রেশন সামগ্রী খোলা বাজারে অভিযুক্ত ডিলারদের শোকজ!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- রেশনশপ গুলিতে খাদ্য দপ্তরের খাদ্য পরিদর্শকরা নিয়মিত পরিদর্শন না করায় অসাধু বেশনশপ ডিলাররা পুরোমাত্রায় সুযোগ নিচ্ছে। একাংশ খাদ্য পরিদর্শকের সঙ্গে আবার অসাধু রেশন ডিলারদের গোপন বোঝাপড়া থাকায় রেশন সামগ্রী বেপাত্তা করে দিয়ে ভোক্তারা বরাদ্দের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ক্ষুব্ধ ভোক্তারা সব দময়ই এই অভিযোগ করেছেন। ভোক্তাদের অভিযোগের যে পুরো সত্যতা রয়েছে তা খাদ্য দপ্তরের খোদ অধিকর্তা নির্মল অধিকারীও গত মঙ্গলবার লালবাহাদুর চৌমুহনীস্থিত ২২৯ নম্বর রেশনশপে অভিযানে গিয়ে প্রমাণ পেয়েছেন। রেশনশপের স্টক থেকে বেপাত্তা করে দেওয়া হয় ৪০ কুইন্টাল ৬৫ কিলো চাল, ৬৬ কিলো চিনি ও ৮০ কিলো ময়দা। খাদ্য অধিকর্তা সেদিন সদর খাদ্য কন্ট্রোলার প্রদীপ কুমার ভৌমিককে নিয়ে ২২৯ নম্বর রেশনশপ গিয়ে স্টক যাচাই করে এই ব্যাপক দুর্নীতির হদিশ পান। রেশন শপের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে ডিলার সুবীর সাহাকে শুক্রবার তিনদিনের সময় দিয়ে সদর মহকুমা শাসক মানিক লাল দাস কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। তবে খাদ্য অধিকর্তা শ্রীঅধিকারী রেশন সামগ্রীর ব্যাপক পাচার ও দুর্নীতি রুখতে অভিযানে গিয়ে এর আগেও এই অভিজ্ঞতা হয়েছিল। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো তা সত্বেও অসাধু রেশনশপ ডিলারদের রেশন সামগ্রী খোলাবাজারের পাচার ও দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। বন্ধ করতে পারেনি খাদ্য দপ্তর ও প্রশাসন। শুক্রবার আড়ালিয়ার ১২৪ নম্বর রেশনশপে অভিযানে গিয়ে খাদ্য দপ্তর রেশনশপের স্টকে ব্যাপক গরমিল ধরেছে। সদর খাদ্য কন্ট্রোলার প্রদীপ কুমার ভৌমিকের নেতৃত্বে অভিযানে রেশনশপের স্টকে ৪০০ কিলো চাল অতিরিক্ত রয়েছে বলে ধরা পড়েছে। যে সব ভোক্তা চাল নেন না তাদেরকে দিয়ে রেশন ডিলার অতনুদেব পস মেশিন আঙুলের চাপ দেওয়ায় সেই চাল রেশনের স্টকে রয়ে গেছে বলে খাদ্য দপ্তর সূত্রের সংবাদ। এই চাল ডিলার রেনশশপ থেকে বেপাত্তা করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে খাদ্য দপ্তরের অভিযানকারী দল সূত্রের সংবাদ। সেই ৪০০ কিলো চাল সিজ করে খাদ্য দপ্তর নিয়ে আসে। রেশনশপের ডিলারের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ও খাদ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এদিকে শুক্রবার পুরাতন কালীবাড়ি লেনে ১২ নম্বর রেশনশপের সামনে দাঁড়ানো ১ টি রিকশায় তিন বস্তা তথা ১৫০ কিলো চাল দেখে খাদ্য দপ্তরের অভিযানকারী দল রিকশা আটক করে তল্লাশি শুরু করতে রিকশা চালক রিকশা ফেলে পালিয়ে যায়। সদর খাদ্য কন্ট্রোলার ছিলেন অভিযানে। তাদের সন্দেহ এই রেশনশপ থেকে চাল, খোলা বাজারে পাচারের জন্য নেওয়া হয়েছিল। তবে রহস্যজনক হলো রেশনশপের স্টকে নাকি চালের তেমন কোন গরমিল পায়নি অভিযানকারী দল। প্রশ্ন উঠেছে রেশনের তিন বস্তা চাল তা হলে কোন রেশনশপ থেকে রিকশায় আনা হয়েছিল। সেই আটক চাল খাদ্য দপ্তর সিজ করে নিয়ে আসে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই ক্রমাগত অভিযোগ উঠেছে অসাধু ডিলাররা নানা উপায়ে সরকারের ভতুর্কির রেশন সামগ্রী ভোক্তাদের বঞ্চিত করে খোলা বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। খাদ্য দপ্তর ও প্রশাসনের তরফে অভিযানে গরমিল ধরা পড়া রেশনশপ ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা যে নেওয়া হচ্ছে না তাই নয়। অভিযুক্ত অসাধু ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার পরও রেশন সামগ্রীর খোলাবাজারে ব্যাপক পাচার ও দুর্নীতি কমছে না। খাদ্য দপ্তর ও প্রশাসনকে রেশন সামগ্রী খোলা বাজারে বিক্রি ও পাচার করে দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করতে নিরপেক্ষভাবে। আরও কঠোর পদক্ষেপে নেওয়ার দাবি উঠেছে ভোক্তাদের তরফে। খাদ্য দপ্তরের এ খাদ্য পরিদর্শকদের নিয়মিত রেশনশপ পরিদর্শন করে স্টক যাচাই করতে হবে। একাংশ খাদ্য পরিদর্শকের গাফিলতি ও উদাসীনতায় ও অসাধু রেশন ডিলারের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার কারণে ও রেশনশপ থেকে রেশন সামগ্রী বি খোলাবাজারে ডিলার বিক্রি করে দেওয়ায় মতো সাহস পাচ্ছে বলেও ভোক্তার অভিযোগ। নানা অজুহাতে রেশন সামগ্রী না দিয়ে ভোক্তাদের নানাভাবে অসাধু রেশনশপ ডিলাররা হয়রানি ও বঞ্চিত করছে বলেও অভিযোগ। এদিকে খাদ্য দপ্তর ও প্রশাসন থেকে রেশন সামগ্রী নিয়ে ভোক্তাদের কোন অভিযোগ থাকলে ১৮০০৩৪৫৩৬৬ এবং ১৯৬৭ এই টোল ফি নম্বরে ফোনে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। অভিযোগকারী নামও পরিচয় খাদ্য দপ্তর ও প্রশাসন গোপন রাখবে বলেও জানানো হয়।