লম্বকর্ণ! গিনেসে নাম তোলার অপেক্ষায় সিম্বা

 লম্বকর্ণ! গিনেসে নাম তোলার অপেক্ষায় সিম্বা
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

লম্বকর্ণ চরিত্রটির সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত । কিন্তু সে ছিল রাজশেখর বসু ওরফে পরশুরামের বিখ্যাত ম্যাজিস্ট্রেটের গল্প । লম্বকর্ণ ছিল একটি ছাগল । রায়বাহাদুর বংশলোচন ব্যানার্জির নিরুপদ্রব জীবনে একটি ছাগলের এসে পড়া এবং তাকে ঘিরেই গল্পের রসিক পরিণতি । তবে এ বার বাস্তবের মাটিতে জন্ম নিয়েছে লম্বকর্ণ । পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের করাচিতে মহম্মদ হুসেনের বাড়িতে জন্ম নিয়েছে এই মাদী ছাগল । জন্মের পরেই দেখা গেছে , তার কানের দৈর্ঘ্য ১৯ ইঞ্চি ( ৪৬ সেন্টিমিটার ) । আদর করে মনিব ছাগ শিশুর নাম রেখেছেন সিম্বা । মহম্মদ হুসেনের যদি পরশুরামের গল্পটি পড়া থাকত , তবে যে নির্ঘাৎ তিনি এই ছাগলের নাম লম্বকর্ণ রাখতেন , তাতে সন্দেহ নেই । যাই হোক , সিম্বাকে দেখতে এখন হুসেনের বাড়ির সামনে ভিড় জমে গেছে । রাতারাতি সিম্বা পাড়ায় তারকার মর্যাদা পেতে শুরু করেছে । হুসেন দাবি করেছেন , সিম্বার । মতো এত বড় কান পৃথিবীর আর কোনও ছাগলের নেই।

গত ৫ জুন করাচিতে মহম্মদ হুসেনের বাড়িতে সিম্বার জন্ম হয় । জন্মের পরেই মনিব দেখেন , এ ছাগলের কান আর পাঁচটা ছাগ শিশুর মতো নয় । বিরাট লম্বা । সোজা হয়ে দাঁড়ালে কান মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে । বিশাল কান দুলিয়েই মাটিতে টলমল পায়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সে । তাই দেখতে প্রথম দিন থেকেই হুসেনের বাড়ির সামনে কৌতূহলী মানুষের ভিড় বেড়েই চলেছে । তবে এমন কিম্ভুত দর্শন ছাগ শিশু দেখে প্রথমে মন খারাপ হয়ে যায় হুসেনের । তিনি পশুচিকিৎসকদের শরণাপন্ন হন । চিকিৎসকরা জানান , ভয় পাওয়ার কিছু নেই । এই ছাগল .. নুবিয়ান প্রজাতির । এদের বৈশিষ্ট্য হল , কান হয় বিরাট লম্বা । মঙ্গলবার ষোলো দিনে পা দিয়েছে সে । এখনই তার একটি কানের দৈর্ঘ্য ১৯ ইঞ্চি । ইতিমধ্যে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে সিঙ্গাকে দীর্ঘতম কান বিশিষ্ট ছাগলের স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন হুসেন । তিনি জানিয়েছেন , তার সিম্বার ‘ বুদ্ধি ’ খুব । উৎসাহী কেউ তার সামনে ক্যামেরা ধরলে সিম্বাও ‘ পোজ ’ দিচ্ছে । বিভিন্ন পাক সংবাদ সূত্রে খবর , জিনগত অ – স্বাভাবিকতার কারণে অতিরিক্ত বড় কান নিয়ে সিম্বা জন্মেছে । তবে এই অস্বাভাবিকতাই তাকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দিতে পারে বলে মনে করছেন হুসেন ।

আবার পশু চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন , নুবিয়ান এক বিশেষ প্রজাতির ছাগল । জিনগত কারণেই এদের কান লম্বা হয় । এর ফলে অতিরিক্ত গরমেও নিজের শরীরকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা রাখতে পারে এই প্রজাতির ছাগলেরা । তবে সিম্বা যেখানে জন্মেছে সেই করাচিতে বছরের অধিকাংশ সময় স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া থাকে । গরমের সময় অবশ্য তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি পেরিয়ে যায় । তবে নুবিয়ান প্রজাতির ছাগলদের কানের দৈর্ঘ্য যা হয় , সিম্বার কান তার চেয়ে অনেকখানি বড় । ছাগল চাষের ক্ষেত্রে পাকিস্তান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ । এখানে অধিকাংশ ছাগল কামোরি প্রজাতির । পাকিস্তানে লোকসংখ্যা ২১ কোটি । তার মধ্যে ছাগলের সংখ্যা ৫৪ লক্ষ । পাকিস্তানে কিছু ছাগল শুধু মাংস খাওয়ার জন্য চাষ করা হয় , আবার কিছু ছাগল চাষ হয় একই সঙ্গে দুধ ও মাংসের জন্য । দুধ দেওয়ার প্রশ্নে নুবিয়ান প্রজাতির ছাগলের প্রসিদ্ধি আছে । এদের দুধ গাঢ় ক্রিমের মতো হয় । সেই দুধের আইসক্রিম , দই , চিজ এবং মাখন হয় অতি সুস্বাদু । সাধারণ মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে নুবিয়ান প্রজাতির ছাগল বেশি জন্মায় । এরা তীব্র গরমেও সুস্থ থাকতে পারে । বাকি ছাগলদের থেকে এদের প্রজনন ঋতুও দীর্ঘস্থায়ী হয় ।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.