লাগামহীন বিদ্যুৎ যন্ত্রণায় চরম নাজেহাল মানুষ

 লাগামহীন বিদ্যুৎ যন্ত্রণায় চরম নাজেহাল মানুষ
এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

অনলাইন প্রতিনিধি :- আগরতলা সহ রাজ্যের প্রায় সর্বত্র গত দুদিনে মাত্রাছাড়া বিদ্যুৎ দুর্ভোগ সইতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। পরিস্থিতি কার্যত লাগামের বাইরে যাওয়ার অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিক থেকে শুক্রবার বিকালের পর পর্যন্ত চূড়ান্ত রকমের নাকাল হতে হয় রাজ্যবাসীকে। নাজেহাল হতে হয় বিদ্যুৎ নির্ভর বিভিন্ন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার ফলে। পানীয় জল সরবরাহ থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কোথাও ব্যাঙ্কের কাজকর্ম মারাত্মকভাবে বিঘ্ন ঘটেছে বলে খবর। রাজ্যের কোনও কোনও অংশে মোবাইল চার্জ দেওয়া পর্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দুদিনে।আগরতলার পরিস্থিতিও যথেষ্ট খারাপ হয়ে পড়েছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার উপর প্রায় পুরোপুরি নির্ভরশীল পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা। একইভাবে বর্তমান যুগে ব্যাঙ্কের অনলাইন কাজকর্মে বহুলাংশে বিদ্যুৎ সরবরাহের উপর নির্ভর করে। অনলাইন ব্যবস্থা চালু রাখতে ব্যাঙ্কে নানা ধরনের যন্ত্রপাতি সচল রাখতে হয়। আর এইগুলি সচল রাখার প্রধান অবলম্বন বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকলে যন্ত্রপাতি টানা চালু রাখা মুশকিল। কেননা, এইগুলির চালিকা শক্তি ব্যাটারি চার্জ করতে বিদ্যুতের প্রয়োজন। কোনও কোনও ব্যাঙ্কে আপতকালীন সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখতে জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে।এ দিয়ে অবশ্য টানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুতের জোগান দেওয়া অসম্ভব। ব্যাঙ্কের পরিষেবার, পানীয় জল সরবরাহ চালু রাখাও প্রায় পুরোপুরি বিদ্যুতের জোগানের উপর নির্ভরশীল। পানীয় জল সরবরাহের প্রধান ও প্রথম উপায় জল উত্তোলক যন্ত্র তথা মোটর বিদ্যুৎ ছাড়া চালানোর উপায় নেই। গভীর অথবা অগভীর নলকূপের মাধ্যমে মাটির নিচ থেকে জল উত্তোলন করতে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ অক্ষুণ্ণ থাকা চাই।
আর মূলত বুধবার রাত থেকে রাজ্যজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় ব্যাহত হয়েছে জনজীবন। পানীয় জল সরবরাহ থেকে শুরু করে জনজীবনের অপরিহার্য পি অঙ্গ প্রায় সব কিছুর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ সংকটের ফলে। চরম দুর্ভোগ সইতে হয় মানুষকে। বুধবার রাত থেকে এই দুর্ভোগ শুরু হলেও পি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থার নিজ তেমন উন্নতি হয়নি। বিদ্যুৎ দুর্ভোগের পাশাপাশি একই কারণে জল সংকটে দ্বিত জেরবার হতে হয়েছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে। রাজ্যের বহু এলাকার মতো আগরতলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় রীতিমতো বিদ্যুৎ সংকটের জেরে কার্যত হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের পক্ষে মোবাইল চার্জ দেওয়া পর্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম সূত্রে প্রাপ্ত খবর অনুসারে উল্লিখিত সমস্যার মূলে প্রবল বর্ষণ ও ঝড়ো বাতাস বহুলাংশে দায়ী। টানা বর্ষণের কারণে আগরতলা শহরের ভূতল বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়েছে মারাত্মকভাবে। মাটির নিচে থাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার প্রথম ও প্রধান অবলম্বন বেশ কিছু কিয়স্কের ভেতর জল জমে যায়। এগুলি সারাই করতে নিগমকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। একইভাবে ঝড়ো বাতাসের কারণে আগরতলা শহর ও সংলগ্ন কিছু এলাকার পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মাটির উপর থাকা বৈদ্যুতিক পরিকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। বিভিন্ন এলাকায় ছিঁড়েছে বৈদ্যুতিক তার। ভেঙেছে খুঁটি। অনেক ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক লাইনের উপর বাঁশ, গাছের ডাল ইত্যাদি পড়েছে। এসব কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে বলে নিগম সূত্রের বক্তব্য।

Dainik Digital

Dainik Digital

Leave a Reply

Your email address will not be published.