শক্তিশালী ভারত নির্মাণই ছিল সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের স্বপ্নঃ মুখ্যমন্ত্রী
দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি।। শক্তিশালী, সংবেদনশীল ও সতর্ক ভারত নির্মাণই ছিল লৌহপুরুষ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের স্বপ্ন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এই স্বপ্নের দ্বারাই অনুপ্রাণিত।সোমবার অরুন্ধতীনগরস্থিত মনোরঞ্জন দেববর্মা স্মৃতি স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রীয় একতা দিবস উপলক্ষে আরক্ষা বাহিনীর উদ্যোগে আয়োজিত শপথ গ্রহণ, মার্চপাস্ট ও ব্যান্ড শোতে উপস্থিত হয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তিনি মার্চপাস্ট পরিদর্শন করেন এবং স্টেডিয়ামে উপস্থিত সকলকে দেশের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার্থে শপথবাক্য পাঠ করান।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকগণ।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, ভারতবর্ষের ঐক্য ও সংহতি রক্ষায় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের অবদান এই দেশের জনগণ কখনোই ভুলবে না। তিনি ভারতবর্ষের ঐক্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর নাম শুধু নামই নয়, জাতির ঐতিহ্য। আজ ঊনকোটি জেলার দেও ও মনু নদীর সংযোগস্থলে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৫০ লক্ষ টাকা। তিনি বলেন, গত সাড়ে ৪ বছরে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। সহিংস এবং বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে দৃঢ় পুলিশি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমান সময়ে রাজ্যের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নেই। রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় সামরিক বাহিনী রাজ্যে সন্ত্রাসবাদ যাতে পুনরায় মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে তারজন্য প্রচেষ্টা জারি রেখেছে। ২০২১ সালে প্রকাশিত ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড অনুযায়ী দেশের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে অপরাধের ক্ষেত্রে ৫ম সর্বনিম্ন স্থানে রয়েছে ত্রিপুরা।
বর্তমানে রাজ্যে মহিলা সংক্রান্ত অপরাধকে গুরুত্ব সহকারে মোকাবিলা করা হচ্ছে। মহিলাবান্ধব পরিবেশ দেওয়ার জন্য থানাগুলিতে ২৪x৭ সময়ব্যাপী হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে ৭টি মহিলা খানা রয়েছে। সহসাই খোয়াই জেলায় আরও একটি মহিলা থানা চালু করা হবে। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সাহা আরও বলেন, ২০১৮ সাল থেকে আগস্ট, ২০২২ পর্যন্ত রাজ্যে ১,৭৭৬টি মাদক সংক্রান্ত মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং ২,৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুকনো গাঁজা, কফ সিরাপ, হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট প্রচুর পরিমাণে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই সকল মামলাগুলি পরিচালনার জন্য সম্প্রতি এসআইটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। গুয়াহাটিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাদক পাচার ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সভায় ত্রিপুরা পুলিশ প্রশংসিত হয়েছে।
রাত্রিকালীন সময়ে জনগণের জরুরিকালীন সহায়তার জন্য ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ইতিমধ্যেই ৪টি হাইওয়ে পেট্রোলিং গাড়ি চালু করা হয়েছিল। অতি শীঘ্রই আগরতলা চুরাইবাড়ি পথে আরও ৪টি টহলদারি গাড়ি চালু করা হবে। রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার ও যানবাহন ক্রয় করা হচ্ছে। আরক্ষা বাহিনীতে পদোন্নতি, এসপিওদের মাসিক ভাতা বৃদ্ধি, ক্যাডার পর্যালোচনার মতো যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই রাজ্য সরকার। আগামী ৮ ও ৯ নভেম্বর রাজ্যে প্রথমবারের মতো উত্তর পূর্বাঞ্চলের সকল রাজ্যগুলির ডিজিপিদের সম্মেলন রাজ্যে হতে চলেছে বলেও এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান।
ভাষণ শেষে মুখ্যমন্ত্রী আরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের সাথে পুলিশ ব্যান্ডের উপস্থাপনা উপভোগ করেন। মার্চপাস্টে বিএসএফ, আসাম রাইফেলস, সিআরপিএফ, টিএসআর, ত্রিপুরা পুলিশের ৮টি প্ল্যাটুন ও ৩টি ব্যান্ড প্ল্যাটুন এবং ব্যান্ড শোতে টিএসআর-এর ৩টি ও বিএসএফ-এর ১টি প্ল্যাটুনও অংশ নেয়।