রাজ্যে একগুচ্ছ পরিকল্পনা ভারতীয় রেলের
ত্রিপুরা নিয়ে বহুমুখী পরিকল্পনা রয়েছে ভারতীয় রেলের। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে এ নিয়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব পরিকল্পনার বেশ কয়েকটির অনুমোদন মিলেছে ভারতীয় রেলের তরফে। সীমান্ত রেলের তরফে ত্রিপুরাসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের সম্ভাব্য বহুমুখী বিকাশে তৎপরতা চলছে। এই তৎপরতা চলছে রেল সংযোগের পাশাপাশি পর্যটন ও কর্মসংস্থানের বিকাশের লক্ষ্যে। এরই অঙ্গ হিসাবে আগরতলা রেলস্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানের স্টেশন হিসাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় অনুমোদন মিলেছে ভারতীয় রেল বোর্ডের। একথা বলেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিং বিভাগের প্রধান যোগীন্দর সিং লখরা। মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্ধি আশ্রম সংলগ্ন আগরতলা রেলস্টেশনে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয় সীমান্ত রেলের তরফে। তাতেই বিভিন্ন প্রসঙ্গের অবতারণা করেন ডিআরএম লামডিং শ্রীলখরা। লামডিংয়ের সিনিয়র ডিসিএম কে কে শর্মাকে পাশে বসিয়ে ডিআরএম লখরা তুলে ধরেন নানা তথ্য। বলেন, ত্রিপুরার রাবার বহি:রাজ্যে পরিবহণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সীমান্ত রেল। একই সঙ্গে পাথর সহ বিভিন্ন কাঁচামাল রেলপথে ত্রিপুরায় আনার বিষয়টিও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দেখা হচ্ছে। রেলপথে পণ্য পরিবহণে সুবিধা সৃষ্টিতে জিরানীয়া, চোরাই বাড়ি, বিলোনীয়ার মতো স্টেশনে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির কাজ শুরু হয়েছে। আগরতলায় পণ্য পরিবহণের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা সেকেরকোটের মতো হল্ট স্টেশনের মর্যাদা বাড়বে। সেকেরকোট ও আগরতলায় পণ্য পরিবহণের জন্য টার্মিনাস নির্মাণ হবে। উভয় স্টেশনে এর জন্য সৃষ্টি হবে নয়া ইয়ার্ড লাইন। শ্রীলখরা জানান, আগরতলায় ইতোমধ্যে দুটি এস্কালের কাজ শুরু হয়েছে। পরবর্তী কয়েক মাসে এই কাজ শেষ হবে বলে আশা করেন তিনি। বলেন, সেক্ষেত্রে যাত্রীদের সমস্যা লাঘব হবে। আগরতলা স্টেশনে আরও নানাবিধ সুবিধা সৃষ্টি হবে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি সাক্রম স্থলবন্দর নির্মাণের সঙ্গে রেলপথের সম্পর্ক তুলে ধরেন তিনি। পরবর্তী কয়েক মাসে আগরতলা-আখাউড়া রেলপথের কাজ শেষ হবে বলে দাবি করেন ডিআরএম লামডিং।
তার বক্তব্য, ত্রিপুরার আনারস, কাঁঠাল, বাঁশ সহ বিভিন্ন সামগ্রী বহি:রাজ্যে পরিবহণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। আগরতলাসহ রাজ্যের বিভিন্ন বিজ্ঞাপন, শৌচাগার সহ নানা উপায়ে স্থানীয়দের রোজগার ও কর্মসংস্থানে গুরুত্ব দেন শ্রীলখরা। ২০২3 সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সাক্রম পর্যন্ত রেলপথে বৈদ্যুতিকরণ হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। উদয়পুর, বিলোনীয়া, সংক্রম, আমবাসা, কুমারঘাট, ধর্মনগরের মতো স্টেশনে স্থানীয় পণ্য বিক্রয় ও পরিবহণের উপর বাড়তি গুরুত্ব দেন শ্রীলখরা। তিনি বদর ভায়া লয়া চন্দ্রনাথপুর বিকল্প রেলপথের সমীক্ষার অনুমোদন রেল বোর্ডের তরফে মিলেছে বলে জানান। পাশাপাশি ধর্মনগর ও পেচারথল হয়ে বিলোনীয়া ভায়া কমলপুর, ধোয়াই, আগরতলা নয়া রেলপথের সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শ্রীলখরা দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুমুর হাত ধরে নয়া ট্রেন উদ্বোধনের কথাও তুলে ধরেন। এই প্রসঙ্গে দৈনিক সংবাদের প্রশ্নের উত্তরে ভবিষ্যতে আগরতলা-মুম্বাইসহ দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে ত্রিপুরার রেল সংযোগের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান। বলেন, এ নিয়ে সীমান্ত রেলের তরফে রেল বোর্ডের কাছে বাড়তি কোচ তথা রেক চাওয়া হয়েছে। আর রেক মিললেই নয়া দূরপাল্লার ট্রেন পাবে ত্রিপুরা। পাশাপাশি আগরতলা-সাক্রমের দিনের প্রথম ডেমু ট্রেনের সময় সূচির পর্যালোচনা করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।