ গণতন্ত্রের অন্যতম শর্তই হচ্ছে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা । একচেটিয়া ক্ষমতা ও আধিপত্য গণতন্ত্রের বদলে একনায়কতন্ত্রই প্রতিষ্ঠা করে । যা ভারতের মতো দেশের পক্ষে অশনি সঙ্কেত ।
প্রতিবেশী বাংলাদেশে গত ছয়মাস ধরে চলতে থাকা অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে একেবারে নিঃশব্দে এগিয়ে…
অনলাইন প্রতিনিধি:-প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করছে না সরকার। জেআরবিটির মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেররাজধানী শহর আগরতলার যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে উড়াল সেতু। শহরের পশ্চিম…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যেরসরকারী স্কুলে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ হতেই রাজ্যের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের উপর জুলুমের অভিযোগ উঠেছে…
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট একটি প্রতীককে ত্রিপুরা সরকারের রাজ্য প্রতীক/লোগো হিসেবে ব্যবহারের…
অনলাইন প্রতিনিধি :-সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকালই বিজেপির দশটি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের নামে চূড়ান্ত সীলমোহর পড়বে।…