রাজনৈতিক সমীকরণ

 রাজনৈতিক সমীকরণ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

রাজ্যে রাজনৈতিক সমীকরণ শীঘ্রই বদলাবে’। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শেষে শনিবার রাজ্যে ফিরে নিজের সরকারি বাস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত দিলেন, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান রাজ্যসভার সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। তার এই ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা ঘিরে ইতিমধ্যে রাজ্য রাজনীতিতে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, দিল্লী থেকে রাজ্যে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলনে যেভাবে এবং যে সুরে তাকে কথা বলতে দেখা গেছে, তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজ্য রাজনৈতিক মহল।

তার কথায়, তেইশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কর্মক্ষমতা আগামী সাত থেকে আট দিনের মধ্যেই নির্ধারিত হবে। পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক শক্তি তিপ্রা মথার সাথে জোট প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে একেবারে সোজাসাপটা জবাব দিয়েছেন। বলেন, মথাকে বিজেপির সাথেই আসতে হবে। কেন না, এছাড়া তাদের কাছে বিকল্প কোনও পথ নেই। কংগ্রেস – সিপিএম নিজেরাই আশ্রয়হীন। তাদের নিজেদেরই অস্তিত্ব সঙ্কটে। তাদের সাথে মথার গিয়ে কী লাভ হবে? লাভ যদি কিছু হয় সেটা বিজেপিতেই হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বিজেপিই জনজাতিদের প্রকৃত ভরসার স্থল।এটা প্রমাণিত।

FB_IMG_1671378854455

এখন পর্যন্ত গোটা দেশেই হোক, আর উত্তর-পূর্বাঞ্চলই হোক। জনজাতিদের যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে, সেটা মোদিই করেছে। আগামীদিনে মোদিই করবে। জনজাতিদের এই ভরসা আছে মোদির উপর। তার কথায় ২০১৮ ছিলো মুক্তির লড়াই। রাজ্যের মানুষ কমিউনিস্ট শাসন থেকে মুক্তির জন্য ভোট দিয়েছে। ২০২৩-এর ভোট হবে ত্রিপুরাবাসীর ভবিষ্যৎ নির্মাণের ভোট। আর এই ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতেই নির্মাণ সম্ভব। ত্রিপুরার সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্নে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। কেন না, বিজেপিই একমাত্র দল, ভবিষ্যতের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করে কাজ করছে এবং আগামীতেও করবে।

bjp-flag-dh-photo-1143818-1662772413-1148187-1664112854

তাই ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য তিনি পুনরায় বিজেপিকে সুযোগ দেওয়ার কথা বলেন। তার কথায়, কাজ করলে ভুল-ত্রুটি, ভালো-মন্দ থাকবেই। যে কাজ করে না, তার কোনও ভুল-ত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনাই নেই। তাই মোদি ছাড়া ত্রিপুরার সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।এখানেই শেষ নয়, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মুখ, প্রতিটি প্রশ্নের জবাবে ছিল যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেই স্পষ্ট করেছেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তার ভূমিকা কী হবে। তার কথায়, ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যবাসী তাকে যেভাবে দেখেছেন, কাল থেকে সেই পুরানো রূপে তাকে দেখা যাবে।

সেই মতো তার কর্মসূচিও কিন্তু শুরু হয়ে গেছে রবিবার থেকে।
কিন্তু সব থেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ত্রিপুরার রাজ্যসভার সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবকে সর্বাধিক বিষয় উত্থাপন করার সুযোগ করে দেওয়ার বিষয়টি। যা রাজ্যের ইতিহাসে বিরল নজির। এর আগে রাজ্যসভা এমনকি লোকসভাতেও ত্রিপুরার কোনও সাংসদ এতটা সুযোগ পায়নি। রাজ্যের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য। তথ্য বলছে, এবার তেরো দিন অধিবেশন চলেছে। এর মধ্যে শেষ দিন কোনও কাজ হয়নি। কাজ হয়েছে বারো দিন।

এই বারো দিনের মধ্যে এগারোদিনই রাজ্যসভায় ত্রিপুরার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় উত্থাপিত হয়েছে এবংএই নিয়ে আলোচনা হয়েছে।এর মধ্যে একদিন টানা আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে ত্রিপুরার ইস্যুতে। যা রাজ্যের ইতিহাসে বিরল নজির। বিপ্লবের কথায় এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্যই। তবে কী প্রধানমন্ত্রী মোদি বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন? নাকি সামনে বিধানসভা ভোট বলে এটা মোদির কৌশল?

গত ১৮ ডিসেম্বর রাজ্য সফরে এসে স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে অন্য সবাইকে সম্বোধন করলেও, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ‘আমার বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেছেন। সবাই জানে, প্রধানমন্ত্রী মোদি খুব ভাবনা-চিন্তা এবং হিসেব করেই শব্দচয়ন করেন। এই ক্ষেত্রে কী মোদি কোনও বিশেষ বার্তা দিতে চেয়েছেন?এই সব উত্তর পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা তো করতেই হবে। সেই সাথে রাজ্য রাজনীতির সমীকরণে কী ধরনের বদল ঘটে, সেটা দেখার জন্যও অপেক্ষা করতে হবে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.