Categories: দেশ

রেলে আইন প্রয়োগে গুরুত্ব, পেটে পড়ছে লাথি।

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি || রেলপথ, স্টেশন ও ট্রেন বৈধ টিকিট অথবা অনুমতি ছাড়া ব্যবহার পুরোপুরি বেআইনি।ট্রেন ও স্টেশন ব্যবহার করা যায় বৈধ রেল টিকিট ও প্ল্যাটফর্ম টিকিটের মাধ্যমে।এর জন্য রয়েছে নানা নিয়মাবলি। স্টেশন এলাকার বাইরে আইনি পদ্ধতিতেও রেলপথ ব্যবহারের প্রায় সুযোগই নেই। স্টেশন এবং ট্রেনে রেলের বৈধ অনুমোদন ছাড়া কিছু বেচা-কেনা করাও বেআইনি। বেআইনি চলন্ত যাত্রীট্রেনে অকারণে চেন টানা। সেদিক থেকে স্টেশন ও ট্রেনে পানীয় জল, চা ইত্যাদি বিক্রি সহ ভ্রাম্যমাণভাবে ব্যবসা তথা হকারি করা যায় না। করা যায় না নেশাদ্রব্যের ব্যবহার। মূলত মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এসব বিশেষত হকারি পেশাকে দেখা হয়ে আসছে। অন্তত ত্রিপুরার মতো রাজ্যের ক্ষেত্রে তাই ঘটছে।এসব প্রতিরোধে কিন্তু সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। ভারতীয় রেল আইন ১৯৮৯-এর ১৪১, ১৪৪ (ক), ১৪৫, ১৪৭ এবং ১৬৭ নম্বর ধারা সহ অন্যান্য ধারা এসব প্রতিরোধ করা হয়ে থাকে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ভারতীয় রেল আইনের এসব ধারা প্রয়োগে ধূমপান, স্টেশন ও ট্রেন আবর্জনামুক্ত রাখা, অকারণে চেন টানা রদ ও হকারির বিরুদ্ধে বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের আওতাধীন অন্তত পঁচাত্তরটি রেলস্টেশন ও সন্নিহিত অংশে চলছে অভিযান। এর বাইরে নয় রাজ্যের প্রধান স্টেশন আগরতলা এবং দ্বিতীয় প্রধান স্টেশন ধর্মনগর। রেলের নিজস্ব সুরক্ষা বাহিনী আরপিএফের উদ্যোগে চলছে অভিযান। গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে আইন প্রয়োগে। এর ফলে আগরতলা রেলস্টেশন প্রায় হকারমুক্ত হয়ে গেছে। একইভাবে বিভিন্ন যাত্রীট্রেনে নানা ধরনের সামগ্রী বিক্রিও এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পেটে লাথি পড়েছে বহু পরিবারের।তবে আইন বড় বালাই।রেলের সুরক্ষা বাহিনীর এক্ষেত্রে প্রায় কিছুই করার নেই। তাদের মানবিক মুখ নিয়ে চললে হবে না। চাকরি রক্ষা করা যাবে না নিজেদের । চাকরি রক্ষার খাতিরে মানবিকতাকে তালা বন্ধ করে রেখে পালন করতে হচ্ছে অমানবিক ভূমিকা। রক্ষা করতে হচ্ছে আইন। সেই সঙ্গে আদায় করছে মোটা অঙ্কের জরিমানা। সারা দেশজুড়েই চলছে এই কাজ, সময় ও সুযোগ বুঝে তারা অবশ্য মাঝেমধ্যেই মানবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে এড়িয়ে যায় নানা ঘটনা।আর এ কারণেই অনেকের পক্ষে ট্রেনে খাবার বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। ত্রিপুরার মতো রাজ্যে এই পেশায় নিয়োজিত থাকার সুবাদে অন্তত এক হাজার পরিবারের মুখে অন্নের জোগান হচ্ছে। বহু পরিবারের একাধিক ব্যক্তি যুক্ত রয়েছে স্টেশন ও ট্রেনে হকারি করার পেশায়। রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলা এবং দক্ষিণাংশের বিভিন্ন এলাকায় রেল পরিষেবা শুরুর ইতিহাস বেশি আগের নয়। মাত্র বছর কয়েক আগে আগরতলা সহ সাক্রম যুক্ত হয়েছে রেলপথে। বিভিন্ন ধরনের ট্রেনের চলাচল শুরু হয়েছে। ফলে অনেকেরই ধারণা হয়ে গেছে যে স্টেশন ও ট্রেনে হকারি করার মধ্যে বেআইনি কিছু নেই। বাস্তবে আইন কিন্তু ভিন্ন কথা বলে। আর যতোদিন যাচ্ছে ততো আইনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। বাড়ছে সমস্যা। বন্ধ হচ্ছে রোজগারের পথ। পরিবার শুদ্ধ সবার পেটে লাথি পড়ার উপক্রম হয়েছে অথবা লাথি পড়ছে।সীমান্ত রেলের উপর মহল থেকে সৃষ্টি হচ্ছে চাপ। এই চাপ ক্রমান্বয়ে বিভাগ হচ্ছে নামছে স্থানীয় স্তরে। আবার রেল বোর্ডের তরফে সীমান্ত রেল সহ অন্যান্য রেলের উপর চাপের প্রবাহ চলছে। করোনা জীবাণু সংক্রমণজনিত কাটিয়ে ওঠার পর থেকেই বেড়েছে চাপের প্রাবল্য। আইনি বিধান অনুসারে কোভিড পরিস্থিতির পর যথাযথ অভিযানের উদ্যোগ চলছে শীর্ষ কর্তৃপক্ষের চাপের ফলে। এর মূল লক্ষ্য হিসাবে আদায় করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের জরিমানা। সীমান্ত রেল এলাকাতেও চলছে এই তৎপরতা। এপ্রিল ও মে গত দুই মাসে সীমান্ত রেল এলাকায় করা
অভিযানে এক হাজার সাতাত্তর হকারকে আটক করা হয়েছে। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলার নামে নামাঙ্কিত স্টেশন এবং ধর্মনগর স্টেশন রয়েছে।আগরতলায় বেআইনি হকারি সহ চেন টানার দায়ে মোট ছত্রিশজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৫ জুন পর্যন্ত। এজাহার গ্রহণ করা হয়েছে একত্রিশটি। প্রায় একই সময়ে ধর্মনগরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দশজনকে। সীমান্ত রেল এলাকায় সব মিলিয়ে আদায় করা জরিমানার মধ্যে বেআইনিভাবে হকারির বিরুদ্ধে ৩ লাখ ২০ টাকা রয়েছে। ধূমপানের জন্য ১ লাখ,৭৪ হাজার টাকা স্টেশন ও ট্রেনে আবর্জনা ছড়িয়ে নোংরা করার দায়ে আদায় করা হয়েছে ৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা।সবমিলিয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম এবং অন্যান্য অংশ সহ ট্রেনে ধূমপানের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে নয়শো ছাব্বিশজনকে। আবর্জনা ছড়িয়ে নোঙরা করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই হাজার পাঁচশো আটান্নজনকে।

Dainik Digital

Share
Published by
Dainik Digital

Recent Posts

হৃদরোগে হঠাৎ মৃত্যু: কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমান যুগে হৃদরোগ জনিত সমস্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও জীবনঘাতী…

17 hours ago

প্রশ্নের মুখে বৈধ সীমান্ত বাণিজ্য, আমদানির তুলনায় রপ্তানি নামমাত্র, পরিস্থিতি চিন্তাজনক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্যেনয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই নয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশনকে…

18 hours ago

আঠাশের বিধানসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা প্রদ্যোতের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলেই, আমাদের…

18 hours ago

হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-তপন স্মৃতি নকআউট ক্রিকেটের দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!খেলার…

18 hours ago

সতর্কতাই বাঞ্ছনীয়!!

নজিরবিহীন গরমের মুখোমুখি রাজ্য। মার্চ মাসের শেষ দিকে গরমের এই প্রকোপ এককথায় নজিরবিহীন।এজন্য আবহাওয়া দপ্তরকে…

18 hours ago

খুশির ঈদ উদযাপন

অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…

2 days ago