রাজ্য সরকারের নির্দেশ লঙ্ঘন ১২৭৪টি শূন্যপদে নিয়োগ অধরা।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্য সরকারের একের পর এক সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনে অনড় ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন। বর্তমান পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে ঠেকেছে যে রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তকে পর্যন্ত কলাপাতায় পরিণত করল টিপিএসসি কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের সাথে টিপিএসসি কর্তৃপক্ষের বাদানুবাদের খেসারত দিচ্ছেন রাজ্যের হাজারো বেকার। শুধু তাই নয়, টিপিএসসি কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না রাজ্য সরকার। যার ফলে একটি নিয়োগ প্রক্রিয়াও ন্যূনতম পাঁচ বছরের আগে শেষ হচ্ছে না। এমনকী মন্ত্রিসভার অনুমোদিত গ্রুপ এ, গ্রুপ বি, গ্রুপ সি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না। ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে কেন নীরব দর্শক রাজ্য সরকার, কোথায় দুর্বলতা- এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
মহাকরণ সূত্রে খবর পাঁচ বছর আগে পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনে পঞ্চায়েত এগজিকিউটিভ অফিসার পদে ১২৮৮ জনকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। এর মধ্যে ৪০৫টি পদে প্রায় পাঁচ বছর সময় পার করে, বেকার বিক্ষোভের চাপে নিয়োগ সমাপ্ত করল টিপিএসসি কর্তৃপক্ষ। তবে পঞ্চায়েত এগজিকিউটিভ অফিসার পদের বাকি ৮৮৩টি শূন্যপদে নিয়োগ অধরা। যদিও রাজ্য সরকার প্রায় দুই বছর আগেই ৮৮৩টি পদে নিয়োগের জন্য নির্দেশ দিয়েছিল টিপিএসসি কর্তৃপক্ষকে, যা
বর্তমান সময় পর্যন্ত মানা হয়নি। ফলে এই ৮৮৩টি শূন্যপদও বাতিলের পথে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসেও এসআই (পুলিশ) ২০০টি শূন্যপদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য মন্ত্রিসভা। এমনকী সেপ্টেম্বর মাসেই দুমাসের সময় বেঁধে সাব-ইনস্পেক্টর (পুলিশ) ২০০টি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর জন্য টিপিএসসি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার, যা এখন পর্যন্ত মানল না টিপিএসসি কর্তৃপক্ষ।উল্টো মহাকরণ সূত্রে খবর,এসআই (পুলিশ) ২০০টি শূন্যপদ এবং পঞ্চায়েত এগজিকিউটিভ অফিসার ৮৮৩টি শূন্যপদে নিয়োগ সংক্রান্ত রাজ্য সরকারের নির্দেশনামা পর্যন্ত টিপিএসসি থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, প্রায় তিন বছর আগে শুরু হওয়া ইলেকশন ইনস্পেক্টর চৌদ্দটি পদে এবং রেভিনিউ ইনস্পেক্টর ষোলটি পদের নিয়োগ প্রক্রিয়াও বিশ বাঁও জলে।এ ক্ষেত্রে তো আরও ভয়ানক পরিস্থিতি।এখন পর্যন্ত এই ত্রিশটি শূন্যপদের জন্যে লিখিত পরীক্ষা পর্যন্ত দিতে পারলো না টিপিএসসি। এখন এই দুটি পদের জন্য প্রথমে প্রিলিমিটারি পরীক্ষা হবে, এরপর মেইন পরীক্ষা এবং মৌখিক সাক্ষাৎকার হবে।এ ভাবেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়াও ন্যূনতম পাঁচ বছরের আগে শেষ হচ্ছে না। ফলে এ ক্ষেত্রেও চাকরি জীবন থেকে রাজ্যের বেকারের পাঁচ বছর গায়েব হবে। যার খেসারত দেবেন তারা অবসরকালীন সময়ে। এমনকী অনেক বেকার চাকরির ফুল বেনিফিটও পাবেন না। তবুও এক অদৃশ্য কারণে রাজ্য সরকার নীরব দর্শক বলে বেকার রাজ্যের যুবক যুবতীদের অভিযোগ।
লেবার ইনস্পেক্টর পঁচিশটি শূন্যপদেও এখন পর্যন্ত নিয়োগের দেখা নেই। রাজ্য সরকারের শূন্যপদে নিয়োগ সংক্রান্ত সব নির্দেশে টিপিএসসি কার্যালয়ে গিয়ে চাপা পড়ে যাচ্ছে। তবু শীতঘুমে রাজ্য সরকার।
মহাকরণ সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যে প্রত্যেক বছর স্টেট সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা হচ্ছে। তবে টিপিএসসি কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতায় ত্রিপুরাতে টিসিএস, টিপিএস পরীক্ষা এখন প্রত্যেক বছর হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের নির্দেশ মানছে না ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন। তাই মন্ত্রিসভার অনুমোদিত টিসিএস ৮৮টি শূন্যপদ এবং টিপিএস ৪৮টি শূন্যপদ মিলিয়ে ১৩৬টি পদ অবলুপ্তির পথে। এ ভাবেই রাজ্য সরকারের একের পর এক নির্দেশ অমান্য করার দৌলতে রাজ্যের বেকার যুবক যুবতীদের চাকরি হচ্ছে না। উল্টো রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত হাসির খোরাকে পরিণত হয়েছে।এর পরিণতিতে প্রত্যেক দিন বয়সউত্তীর্ণ বেকার বাড়ছে ত্রিপুরাতে।এমনকী বাড়ছে বেকার বিক্ষোভ।