প্রশ্নের মুখে বৈধ সীমান্ত বাণিজ্য, আমদানির তুলনায় রপ্তানি নামমাত্র, পরিস্থিতি চিন্তাজনক!!
রাজ্যে নজিরবিহীন জমি দুর্নীতি, জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সরকারের ভূমিকায় বড় প্রশ্ন!

অনলাইন প্রতিনিধি :-শুক্রবার রাজ্যে
বিধানসভায় নজিরবিহীন জমি কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস সংক্রান্ত খবর রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত
হওয়ার পর গোটা রাজ্যবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।সব থেকে বিস্ময়ের ঘটনা হলো, সারা রাজ্যে একাংশ সরকারী কর্মী ও অফিসারের প্রত্যক্ষ মদতে এবং যোগসাজসে যারা এতদিন এ ধরনের মারাত্মক প্রতারণার শিকার হয়েও ভূমি মাফিয়াদের হুমকির কারণে মুখ খুলতে পারেননি,খবর প্রকাশ্যের পর তারাও এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে।সব থেকে বড় প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য সরকার এবং প্রশাসনের শীর্ষ মহলের ভূমিকা নিয়ে।ফলে গোটা বিষয়টি নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।বিশেষ করে সিপাহিজলা জেলার তৎকালীন জেলা শাসক বিশাল
কুমারের লেখা চিঠি প্রকাশ্যে আসার পর জনগণের সন্দেহকে আরও তীব্র থেকে তীব্রতর করেছে।
বহু আগে থেকেই ভূক্তভোগী এবং প্রতারিত মানুষের কাছ থেকে এই ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন সময়ে খবরও প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু তথাকথিত সুশাসনের সরকার যে কোনও কর্ণপাত করেনি, জেলাশাসকের চিঠি থেকেই তা স্পষ্ট হয়েছে। সব থেকে বিস্ময়কর ঘটনা হলো, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জেলাশাসকের পক্ষ থেকে অবৈধভাবে জমির নামজারি ও বেআইনি হস্তান্তর সংক্রান্ত মারাত্মক তথ্য সহ চিঠি পাওয়া সত্ত্বেও, সরকার এবং প্রশাসনের শীর্ষ মহল কোনও ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। শুক্রবার বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ জমি দুর্নীতির বিষয়টি উত্থাপন করে এবং পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে যে যে অভিযোগগুলি উত্থাপন করেছেন, তা হাল্কাভাবে নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।সুদীপবাবু বলেছেন,জেলাশাসকের চিঠি পাওয়ার পরও, ভূমি রেকর্ড ও সেটেলমেন্ট এর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা আজও বহাল তবিয়তে একই জায়গাতে বসে অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। সুদীপবাবু’র আরও বলেছেন, জেলাশাসক জিএ (পিঅ্যান্ডটি) দপ্তরের অতিরিক্ত সচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠি মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার কাছেও গেছে। কেননা, সাধারণ প্রশাসন এবং ভূমি রাজস্ব দুটি দপ্তর মুখ্যমন্ত্রীর হাতে রয়েছে। তাঁর দপ্তরের এতদিন ধরে এতবড় জমি দুর্নীতি চলছে, আর মুখ্যমন্ত্রী কিছুই জানেন না? রাজ্যের একজন সাধারন নাগরিক হিসাবেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। জানার পরও তো মুখ্যমন্ত্রী কোনও ব্যবস্থা নিলেন না। তাহলে কি ডাল ম্যায় কুচ কালা হ্যায়? প্রশ্ন তুলেন বিধায়ক শ্রীবর্মণ। তিনি আরও বলেছেন, আমি তো বিধানসভাতেই এই দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্ত দাবি করেছি।মুখ্যমন্ত্রীর সাহস থাকলে সিবিআই তদন্ত দিক।যদি না দেন, তাহলে বুঝতে হবে ডাল ম্যায় কুচ কালা হ্যায়।সুদীপবাবু বলেন,এই সরকার আপাদমস্তক দুর্নীতিতে জড়িয়ে গেছে।সর্বত্র দুর্নীতি চলছে। তাঁর অভিযোগ, এই জমি দুর্নীতি রাজ্যের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ। শুধু একটি জেলাতেই ৫০০ কোটি টাকার উপরে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে একজন জেলাশাসক নিজেই বলেছেন।তাহলে রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতে কি পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। সুদীপবাবু’র অভিযোগ, কমকরেও দশ হাজার কোটি টাকার জমি ঘোটালা হয়েছে। বিস্ময়কর ঘটনা হলো, এতবড় একটি দুর্নীতি নজরে আসার পরেও রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের শীর্ষ মহলের কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া। উল্টো জেলাশাসককেই ওই জেলা থেকে এক মাসের মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জনগণের হয়ে কাজ করতে গিয়ে উল্টো নিজে সরকারের রোষানলে পড়েছেন। তবে এই দুর্নীতির জল যে অনেক দূর গড়াবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।