লক্ষাধিক পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ২৬ থেকে বোর্ড পরীক্ষা ইংরেজিতে।

 লক্ষাধিক পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত ২৬ থেকে বোর্ড পরীক্ষা ইংরেজিতে।
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্য সরকারের এক সিদ্ধান্তে লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমনকী স্কুলপড়ুয়া লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর মাঝপথে পঠনপাঠন বন্ধের সম্ভাবনা প্রবল।কারণ রাজ্য সরকার সম্প্রতি এক নির্দেশে বলেছে সিবিএসইর অনুমোদিত বাংলা স্কুলগুলিতে ২০২৬ থেকে ইংরেজি ভাষাতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে হবে। ২০২৬ সাল থেকে বাংলা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বোর্ডের পরীক্ষা ইংরেজিতে দিতে হবে। সারা দেশেই সিবিএসই পরিচালিত- অনুমোদিত স্কুলে নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পঠনপাঠন ইংরেজি অথবা হিন্দি ভাষাতে হয়। ফলে সিবিএসইর স্কুলে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজি- হিন্দি ভাষাতে স্কুলে নিয়মিত পঠনপাঠন এবং দশম ও দ্বাদশের ফাইনাল পরীক্ষা ইংরেজি-হিন্দি ভাষাতে দিতে অসুবিধা হচ্ছে না। স্কুল শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ত্রিপুরা। কারণ ন্যূনতম পঠন- পাঠনের পরিকাঠামো না থাকলেও রাজ্যে প্রথম পর্যায়ে ১২৫ টি সরকারী স্কুলকে বিদ্যাজোতি প্রকল্পের অধীনে আনা হয়। এই ১২৫টি সরকারী স্কুলের মধ্যে ৮৮ টি স্কুল জন্মলগ্ন থেকে বাংলা মাধ্যমে বিদ্যালয়। তবে অবাক করার বিষয় হলো রাজ্য সরকার ১২৫ টি বিদ্যাজোতি স্কুলকে রাতারাতি আবার সিবিএসই বোর্ডে পরিবর্তন করে নিল।এই ১২৫ টি স্কুলের মধ্যে আবার ৮৮ টি স্কুল বাংলা মাধ্যমের। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ । তাই সহজেই অনুমেয় রাজ্য সরকারের এক সিদ্ধান্তে ৮৮ টি বাংলা মাধ্যম বিদ্যালয়ের ছাত্র করুণ দশা। সিবিএসই সূত্রে খবর কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম হলো সিবিএসই স্কুলে পঠন-পাঠন এবং পরীক্ষা হিন্দি ইংরেজি ভাষাতে হবে। তবে রাজ্য সরকার কেন বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিকে সিবিএসই বানিয়ে দিল? এ প্রশ্নের উত্তর আবার নেই। রাজ্যের লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীকে বিপাকে ফেলে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে পুরোপুরি বন্ধের জন্য এই পরিকল্পনা হচ্ছে? এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।একজন বাংলা মাধ্যমের ছাত্র /ছাত্রী প্রথম শ্রেণী থেকেই ইংরেজি ছাড়া সব।বিষয় বাংলা মাধ্যমে পঠনপাঠন করছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের জন্য বাংলা মাধ্যমে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমি পরীক্ষা দিতে হবে ইংরেজিতে। এটা কি সম্ভব? যারা এই সিদ্ধান্তে নিলেন তারা এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিতে পারবে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ছাত্রছাত্রীরা। কারণ একজন বাংলা মাধ্যমের ছাত্র /ছাত্রী প্রথম থেকে নবম শ্রেণী এবং একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা মাধ্যমে পঠনপাঠনের পর দশম ও দ্বাদশে হঠাৎ করে ইংরেজি অথবা হিন্দি ভাষাতে বোর্ডের পরীক্ষা দেবে এটাও কি বাস্তবে সম্ভব? একমাত্র হিন্দি সিনেমাতেই এটা সম্ভব হবে যা করতে চাইছে রাজ্য সরকার বলে অভিযোগ উঠেছে।তবে রাজ্য সরকার ও তার শিক্ষা দপ্তরের এ বিষয়ে যুক্তি হলো ২০২৫ সালের মধ্যে নাকি সরকারী ৮৮ টি বাংলা স্কুলকে ধাপে ধাপে ইংরেজিতে পরিবর্তন করা হবে। এই ৮৮ টি সহ রাজ্যের হাজারো সরকারী বাংলা স্কুলে গরিব ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা পঠনপাঠন করছে। ফলে এই স্কুলগুলি ইংরেজিতে পরিবর্তন করার সাথে সাথে পঠনপাঠন বন্ধ। কারণ সিবিএসই স্কুলে পঠনপাঠনের খরচ বহন করার ক্ষমতা নেই বলে তারা বাংলা স্কুলে পড়াশোনা করছে। বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিকে ইংরেজিতে পরিবর্তন করার পর পঠনপাঠন করাবেন কে? কারণ যে সব শিক্ষক শিক্ষিকা এই স্কুলগুলিতে শিক্ষকতা করছেন তারাও তো বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রী ছিলেন। আর টেট, এসটিজিটি, এসটিপিজিটি পরীক্ষার মাধ্যমে নিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষিকারাও অধিকাংশ বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রী। তবে কেন রাজ সরকারের এই হটকারী সিদ্ধান্ত ? শিক্ষক শিক্ষিকাদের ইংরেজি ভাষাতে পঠনপাঠনে প্রশিক্ষণ রাজ্যে আগামী দশ বছরেও শেষ হবে না। রাজ্যে কোন পরিকাঠামো পর্যন্ত নেই। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শুধুমাত্র ছেলেখেলা চলছে। ভাবনাচিন্তা এই রকম যে বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের কোন ভবিষ্যৎ নেই। অথচ বাংলা মাধ্যমে স্কুলে পঠনপাঠন করেই রাজ্যে, দেশ-বিদেশে ও রাজ্য প্রশাসন সহ সর্বক্ষেত্রে বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীরা ত্রিপুরার নাম উজ্জ্বল করছেন।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.