রিজিজুর তোপে বাম-কংগ্রেস!
সারা পৃথিবী থেকে কমিউনিস্ট মুছে যেতে চলেছে ধীরে ধীরে। দু-একটা দেশে রয়েছে, তাও সহসাই মুছে যাবে। আর ভারতবর্ষের মধ্যে তো নেই বললেই চলে, কেরালাতেও সময়ের অপেক্ষা, তাও মুছে যাবে। শুধু তাই নয়, দেশের প্রাচীন কংগ্রেসের একই হাল। দেশের দু-একটি রাজ্যের মধ্যে শেষ প্রদীপ জ্বলছে। শুক্রবার এভাবেই কংগ্রেস এবং কমিউনিস্টদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন দেশের আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু। আজ মনু বিধানসভা কেন্দ্রের দলের প্রার্থী মাইলাফ্রু মগ এবং সাব্রুম কেন্দ্রের প্রার্থী শঙ্কর রায়ের সমর্থনে দুই জায়গায় বিশাল জনসভা করেন আইনমন্ত্রী রিজিজু। উভয় স্থানেই তিনি তীব্রভাবে বাম এবং কংগ্রেসের জোটকে আক্রমণের নিশানা করেন। দলের প্রার্থী শঙ্কর রায়ের জনসমর্থনে স্থানীয় মেলারমাঠে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উত্তরপূর্ব অঞ্চলের সাংসদ কিরণ রিজিজু বলেন, তিনি গর্বিত যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই প্রথম তাকে উত্তর পূর্ব অঞ্চল থেকে তুলে নিয়ে দেশের আইনমন্ত্রী করেছেন। তার আগে আর কেউ উপজাতি মন্ত্রী এতটা সম্মান পাননি। নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে সমগ্র উত্তর পূর্ব অঞ্চলের মধ্যে বিকাশ ঘটছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সড়ক, বিদ্যুৎ, শিল্প সব এগিয়ে চলছে। ত্রিপুরাতেও এর কাজ চলছে। আগামী দিনে আরও কাজ হবে ত্রিপুরায়। জনসভায় বিশাল লোকসমাগম দেখে তিনি বলেন, পূর্ণ বহুমত নিয়ে ফের রাজ্যে বিজেপি এবং আইপিএফটি জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। সারা পৃথিবী এবং দেশ থেকে যেখানে কংগ্রেস-সিপিএম মুছে যেতে চলছে সেখানে ত্রিপুরাতে ব্যতিক্রম কেন হবে। বনকুলে দলের প্রার্থী মাইলাফু মগের জনসমর্থনে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই প্রথম দেশের বাকি রাজ্যের সাথে উত্তরপূর্ব অঞ্চলের উপজাতিদের অর্থনৈতিক বিকাশ এবং তাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে ব্যাপক প্রয়াস নিয়েছেন। এদিন অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাক্রম কেন্দ্রীয় দলের প্রার্থী শঙ্কর রায় এবং শান্তিপ্রিয় ভৌমিক। পানিসাগর প্রতিনিধির সংযোজন : পানিসাগর কেন্দ্রের বিজেপি মনোনীত প্রার্থী বিনয়ভূষণ দাসের সমর্থনে শুক্রবার দাম ছড়ায় এলেন কেন্দ্রীয় আইন ও ন্যায় মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। তার সাথে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। শুক্রবার সকালে সমাবেশ শুরুর আগেই পানিসাগর থেকে যুব মোর্চার উদ্যোগে একটি সুবিশাল বাইক র্যালি বের হয়। র্যালিটি পানিসাগরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে বেলা একটা নাগাদ দামছড়া মোটরস্ট্যাণ্ডে আয়োজিত বিজয় সংকল্প সমাবেশে যোগ দেয়। বেলা দেড়টা নাগাদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরণ রিজিজু এসে দামছড়া মোটরস্ট্যাণ্ডে আয়োজিত বিজয় সংকল্প সমাবেশে শামিল হন। সমাবেশে আলোচনাকালে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। কেননা দীর্ঘদিনের বাম ও কংগ্রেস আমলে ত্রিপুরার যে ক্ষতি হয়েছিল তা গত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকার ঠিক করা শুরু করেছে। তা অব্যাহত রাখতেই এই নির্বাচনে পুনরায় বিজেপিকে ভোট দানের অনুরোধ করেন তিনি। তিনি বলেন, সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বহুদিন বিরোধী দলের আসনে বসে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের কাছে উত্তর পূর্বাঞ্চল, বিশেষতত্রিপুরার উন্নয়নের জন্য কথা বললে কংগ্রেস বলতো ত্রিপুরায় মাত্র দুটি লোকসভার আসন রয়েছে তাই ত্রিপুরার উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। শুধু তাই নয়, সংসদে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো খুব ছোট ছিল।তিনি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের পরিচিতি ও সংস্কৃতি নষ্ট করেছে কংগ্রেস সরকার। রাজ্যের জনজাতি অংশের মানুষ একটা সময় বন্দুক নিয়ে উগ্রপন্থার পথ অবলম্বন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, উত্তর পূর্বাঞ্চলের নাগাল্যাণ্ড, মণিপুর এসব জায়গাতেও যুবরা হাতে বন্দুক নিয়েছিল। প্রতিনিয়ত কংগ্রেস আমলের এই অঞ্চলে সমস্যার পর সমস্যা লেগেই থাকতো। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদির সরকার গঠন হওয়ার পর গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলে শাস্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। তাই এই শাস্তির পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে তিনি পুনরায় বিজেপির পক্ষে ভোটদান করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, যদি ভুলবশত আপনাদের রায় সিপিএম-কংগ্রেস জোটের পক্ষে যায় তবে মনে রাখবেন, গত পাঁচ বছরের পরিশ্রম পানিসাগরকে আরও পঞ্চাশ বছর পেছনে ঠেলে দেবে। প্রতিটি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সজাগ থেকে সচেতনতার সাথে বিজেপিকে ভোট দান করুন। এই নির্বাচন ভবিষ্যতের পথ নির্ণয়ের নির্বাচন। রাজ্যবাসীর ভবিষ্যৎ কখনই কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, বিজেপি ত্রিপুরার উন্নয়নে যে সংকল্প পত্র তৈরি করেছে তাতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের কথা মাথায় রেখে তাদের বিকাশের কথা উল্লেখিত আছে। কেন্দ্রে আরও বহুদিন মোদি সরকার থাকতে চলেছে। তাই ত্রিপুরাকেও বিজেপির হাতে ভুলে দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।