রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছেঃ মুখ্যমন্ত্রী!!

 রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছেঃ মুখ্যমন্ত্রী!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি:-
নিজ উদ্যোগে রাজ্যে ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের ইচ্ছা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা সফল করা যায়নি। এর জন্য বিভিন্ন মহলে কথা বলে বহুদুর এগিয়ে গিয়েও পিছিয়ে আসতে হয়েছে। কারণ এর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়া যায়নি। আক্ষেপের সুরে এই মন্তব্য করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। তিনি বলেন, তার এই উদ্যোগ সফল হয়নি। রাজ্যের কৃতী সন্তান ডা. পার্থ প্রতিম সাহা এক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। তিনি দেবলোক হাসপাতাল থেকে শুরু করে একের পর এক চিকিৎসা কেন্দ্র ও চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সফলতার সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার দুপুরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উল্লেখিত মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার দুপুরে আমতলীর বাইপাস এলাকায় নর্থ ইস্ট ইনস্টিটিউট অব নার্সিং সায়েন্সের শিক্ষা ভবন এবং ছাত্রাবাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন। ডা. পার্থ প্রতিম সাহাকে রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে তার ভুমিকার কথা উল্লেখ করেন। ভাষণ দিতে গিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে তিনি আগরতলা সরকারী মেডিকেল কলেজ ও গোবিন্দ বল্লভ পন্থ হাসপাতালে সুপার স্পেশালিটি ব্লক স্থাপনের কথা তুলে ধরেন। প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা এই ব্লকে মোট নয়টি সুপার স্পেশালিটি বিভাগ রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে নিখরচায় কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে দুবার। এমন কাজ আরও হবে। একে রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্যোগ চলছে লিভার প্রতিস্থাপনেরও। রয়েছে কার্ডিওলজির মতে সুপার স্পেশালিটি বিভাগ। নিয়মিত নানা ধরনের জটিল অস্ত্রোপচার সহ চিকিৎসার সুযোগ মিলছে। মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে রাজ্যে স্বেচ্ছায় রক্তদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। জানান, রাজ্যে বছরে চল্লিশ হাজার প্যাকেটের মতো রক্ত স্বেচ্ছায় রক্তদানের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। দেশের আর কোনও রাজ্যে এত ব্যাপকভাবে রক্তদান হওয়ার কথা তার জানা নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ভাষণে রাজ্যে অঙ্গ সংরক্ষণের উদ্যোগের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন মস্তিষ্কের মৃত্যুর পর শরীরের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দান করা যায়। এর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, মোহন ফাউন্ডেশনের সঙ্গে এ নিয়ে যৌথভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। এছাড়া সৃজা সহ আরও বহু প্রতিষ্ঠান রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কাজ করতে চায়। সরকারও এ নিয়ে আগ্রহী।মুখ্যমন্ত্রী আগরতলা সহ দক্ষিণ, ধলাই এবং উত্তর জেলায় ট্রমা সেন্টার স্থাপনের তথ্য তুলে ধরেন। তুলে ধরেন এজিএমসি এবং টিএমসির কথা। ধলাই জেলা সদন্ন আমবাসায় কার্ডিয়াক কেয়ার সেন্টার স্থাপনের কথাও স্থান পেয়েছে তার ভাষণে তিনি বলেন, রাজ্যে সরকারী উদ্যোগে ছয় থেকে সাতটি এবং বেসরকারী উদ্যোগে এগারো থেকে বারোটি নার্সিং কলেজ রয়েছে। রাজ্যে নার্সের যথেষ্ট কদর রয়েছে থাকবে ভবিষ্যতেও। নার্সদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মুখ বলে বর্ণনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাদের আরও ভালো ব্যবহার করতে হবে বলে জানান। এই প্রসঙ্গে কেরালা ও মণিপুরে নার্সদের কথা উল্লেখ করেন। বলেন, ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এককালে কেরালা ও বিশেষভাবে মণিপুরের নার্সদের রমরমা দেখা গেছে। রাজ্যের নার্সরাও কোনও অংশে পিছিয়ে নেই বলে দাবি করেন তিনি। রাজ্যের নার্সরা বহিঃরাজ্যের পাশাপাশি বহিঃবিশ্বে যথেষ্ট সম্মানের সঙ্গে কাজ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে সুপার স্পেশালিস্ট চিকিৎসক সহ অন্যান্য চিকিৎসকদের সতর্ক করে ‘দেন। বলেন, তার কাছে মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু অনুষ্ঠানে নিয়মিত বহু মানুষ আসেন তাদের প্রায় নব্বই শতাংশ আসেন চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তা চেয়ে। অনেক সময় দেখা যায় রাজ্যে চিকিৎসার সুযোগ থাকলেও বহিঃরাজ্যে যাওয়ার পরামর্শ দেওয় হয়। এ নিয়ে একাংশ চিকিৎসকের দায়সারা গোছের মনোভাব রয়েছে। তারা সরকারী হাসপাতালে কাজ করলেও রোগীর চিকিৎসা করাতে চায় বেসরকারী হাসপাতালে। তাদের সাবধান হতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন উদ্যোক্তা নথ ইস্ট ইনস্টিটিউট অব নার্সিং সায়েন্সের চেয়ারম্যান ডা. পার্থ প্রতিম সাহা। ভাষণ দিয়েছেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার সহ শান্তিকালী আশ্রমের প্রধান চিত্তরঞ্জন দেববর্মা। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাধারঘাটের বিধায়িকা মিনা রাণী সরকার, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. দীপক শর্মা, উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষা সরোজ লতা আখা সহ ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সঞ্জয় পাল প্রমুখ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.