লাগাম টানুন!!

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জনগণ ভোট দিয়ে বিভিন্ন স্তরে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করে সমাজ ও মানুষের কল্যাণে। উদ্দেশ্য একটাই, ভোটে জয়ী হয়ে জনপ্রতিনিধিরা সমাজের কল্যাণে এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার এটাই প্রধান লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও এটাই বাস্তব যে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার প্রধান লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যটাই এখন উল্টে গেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় রাজনীতির মূল সংজ্ঞাটাই পাল্টে গেছে। রাজনীতি বহু দশক আগেই জনসেবার তকমা ঝেরে ফেলে দিয়ে পেশায় (ব্যবসা) রূপান্তরিত হয়েছে। আর এই পেশা যেনতেন পেশা নয়। একেবারে সহজ করে বললে ‘পুঁজিহীন রুজি’। যার জন্য একবার ভোটে জিতলেই কেল্লা ফতে। আর পিছনে ফিরে তাঁকাতে হবে না। জনপ্রতিনিধি হয়ে কোনও রকম পাঁচ বছর কাটিয়ে দিতে পারলেই আর কোনও চিন্তা নেই। কম করে আগামী তিন প্রজন্ম বসে বসে খাওয়ার বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। তাইতো জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য এখন এত কাড়াকাড়ি, এত মারামারি। বর্তমান গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় মূর্খ, নিরক্ষর, টিপসই দেওয়া
লোকও জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারেন। কোনও রকম ক্লাস ফোরের বিদ্যা নিয়েও মন্ত্রী হতে পারেন। জনপ্রতিনিধি হতে এখন আর স্কুল-কলেজের বা শিক্ষাগত কোনও ডিগ্রি বা যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। ফলে সময়ের বিবর্তনে রাজনীতি এখন পেশায় রূপান্তরিত হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা এখন জনসেবা ভুলে গিয়ে বে-আইনি রোজগারে সব থেকে বেশি মনোনিবেশ করছেন। শুরুতে এই কথাগুলি বলার একটাই কারণ, ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যেও একাংশ জনপ্রতিনিধি জনসেবার বদলে নানা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে নানা বে-আইনি পথে অর্থ কামাইয়ে দিনরাত এক করে দিচ্ছেন। অথচ সমাজ কল্যাণ ও জনকল্যাণ নিয়ে তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারে আগরতলা পুর নিগমের অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি। অভিযোগ, এরা শুধু দুর্নীতিগ্রস্তই হয়ে পড়েননি, এদের ঔদ্ধত্য এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে এরা জনগণ তো দূরের কথা, কোনও কিছুকেই তোয়াক্কা করছেন না। সম্প্রতি শান্তনা সাহা এবং লতা নাথ নামে দুই কর্পোরটরের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এমন আরও কয়েকজন কর্পোরেটর আছেন যারা রীতিমতো আকাশে উড়ছেন। এদের পা মাটিতে নেই। যাদের ভোটে এরা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে অবাধ দুর্নীতি এবং অর্থ কামাইয়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের মানুষ বলেই গণ্য করছেন না। এদের উপরে মেয়রের যেমন নিয়ন্ত্রণ নেই, তেমনি দলেরও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রধানমন্ত্রী মোদির জমানায় ডিজিটাল ব্যবস্থায় এখন সকলেই ফটো সেশনে ব্যস্ত। এই রোগে মেয়র, ডেপুটি মেয়র থেকে শুরু করে সকলেই আক্রান্ত। বিরোধীহীন পুর নিগম এখন দুর্নীতিগ্রস্তদের আখড়া হয়ে উঠেছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। এখনই এদের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে, আগামীদিনে বড় মূল্য দিতে হবে গেরুয়া শিবিরকে। ফলে সাধু সাবধান!

Dainik Digital

Recent Posts

হৃদরোগে হঠাৎ মৃত্যু: কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমান যুগে হৃদরোগ জনিত সমস্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।এর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও জীবনঘাতী…

21 hours ago

প্রশ্নের মুখে বৈধ সীমান্ত বাণিজ্য, আমদানির তুলনায় রপ্তানি নামমাত্র, পরিস্থিতি চিন্তাজনক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-বর্তমানে রাজ্যেনয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এই নয়টি ল্যান্ড কাস্টম স্টেশনকে…

21 hours ago

আঠাশের বিধানসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা প্রদ্যোতের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-২০২৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনেও আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলেই, আমাদের…

21 hours ago

হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!

অনলাইন প্রতিনিধি:-তপন স্মৃতি নকআউট ক্রিকেটের দ্বিতীয় দল হিসাবে সেমিফাইনালে হার্ভেকে নকআউট করে তপনের সেমিতে সংহতি!!খেলার…

22 hours ago

সতর্কতাই বাঞ্ছনীয়!!

নজিরবিহীন গরমের মুখোমুখি রাজ্য। মার্চ মাসের শেষ দিকে গরমের এই প্রকোপ এককথায় নজিরবিহীন।এজন্য আবহাওয়া দপ্তরকে…

22 hours ago

খুশির ঈদ উদযাপন

অনলাইন প্রতিনিধি :-"ঈদুল ফিতর" যার অর্থ হলউপবাস ভাঙার আনন্দ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের…

2 days ago