রাজনৈতিক উত্তাল

 রাজনৈতিক উত্তাল
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজ্যে ভোট ঘোষণা হতে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতে পারে। সেই সাথে লাগু হয়ে যাবে নির্বাচনি বিধিনিষেধ। ফলে নির্বাচনি উত্তাপে ফুটছে গোটা রাজ্য। বুধবারই রাজ্যে এসেছে মুখ্য নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ টিম। দিনভর রাজ্য নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেছেন। দফায় দফায় বৈঠক করেছে নির্বাচনের সাথে যুক্ত আধিকারিকদের সাথে। বৈঠক করেছেন পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের সাথে। কথা বলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি দলের সাথে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুনেছেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে কমিশনের পূর্ণাঙ্গ টিম সাংবাদিক সম্মেলন করে, ভোট প্রস্তুতির যাবতীয় তথ্য তুলে ধরে রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করেছে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সংগঠিত করার।ফলে একদিকে যেমন নির্বাচন কমিশনের ব্যস্ততা তুঙ্গে, অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলির তৎপরতাও একেবারে তুঙ্গে। কমিশনের পূর্ণাঙ্গ টিম রাজ্যে অবস্থানকালেই আগরতলায় পা রাখেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী গেরুয়া শিবিরের জনবিশ্বাস যাত্রার সমাপ্তি অনুষ্ঠানে শামিল হতেই তার রাজ্যে আসা। তাছাড়া ভোটকে কেন্দ্র করে দলের রণকৌশল মোতাবেক যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা ও সাংগঠনিক বৈঠক করেছেন। ক’দিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্য সফর করে গেছেন। দলের শীর্ষ রাজ্য নেতৃত্বকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে এ গেছেন।প্রধান বিরোধী দল সিপিআই(এম) একদিন আগেই তাদের রাজ্য কমিটির বৈঠক সম্পন্ন করেছে। বৈঠকে হাজির ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক পলিটব্যুরোর সদস্য প্রকাশ কারাত, বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সহ রাজ্য কমিটির অন্যান্য সদস্য-সদস্যারা। দিনভর ভোটের রণকৌশল তৈরি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তারা। পরদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে অন্যান্য বিরোধী দলগুলিকে একসাথে নিয়ে লড়াই করার একটা কৌশলী বার্তা দিয়েছেন তারা। চিরশত্রু কংগ্রেস এবং রাজ্যভাগের দাবিদারদের সাথে জোট করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আম জনতার ভাবাবেগ যাচাই করার কৌশলী অবস্থান নিয়েছে সিপিএম। অর্থাৎ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জোট নিয়ে জল মেপে নিতে চাইছে তারা। তবে জোট হবে কি হবে না, সেটা এখনও স্পষ্ট নয় ৷ জোটের ইচ্ছা প্রকাশ করে জল্পনা উসকে দেওয়া হয়েছে।বসে নেই অপর বিরোধী দল কংগ্রেসও। প্রতিবারের মতো এবারও কংগ্রেস কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে। ২০১৮ সালে যে কংগ্রেস রাজ্যে একপ্রকার অস্তিত্বহীন হয়ে গিয়েছিলো, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই কংগ্রেসকে এখন অনেকটাই উজ্জীবিত দেখাচ্ছে। দুইদিন আগেই দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেত্রী এবং স্ক্রুটিনি কমিটির চেয়ারপার্সন দীপা দাশমুন্সী রাজ্য সফরে এসে দলীয় নেতৃত্বের সাথে বৈঠক করে গেছেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর উমাকান্ত স্কুলের সামনে বিজেপির জনবিশ্বাস যাত্রার সমাপ্তি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আয়োজিত সমাবেশে যখন ঢল নেমেছে, তখন পোস্ট অফিস চৌমুহনী কংগ্রেস ভবনে কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল ওয়াসনিক, অরবিন্দর সিং লাভলি, রাজ্য কংগ্রেসের ইনচার্জ অজয় কুমারের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক সভা। সভায় সিপিএমের সাথে জোট, প্রার্থী বাছাই, ভোটের রণকৌশল ইত্যাদি নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে খবর। বসে নেই তৃণমূল কংগ্রেস, পাহাড়ের নয়া রাজনৈতিক শক্তি তিপ্ৰা মথাও ৷ তারাও নিজেদের মতো করে রণকৌশল তৈরি করে ভোটের লড়াইয়ে নেমে পড়েছে। তবে ভোটে দলগুলির সমীকরণ কী হবে? কে কার সাথে জোট করবে? আদৌ জোট হবে কিনা? নাকি আসন সমঝোতার মাধ্যমে লড়াই হবে? এই সব কিছুই এখনও জল্পনা-কল্পনার মধ্যে রয়েছে। হয়তো ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হলে চিত্র পরিষ্কার হবে। সব মিলিয়ে কনকনে ঠাণ্ডাতেও রাজনৈতিক উত্তাপে ফুটছে গোটা রাজ্য।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.