রেজাল্টের আগেই সকলকে নিয়োগের দাবি ঘিরে বিভ্রান্তি!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

এসটিজিটি পরীক্ষার্থীদের একসাথে নিয়োগের আন্দোলন ঘিরে বিভিন্ন মহলে বড় ধরনের বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, এই নিয়োগের দাবি নিয়েও জনমনে একটা ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলে বড় ধরনের অভিযোগ উঠেছে। টিআরবিটি সূত্রে খবর, এসটিজিটি পরীক্ষার ফলাফলই এখনও প্রকাশ হয়নি। অথচ একাংশ পরীক্ষার্থী তাদের একসাথে সকলকে নিয়োগ করার দাবি নিয়ে গত মাস তিনেক ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে। এমনভাবে বক্তব্য ও দাবি পেশ করা হচ্ছে, যেন তারা সকলেই এসটিজিটি পরীক্ষায় কোয়ালিফাই করেছে। এক সাথে নিয়োগের দাবিতে গত তিন মাস ধরে একাধিকবার শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে অর্থমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধরনা দিয়েছে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও তারা ধরনা দিয়ে আন্দোলন করেছে। শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গিয়ে একবার পুলিশের সাথেও আন্দোলনকারীদের ঝামেলা হয়েছে। এই নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। সমালোচনার ঝড় উঠেছিলো। টিআরবিটি থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে এবং টিআরবিটির জনৈক শীর্ষ আধিকারিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এসটিজিটি, এসটিপিজিটি এবং এসটিএসই এগুলি হচ্ছে সিলেকশন টেস্ট। এই পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ বা অনুত্তীর্ণ কিংবা পাস-ফেল ইত্যাদি নেই। পরীক্ষায় যারা নির্ধারিত কোয়ালিফাইং মার্কস বা তার বেশি নম্বর পাবে তাদের মধ্য থেকে বিজ্ঞাপনে প্রকাশিত শূন্যপদের সংখ্যা অনুযায়ী পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের (মেধা অনুযায়ী) ভিত্তিতে চাকরির জন্য বিবেচিত হবেন। এসটিজিটি পরীক্ষা হয় ১৫০ নম্বরের। তার মধ্যে কোয়ালিফাইং মার্কস সাধারণ ক্যাটাগরির পরীক্ষার্থীদের জন্য ৭৫ এবং এসসি, এসটি পরীক্ষার্থীদের কোয়ালিফাইং মার্কস হচ্ছে ৬৮ নম্বর। গত তিন মাস ধরে যে পরীক্ষার্থীরা এক সাথে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছে, সেই পরীক্ষার রেজাল্টই এখনও প্রকাশিত হয়নি। টিআরবিটি আধিকারিক জানান, রেজাল্ট প্রকাশিত হওয়ার পর কোয়ালিফাইং পরীক্ষার্থীদের কাগজপত্র পরীক্ষার (স্ক্রুটিনি) জন্য ডাকা হবে। কাগজপত্র ভেরিফিকেশন শেষে পোস্টের ভিত্তিতে মেধা অনুযায়ী একটি প্যানেল তৈরি করে দপ্তরের কাছে পাঠানো হয়। টিআরবিটির তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষা দপ্তর এসটিজিটি ২৩০টি পদে নিয়োগের জন্য টিআরবিটির কাছে রিকুইজিশন পাঠিয়েছিল। এই ২৩০টি পদের মধ্যে সাধারণ ক্যাটাগরি পদ ২৯টি, এসসি ২৯টি এবং এসটি পদ ১৭২টি। সেই মতো টিআরবিটি গত ১৫ জুলাই ২২ ইং বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত পদের সংরক্ষণ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের হয়। আদালত অন্তর্বর্তীআদেশ দিয়ে বলেছে, পরীক্ষা দিতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু চূড়ান্ত নির্দেশ না আসা পর্যন্ত যেন ফলাফল প্রকাশ না করা হয়। সেই মতো টিআরবিটি গত ১১ সেপ্টেম্বর ২২ইং ২৩০টি এসটিজিটি পদের জন্য পরীক্ষা গ্রহণ করে। সারা রাজ্যে ৩২টি সেন্টারে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে ২৩০টি। পদের জন্য আবেদন করেছিল ১০,৯৯৫ জন চাকরিপ্রার্থী। পরীক্ষা দিয়েছে ৯,২৩১জন। অনুপস্থিত ছিল ১৭৬৪ জন। এর মধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর ২২ ইং হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ মামলার রায় ঘোষণা করেছে। হাইকোর্টের রায়ে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে সংরক্ষিত পদ কোনও অবস্থাতেই ৫০ শতাংশের উপর হতে পারবে না। হাইকোর্টের এই রায় ঘোষণা হওয়ার পর নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কেননা, হাইকোর্টের রায়ের মান্যতা দিয়ে নিয়োগ করতে গেলে সাধারণ ক্যাটাগরির যারা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী কম পদ থাকার কারণে আবেদন করেনি, তারা যেমন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে তেমনি এসটি ক্যাটাগরির যারা বঞ্চিত হবে, তারাও পুনরায় আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে। অপরদিকে, আদালতের রায় উপেক্ষা করে নিয়োগ করলেও মামলা হবে আদালত অবমাননার। ফলে এখন উভয়সংকটে শিক্ষা দপ্তর।
শুধু তাই নয়, সবাইকে এক সাথে নিয়োগের দাবিও অবান্তর বলে দাবি করেছে টিআরবিটি। তাদের বক্তব্য, ২৩০টি পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল এবং ২৩০টি পদ পূরণের জন্য পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। এর থেকে একজন বেশি নিয়োগ করতে হলে পূর্বের বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা দুটোই বাতিল করতে হবে। নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। এটাই আইন, এটাই নিয়ম। টেট আর সিলেকশন টেস্ট একরকম নয়। দুটোই ভিন্ন প্রক্রিয়া। টেটে শূন্যপদের উল্লেখ থাকে না। এসটিজিটি, এসটিপিজিটি, এসটিএসই নিয়োগে পদের উল্লেখ থাকে। টিআরবিটি সূত্র থেকে জানা গেছে, আদালতের রায় প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে টিআরবিটি শিক্ষা দপ্তরকে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে শিক্ষা দপ্তরের মতামত ও সিদ্ধান্ত কী, সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে। যতটুকু জানা গেছে, এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। এদিকে, শনিবারও একসাথে সকলকে নিয়োগের দাবিতে ফের মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ধরনা দিল এসটিজিটি উত্তীর্ণ বেকাররা। যদিও বাসভবনে দেখা না করে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চারজনের প্রতিনিধি দেখা করলেন সরকারী বাসভবনে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে অবহিত হন। তিনি প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস দেন, তাদের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীদের সাথে কথা বলবেন।

Dainik Digital

Recent Posts

হৃদরোগে হঠাৎ মৃত্যু: কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমান যুগে হৃদরোগ জনিত সমস্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও জীবনঘাতী…

22 hours ago

প্রশ্নের মুখে বৈধ সীমান্ত বাণিজ্য, আমদানির তুলনায় রপ্তানি নামমাত্র, পরিস্থিতি চিন্তাজনক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্যেনয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই নয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশনকে…

22 hours ago

আঠাশের বিধানসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা প্রদ্যোতের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলেই, আমাদের…

22 hours ago

হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-তপন স্মৃতি নকআউট ক্রিকেটের দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!খেলার…

23 hours ago

সতর্কতাই বাঞ্ছনীয়!!

নজিরবিহীন গরমের মুখোমুখি রাজ্য। মার্চ মাসের শেষ দিকে গরমের এই প্রকোপ এককথায় নজিরবিহীন।এজন্য আবহাওয়া দপ্তরকে…

23 hours ago

খুশির ঈদ উদযাপন

অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…

2 days ago