রাজ্য থেকে বিমান গুটিয়ে নিচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া

 রাজ্য থেকে বিমান গুটিয়ে নিচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি:- ২৩ আগরতলা-কলকাতা রুটের উভয় দিকে যাতায়াতে একের পর এক বিমান উঠিয়ে নেওয়ায় রাজ্যের মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন। এবার আগামী ১ ১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যের আকাশ থেকে পাকাপাকিভাবে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানও গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের মানুষের কাছে গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো হয়ে ঠেকেছে। আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে ইন্ডিগো দুটি বিমান এই রুট থেকে গুটিয়ে নিচ্ছে। সকালের ৭৮ আসনের একটি এটিআর বিমান ও রাতের ১৮০ আসনের একটি এয়ারবাসও এই রুট থেকে ইন্ডিগো গুটিয়ে নিয়েছে। এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর থেকে ইন্ডিগো এই রুট থেকে সকালের ৭৮ আসনের অপর একটি এটিআর বিমানও গুটিয়ে নিচ্ছে। তবে ইন্ডিগো ১৬ ডিসেম্বর ৭৮ আসনের এটিআর গুটিয়ে নিয়ে এই জায়গায় ১৮০ আসনের একটি এয়ারবাস দেবে বলে বিমান সংস্থা সূত্রের খবর। এদিকে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আগরতলায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান পরিষেবা চালু থাকবে। দু’মাস আগে এয়ার ইন্ডিয়া (এআই ৭৪৫ ও ৭৪৬) রাতের ১৮৬ আসনের এয়ারবাসটি তুলে নেয়। এখন মঙ্গলবার রাতে জানা গেছে এয়ার ইন্ডিয়ার একমাত্র যে বিমানটি (এআই-৭৪৩ ও ৭৪৪) ১৮০ আসনের এয়ারবাস দুপুরের দিকে চালু ছিলো সেই বিমানটিও এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে তুলে নিচ্ছে। এদিকে একের পর এক বিমান আগরতলা- কলকাতা রুটের উভয় দিক থেকে তুলে নেওয়ায় বিমান স্বল্পতায় যাতায়াতে যাত্রী দুর্ভোগ যে মারাত্মক আকার নেবে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলেও ভীষণ ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এখন প্রতিদিন আগরতলা-কলকাতা রুটে যাতায়াতের জন্য ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া ও এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের সব মিলে ৯টি বিমান রয়েছে। তারমধ্যে ইন্ডিগোর ৭৮ আসনের ২টি এটিআর বিমান ও ১৮০ আসনের ৫টি এয়ারবাস। এয়ার ইন্ডিয়ার ১টি ১৮৬ আসনের এয়ারবাস ও এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ১৮২ আসনের একটি বোয়িং বিমান রয়েছে। তারমধ্যে আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে ইন্ডিগো ১৭৮ আসনের একটি এটিআর বিমান ও ১৮০ আসনের একটি এয়ারবাস তুলে নিচ্ছে। তাতে ইন্ডিগোর বিমান ৭ থেকে কমে দাঁড়াচ্ছে ৫টিতে। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান চলবে। তারপর ১ ডিসেম্বর এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান উঠে গেলেও এই রুটে থাকবে শুধুমাত্র ইন্ডিগোর ১টি ৭৮ আসনের এটিআর ও ১৮০ আসনের ৪টি এয়ারবাস। আর থাকবে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের ১৮২ আসনের একটি বোয়িং বিমান। ফলে ১ ডিসেম্বর থেকেও এই রুটে বিমান কমছে। এই রুটে বিমান সংখ্যা কমে দাঁড়াচ্ছে ৬-এ। থাকছে ৭৮ আসনের একটি এটিআর বিমান ও ১৮০ আসনের ৪টি এয়ারবাস ও ১৮২ আসনের একটি বোয়িং বিমান। ফলে বিমান কমিয়ে দেওয়ায় যাতায়াতে রাজ্যবাসী কি অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়বেন তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যে বিমান পরিষেবার এই বেহাল দশায় দিনের পর দিন চুপ থেকে রহস্যজনকভাবে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ। রাজ্য সরকারও বেহাল বিমান পরিষেবার উন্নয়নে ও বিমান সংখ্যা বৃদ্ধি করা ও বিমান যাতে তুলে না নেওয়া হয় সেই বিষয়ে বাস্তব ভিত্তিক কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। ডবল ইঞ্জিন সরকারের কোনও সুফল বিমান পরিষেবায় রাজ্যবাসী পাচ্ছেন না বলে যাত্রীর অভিযোগ। এদিকে ১৯৬০ সাল থেকে ত্রিপুরায় ইন্ডিয়ান এয়ার লাইন্স নাম পরিবর্তনে হয় এয়ার ইন্ডিয়া বিমান পরিষেবা চালু রেখেছে। ৬৪ বছর ধরে এই বিমান সংস্থার বিমান একটানা চালু রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার দু বছর আগে অনেক আপত্তি সত্বেও তা অগ্রাহ্য করে এয়ার ইন্ডিয়াকে টাটা কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়। টাটা কোম্পানি এখন ত্রিপুরার আকাশ থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান গুটিয়ে নিচ্ছে। তাতে আগরতলায় এই বিমান সংস্থার কর্মচারীদেরও বহিঃরাজ্যে সরিয়ে নেওয়া হবে। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান গুটিয়ে না নেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা নিয়ে রাজ্যবাসী পুরো অন্ধকারে রয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান ১ ডিসেম্বর থেকে গুটিয়ে নেওয়া হচ্ছে এই খবরে রাজ্যবাসী বিস্মিত ও প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.