রাজ্যে পর্যটক টানতে চালু হচ্ছে ‘উইকএন্ড টুরিস্ট হাব’।
অনলাইন প্রতিনিধি :- আগামী ৩০ জুলাই থেকে চালু হচ্ছে ‘উইকএন্ড টুরিস্ট হাব’।এদিন সন্ধ্যা ছয়টায় উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের প্রধান ফটকের সামনে অর্থাৎ তুলসীবতী মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘উইকএন্ড টুরিস্ট হাব’–এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। উপস্থিত থাকবেন পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার সহ বিশিষ্ট জনেরা। শুক্রবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানান পর্যটন মন্ত্রী শ্রী চৌধুরী।এখন থেকে সপ্তাহের প্রতি শনি ও রবিবার গ্রীষ্মকালে বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা এবং শীতকালে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ‘উইকএন্ড টুরিস্ট হাব’ চালু থাকবে। ওই সময়ে লক্ষ্মীনারায়ণ বাড়ি সংলগ্ন শেরওয়ালী সুইট কর্ণার থেকে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন চৌমুহনী এবং জ্যাকশন গেট ট্রাফিক পয়েন্ট থেকে রাজবাড়ির সামনে পর্যন্ত এলাকায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। সপ্তাহের ওই দুদিন নির্দিষ্ট সময়ে ওই এলাকায় সাইকেল, রিকশা, বাইক, স্কুটি, অটো, টমটম থেকে শুরু করে কোনও ধরনের যানবাহন প্রবেশ ও চলাচল করতে পারবে না। পায়ে হেঁটেই ওই এলাকায় প্রবেশ করতে হবে।‘উইকএন্ড টুরিস্ট হাবে’ সপ্তাহের প্রতি শনি ও রবিবার থাকবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সুসজ্জিত ভ্রাম্যমাণ ফুড স্টল এবং পর্যটকদের জন্য বিনোদনের নানা ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে থাকবে যথেষ্ট পরিমাণে
মহিলা ও পুরুষ পুলিশের ব্যবস্থা।এছাড়াও থাকবে ওয়াচ টাওয়ার থেকে নজরদারি, সিসি টিভির ব্যবস্থা এবং সাদা পোশাকের পুলিশের টহলদারি। সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটন মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘উইকএন্ড টুরিস্ট হাব’কে কেন্দ্র করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।সেগুলি হলো, বছরের ৩৬৫ দিনই উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ ও স্টেট মিউজিয়াম খোলা রাখা এবং সন্ধ্যায় দুই দফা ‘লাইট অ্যাণ্ড সাউণ্ড’ শো চালু রাখা। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য রাধাসাগরে প্যাডেল বোটের ব্যবস্থা করা। পর্যটকদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও অলঙ্কার পরে ছবি তোলার সুবিধার্ধে স্টেট মিউজিয়ামের বাগান এলাকায় ফটো কাউন্টার চালু করা। স্টেট মিউজিয়ামের পাশে ফুড কাউন্টার খোলা।মন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার পর্যটনকে রাজ্যের বিকল্প অর্থনীতির উৎস হিসেবে তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে ত্রিপুরাকে একটি বিশ্বমানের পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে তুলে ধরার লক্ষ্যে পর্যটন দপ্তর বহুমুখী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ‘উইকেও টুরিস্ট হাব’ সেই কর্মসূচিরই একটি অঙ্গ। ‘উইকেও টুরিস্ট হাব’ চালু হলে রাজ্য সরকারের যেমন রাজস্ব আয় হবে, তেমনি বেকার যুবক-যুবতীদেরও আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। রাজ্যের পর্যটনকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার দেশের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিকে রাজ্য পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হয়েছে।পর্যটনমন্ত্রী আরও জানান, পর্যটনের বিকাশে রাজ্যের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলিকে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের ফাণ্ডে বর্তমানে ছবিমুড়া এলাকা এবং অমরপুর শহরের অমরসাগর ও ফটিকসাগরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ৫৮ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা দরপত্রের মূল্যায়নের কাজ চলছে। ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরস্থিত সোনামুখী চা বাগানে পর্যটকদের জন্য বহুমুখী সুযোগ সুবিধা তৈরি করার লক্ষ্যে ৬৩.৭২ কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে একটি অ্যাডভেঞ্চার পার্কও নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও এডিবি ফাণ্ডে চতুর্দশ দেবতা মন্দির, কমলাসাগর কালী মন্দির এবং নীরমহলের পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ডিপিআর তৈরির কাজ চলছে। পর্যটন মন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার স্বদেশ দর্শন ২.০ প্রকল্পে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের অত্যাধুনিক পরিকাঠামো তৈরির অনুমোদন দিয়েছে।এজন্য ১৪০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।এছাড়াও এই প্রকল্পে ডম্বুর জলাশয়স্থিত নারকেলকুঞ্জ দ্বীপে আরও আটটি লগ হাট নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে সেগুলি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এরফলে পর্যটকরা নারকেলকুঞ্জে মোট ২৩টি লগ হাট ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার ও পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস উপস্থিত ছিলেন।