রাজ্যের ২৩টি হাতি গুজরাটের ‘জামনগরে যাচ্ছে ‘হাতি পার্কে’!!

 রাজ্যের ২৩টি হাতি গুজরাটের ‘জামনগরে যাচ্ছে ‘হাতি পার্কে’!!
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের প্রায় ১২টি বন্দি হাতি গুজরাটের জামনগরের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছে গতকাল।রাধে কৃষ্ণ মন্দির এলিফ্যান্ট ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট নামে একটি এনজিও এই হাতিগুলি নিয়ে যাচ্ছে। এই এনজিওটির পেছনে হাত রয়েছে মূলত আম্বানী গোষ্ঠীর।মূলত ব্যক্তি মালিকানাধীন এই হাতিগুলি ত্রিপুরার বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন সময়ে পাকড়াও করা হয়েছিল।ত্রিপুরার বন দপ্তরের অনুমোদন নিয়েই এই রাজ্য থেকে হাতি অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।এতে নাকি কেন্দ্রীয় সরকারের হাইপাওয়ার কমিটি ও ত্রিপুরা হাইকোর্টের অনুমোদন রয়েছে।জানা গেছে,এই হাতিগুলি গুজরাটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেখানে একটি হাতি পার্ক স্থাপন করে সে রাজ্যের টুরিস্ট আকর্ষণ বাড়াতে।ত্রিপুরা ছাড়াও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্য থেকেও বিপুল সংখ্যক হাতি সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।রাজ্য বন বিভাগের এক অফিসার বলেন,ত্রিপুরা থেকে মোট ২৩টি বন্দি হাতি জামনগরভিত্তিক হাতি সেনচুয়ারিতে নিয়ে যাওয়া হবে।আপাতত ১২টি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।কিন্তু ত্রিপুরার হাতি এভাবে বহি:রাজ্যে নিয়ে যাওয়া নিয়ে বন দপ্তরের অফিসারদের মধ্যেই বিরোধ রয়েছে।বন দপ্তরের অফিসারদের একটা অংশ মনে করেন এতগুলো হাতি একসাথে করে ত্রিপুরাতেই একটি হাতি স্যাংচুয়ারি করা যেত।কিন্তু এটা না করে কেন ত্রিপুরার হাতি বহি:রাজ্যে যেতে দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে বন বিভাগের সিংহভাগ অফিসার অসন্তুষ্ট।’বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন’ কঠোর করার পর ত্রিপুরার অনেক মাহুত তাদের হাতি বন বিভাগের কাছে সমর্পণ করেছে।নতুন আইন অনুযায়ী, হাতিদের কঠোর পরিশ্রম বা অতিরিক্ত পরিশ্রম করানো যাবে না। আগের মতো সার্কাস দলে বা পর্যটন কার্যক্রমে, মন্দির বা শোভাযাত্রায়ও ব্যবহার করা কঠিন।পাশাপাশি, নতুন আইনে সমস্ত মাহুতকে উপযুক্ত পশুখাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।এই বিধানগুলি কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে অনেক লোক হাতির উপর
তাদের অধিকার ছেড়ে দিচ্ছেন।কারণ এতে তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।একটি হাতির সমস্ত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা একটি ব্যয়বহুল কাজ।কিন্তু হাতি স্যাংচুয়ারি গড়ার নামে একই কাজ গুজরাট এনজিওকে করতে দেওয়া হচ্ছে।সূত্রের খবর অনুযায়ী, মন্দির ট্রাস্টেও হাতি স্থানান্তর মোকাবিলায় সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি হাইপাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়েছিল।এই কমিটি বন্যপ্রাণী,বিশেষ করে হাতির জীবনযাত্রার অবস্থা দেখার জন্য দেশের সর্বত্র পরিদর্শনে যায়।যদিও তারা প্রাণীর বাসস্থান,খাওয়া দাওয়া এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে অনেক ত্রুটি খুঁজে পান।কমিটি সেসব জায়গার হাতিগুলি বিশ্বমানের উদ্ধার সুবিধায় বা হাতি স্যাংচুয়ারিতে স্থানান্তর করার নির্দেশনা দেয়।যারা তাদের হাতি দান করতে চায় তাদের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির আদেশের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।একটি দলিল স্বাক্ষরিত হয় যা মালিকদের আইনি অধিকার বাতিল করে দেয়।
রাজ্য বন বিভাগের এক আধিকারিক আরও জানান, ২০২২ সালের আদমশুমারি অনুসারে,রাজ্যে মোট ৭৪টি প্রাপ্তবয়স্ক বন্দি হাতি এবং পাঁচটি শাবক আছে। সবগুলো হাতি এক সাথে করে ত্রিপুরায় একটি হাতি স্যাংচুয়ারি স্থাপন করার দাবি উঠেছে।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.